পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছেঃ সন্তু লারমা
সম্পাদিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা(সন্তু লারমা)।
তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালে ২ডিসেম্বর পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলের সামাজিক,রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক,সাংস্কৃতিক,ভূমিসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়নে চুক্তি হয়েছে। পাশাপাশি এ চুক্তির মধ্য দিয়ে বিশেষ শাসন ব্যবস্থা করার কথা রয়েছে। কিন্তু চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন না হওয়ায় এ অঞ্চলের জনজীবনের উন্নয়নে যে আশা আকাংখা ছিল তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। তাই পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়ন করা অপরিহার্য হয়ে দাড়িয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এ অঞ্চলে মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্য একটা গণতান্ত্রিক,গণমুখী শাসন ও আইন-শৃংখলার সু ব্যবস্থা ব্যবস্থা পেতে চায় তার উপর নির্ভর করে উন্নয়ন। কিন্তু এ অঞ্চলের বাস্তবতার সেই উন্নয়ন আজকে অনুপস্থিত রয়েছে।
মঙ্গলবার রাঙামাটিতে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রকল্পের উপকারভোগী,স্টেকহোল্ডারদের সমন্বয়ে অভিজ্ঞা বিনিময় কর্মশালায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন।
অশিকা হল রুমে আর্ন্তজাতিক উন্নয়ন সংস্থা হেলভেটাস সুইস কোঅপারেশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় ও গ্রীনহীলের আয়োজনে কর্মশালার সভাপতিত্ব করেন গ্রীনহীলের চেয়ারপার্সন টুকু তালুকদার। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন হেলভেটাস সুইস কোঅপারেশন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডাইরেক্টর কাসপার গ্রোসেনভেচার,জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষক কর্মকর্তা কৃঞ্চপদ মল্লিক, বিএনকেএস এর নির্বাহী পরিচালক হ্লা সিং নুয়ে। স্বাগত বক্তব্যে দেন গ্রীনহীলের উপ-নির্বাহী পরিচালক যতন কুমার দেওয়ান। অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্যে দেন সীর্ক-হেলভেটাস সুইস কোঅপারেশন বাংলাদেশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ডা. নূর আক্তার নাহার, ইনোবেশন কনসাল্টিং প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাদউদ্দীন, সীর্ক প্রকল্পের রাঙামাটির টিম লিডার অমূল্য রঞ্জন চাকমা।
দিন ব্যাপী কর্মশালায় রাঙামাটি ও বান্দরবার থেকে প্রকল্পের উপকারভোগীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা অংশ গ্রহন করেন।
সন্তু লারমা আরো বলেন, পার্বত্যাঞ্চলে বেসরকারী পর্যায়ে কোটি কোটি টাকার কাজ হয়েছে এবং চলছেও। তবে আজকের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাস্তবতায় এ অঞ্চলের জনগণ অধিকতরভাবে অর্থনৈতিকভাবে উত্তোরোত্তর গরীব থেকে গরীব হচ্ছে, প্রতিনিয়ত নিজেদের ভূমি ব্যবস্থাপনা হারাচ্ছে,পরিবর্তিত বাস্তবতার সাথে আইন-কানুন প্রয়োগ ও ব্যবস্থপনা প্রতিষ্ঠা করা এখনো সম্ভব হয়নি। এখানকার যে বাস্তবতা বিরাজ করছে তা অনেক সময় কোন কিছুই মন খুলে কথা বা বক্তব্যে দিতে পারে না, দিতে গেলে তাকে নানান সমস্যায় সম্মুীন হতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, পার্বত্য চুক্তির মধ্য দিয়ে যে বিশেষ শাসন ব্যবস্থা কাঠামো ধার করা হয়েছে সেই শাসন ব্যবস্থা আজও অবদি তার প্রতিষ্ঠা হতে পারেনি। তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদ আইনগুলো যথাযথ কার্যকর না হওয়ার কারণে এখানকার স্থায়ী অধিবাসীদের জীবন ধারা আরো সহজতর করার লক্ষ্যে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিতে কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না।
তিনি বলেন, এখানকার জনগোষ্ঠী কিভাবে উন্নয়ন চাই তার উপর নির্ভর করবে কিভাবে শাসিত হবে। তবে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে শাসন ব্যবস্থা রয়েছে তাতে বহুমুখী নেতৃত্ব রয়েছে। বহুদা বিভক্তি সেই নেতৃত্ব এখানকার শাসন যথাযথভাবে এগিয়ে যেতে পারছে না। এখানে নানা বাধা বিপত্তি ও সমস্যা রয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে সেই সহযোগিতা আরো ফলপ্রসূত হতে পারতো যে পার্বত্য চুক্তির মধ্য দিয়ে যে বিশেষ শাসন ব্যবস্থা কাঠামো ধার করে বাস্তবায়ন করা যেতো।