জাতীয়

নারী অধিকার বাস্তবায়নে সমাজ ও প্রথাগত নেতৃবৃন্দের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন

নারী অধিকার বাস্তবায়নে পরিবার, সমাজ, প্রথাগত নেতৃবৃন্দ, রাজনৈতিক দল, প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন তিন পার্বত্য জেলার নারী অধিকার কর্মীগণ। ১৮ই আগস্ট রাঙ্গামাটিতে সাপোর্টিং পিপল এন্ড রিবিলডিং কমিউনিটিস ( SPaRC) আয়োজিত “নারী অধিকার বিষয়ক আলোচনা সভা” -য় বক্তাগণ এই অভিমত প্রকাশ করেন।

আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ কালে বক্তারা আরও বলেন, শুধু মাত্র নারী অধিকার কর্মীদের প্রয়াস অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে অবদান রাখবেনা যতক্ষণ না পর্যন্ত প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও নারী অধিকার বিশেষত নারীর প্রতি সহিংসতার মামলা সমুহ পরিচালনায় নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে।

রাঙ্গামাটিতে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন তিন পার্বত্য জেলার নারী নেতৃবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তা, আইনজীবী, সাংবাদিকগন।

ড নাই প্রু নেলী, নির্বাহী পরিচালক অনন্যা কল্যাণ সংগঠন, বান্দরবান বলেন, “প্রথাগত নেতৃবৃন্দ, প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর এক ধরনের প্রচেষ্টা থাকে নারী নির্যাতনের ঘটনা সমূহে তাদের দায়িত্ব কর্তব্য যথাযথ ভাবে পালন না করে , তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব এড়িয়ে নারী অধিকার কর্মীদের কাছে নারী নির্যাতনের ঘটনা সমূহ হস্তান্তর করার। ”

রাঙ্গামাটি নারী অধিকার কর্মী টুকু তালুকদার বলেন, “ নারী অধিকার বাস্তবায়ন শুধু মাত্র নারীদের কাজ নয়। নারী অধিকার কোন দেশ কোন জাতি কতটুকু উন্নত তাও বুঝতে সহায়তা করে, তাই পরিবার, সমাজ, প্রথাগত নেতৃবৃন্দ, রাজনৈতিক দল, প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।”

খাগড়াছড়ি নারী অধিকার কর্মী ও সভাপতি উইমেন রিসোর্স নেটওয়ার্ক, পার্বত্য চট্টগ্রাম শেফালিকা ত্রিপুরা বলেন, “অনেক সময় নারী অধিকার কর্মীদের প্রাণপণ চেষ্টা ও এলাকাবাসীর হাতে অপরাধী হাতে নাতে ধরা পড়ার পরও পরবর্তিতে পুলিশ এর তদন্ত রিপোর্ট প্রদানে গাফিলতি, হাসপাতালের কর্মচারীর অসহযোগিতার জন্যে এই সকল অপরাধীরা তাদের কৃত কর্মের সাজা ভোগ করেনা।”

য়েন য়েন, রানী চাকমা সার্কেল ও উপদেষ্টা SPaRC বলেন, “নারী অধিকারের প্রতি সম্মান রেখে চাকমা সার্কেল ইতিমধ্যে প্রথাগত আইন ও প্রথাগত বিচার ব্যাবস্থায় বিভিন্ন পরিবর্তন এনেছে,” এই উদ্যোগ সকলের সাহায্যে ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

প্রাক্তন সদস্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নিরুপা দেওয়ান বলেন, “প্রথাগত বিচার ব্যাবস্থায় বিচার কার্য সম্পাদনের পর, রায় বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা তা ফলো আপ ও মনিটরিং করাটাও জরুরী।”

বক্তাদের পরামর্শে একমত পোষণ করে মানবাধিকার কর্মী ও SPaRC নির্বাহী পরিচালক মুক্তাশ্রী চাকমা সাথী বলেন, “নারী অধিকার রক্ষার জন্যে যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছেন, তাদের মধ্যে আরও সমন্বয় ও বন্ধুত্বপুর্ণ সহঅবস্থানও নারী অধিকার বাস্তবায়নের প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কণিকা চাকমা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, রাজস্থলি, সিএইচটিডিএফ- ইউএনডিপি জেন্ডার ক্লাস্টার ঝুমা দেওয়ান, মিনারা আর্সাদ আন্দোলন সম্পাদিকা বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বকুলি মারমা ভাইস চেয়ারম্যান থানচি, বান্দরবান, আইনজীবী মাধবী মারমা ও শ্রীজ্ঞ্যানী চাকমা, নারী নেতৃ লালসা চাকমা, সাগরিকা রোয়াজা , মোহাম্মাদ আলী নির্বাহী পরিচালক শাইনিং হিল সহ আরও অনেকে।

Back to top button