জাতীয়

ভোট প্রয়োগের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে – বাংলাদেশ জাসদ

৩১ অক্টোবর ২০১৯ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল – বাংলাদেশ জাসদ’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কী। এ উপলক্ষ্যে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিকাল ৪টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল – বাংলাদেশ জাসদ সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়ার সভাপতিত্বে এবং দলের সাংগঠনিক সম্পাদক হোসাইন আহমেদ তফছিরের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি জনাব রাশেদ খান মেনন এমপি, ঐক্যন্যাপ সভাপতি শ্রী পঙ্কজ ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট জনাব আবু সাঈদ খান, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক জনাব নাজমুল হক প্রধান, বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মুশতাক হোসেন, মোহাম্মদ খালেদ, করিম সিকদার, মনজুর আহমেদ মনজু, নাসিরুল হক নওয়াব, আনোয়ারুল ইসলাম বাবু, ঢাকা মহানগর নেতা আবদুস সালাম খোকন. আসাদুজ্জামান জাকির, আলমগির হোসেন, অলি আহমেদ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল সভাপতি শাজাহান আলী সাজু প্রমূুখ।

প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে আজ পর্যন্ত সংগঠনের সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জনাব শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, ”সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীরা দুর্বল হলেও শেষ হয়নি. তারা আন্তর্জাতিক চক্রের সহযোগিতায় চক্রান্ত করতে পারে। তাদের বিরুদ্ধে সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সাবেক সামরিক শাসকদের আদর্শ ও গø্যামার দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতি অগ্রসর হবে না।” তিনি ১৪ দল প্রসঙ্গে বলেন, ”আমরা ১৪ দলে আছি, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আমরা সম্মান করি। তবে ১৪ দলের রাজনৈতিক লক্ষ্য নির্ধারণ করা উচিত। শুধু সরকারের চাটুকারিতা করা কোনো রাজনৈতিক জোটের কাজ হতে পারে না।” নির্বাচন প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ”নিবন্ধনের নামে রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ তাদের কাজ হওয়া উচিত না। যে আদর্শ ও মূল্যবোধের ভিত্তিতে ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মদানের বিনিময়ে জনগণ সশস্ত্র যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে, তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। চলমান রাজনীতির প্রভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে তা প্রায় হারাতে বসেছে। হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে যুবসমাজকে জেগে উঠতে হবে। শোষণ, লুণ্ঠন ও চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যে এবং আইনের শাসনের অভাবে জনগণ যখন জর্জরিত তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শুদ্ধি অভিযান জনমনে আশার সঞ্চার করেছে। আমরা এই শুদ্ধি অভিযান সমর্থন করি। তবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও সংগঠনে এই শুদ্ধি অভিযান কতটুকু গভীরতা পাবে তা নিয়ে জনমনে সংশয় রয়েছে। লুণ্ঠন-অনাচারের গডফাদারদের ধরা না হলে জনগণ হতাশ হবে। একাদশ জাতীয় নির্বাচন দেশ ও জাতিকে বিষণœ করেছে। ভুল কৌশলের খেসারত দিতে হবে। দেশে উন্নয়ন হচ্ছে, তবে সমাজে প্রাণ সঞ্চার হচ্ছে না। মুক্তমনে ভোট প্রয়োগের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীনভাবে কাজ করার জন্য সুযোগ দিতে হবে।”

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি জনাব রাশেদ খান মেনন এমপি বলেন,“জাসদের জন্ম কোন আকস্মিক বিষয় নয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় সমতা, সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদার যে আকাঙ্খা তীব্র হয়ে উঠেছিল তাকে প্রতিনিধিত্ব করেই জন্ম হয়েছিল জাসদের। জাসদের সাথে ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ১৯৭৪ সাল থেকে তিন দলের ঐক্য থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত ১৪দলের ঐক্যে আমরা একসাথে লড়ছি।” তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে কিন্তু মানুষ অনেক পিছিয়েছে।”

ঐক্য ন্যাপের সভাপতি শ্রী পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বের উল্লেখযোগ্য অংশই জাসদ গঠন করে। উপস্থিত আপনারাই প্রমাণ করেছেন বাংলাদেশ জাসদ নেতাদের দল নয় কর্মিদের দল। বাংলদেশ এক কঠিন সময় পার করছে। মুক্তিযুদ্ধের অর্জন অনেকটাই বেহাত হয়ে গেছে।”

জনাব আবু সাঈদ খান বলেন, “ সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। উপমহাদেশের সব মানুষকে এক হয়ে সাম্প্রদাযিকতার বিরুদ্ধে লড়তে হবে।

জনাব নাজমুল হক প্রধান বলেন, ”আগামী দিনে সমতা, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ জাসদকে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। দেশের প্রতিটি নাগরিককে সামজিক সুরক্ষা কর্মসূচীর আওতায় আনতে হবে। রোহিঙ্গা বিষয়ে বর্তমান সরকারের নীতির পর্যালোচনা করা উচিত। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে নাগরিকত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যত দ্রæত সম্ভব মিয়ানমারে ফেরত নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।”

Back to top button