শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা পেলেন লাপোল কড়া’র মা শাতল কড়া
লাপোল হলেন তাঁর জাতির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বারান্দায় পা রাখা প্রথম প্রতিনিধি
আইপিনিউজ ডেক্স(ঢাকা): সফল জননী নারী হিসেবে শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা পেলেন বাংলাদেশের আদিবাসী কড়া সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া লাপোল কড়া’র জীবন সংগ্রামী মা শাতল কড়া। শুক্রবার দিনাজপুরের বিরল উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে বেগম রোকেয়া দিবস ও আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে উপজেলা পর্যায়ে সর্বশ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা তুলে দেন বিরল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা: আফছানা কাওছার।
শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা প্রাপ্ত কড়া সম্প্রদায়ের শাতল কড়া বিরলের রাণীপুকুর ইউপির রাঙ্গণ ঝিনাইকুড়ির কড়া পল্লীতে বসবাস। বাংলাদেশে বসবাসরত অল্পসংখ্যক এই কড়া সম্প্রদায়ের লোকজন দিনাজপুরের বিরলে এ পল্লীতে মাত্র ২৪টি পরিবার বাস করছে। তার মধ্যে সফল জননী শাতল কড়া। খুব ছোট বয়সে তার বিয়ে হয় একই পাড়ার রতন কড়া সাথে। অর্ধাহারে অনাহারে মাঠে কাজ করা, অন্যের বাড়ীতে মুজুরী দেয়া, খেঁজুর পাতার চাটাই বানানোসহ ছিলো তার হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করা কাজ।
শাতল কড়া জানান, বিয়ের কিছুদিন পরে তার বড় ছেলে সাপল কড়া জন্ম নেয়। তাও আবার শারিরীক প্রতিবন্ধী। এরপর মেঝো ছেলে লাপল কড়া ও সবার ছোট মেয়ে পূর্ণিমা কড়ার জন্ম হয়। খুব কষ্টে সন্তানদের পড়ালেখা ও ভরন পোষন করতে হয় তাকে। এরই মধ্যে ২০১৬ সালে তার স্বামী রতন কড়া পরলোক গমন করেন। তার পরেও সংসারের হাল ছাড়েননি তিনি। তার চেষ্টায় ছেলে লাপল কড়া বর্তমানে ঢাকা জাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক ও নাট্যতত্ত্বে এবং মেয়ে ঢাকার বনফুল আদিবাসী গ্রীন হার্ট স্কুল এন্ড কলেজে স্কলারশিপের মাধ্যমে পড়ালেখা করছে। তাদের ভাইবোনের পড়ালেখা করার জন্য স্থানীয় সাংসদ নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী স্কলারশিপের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। প্রতিবন্ধী বড় ছেলে সাপল কড়াকে নিয়ে কষ্ট হলেও লাপল কড়া ও পূর্ণিমা পড়ালেখায় এগিয়ে যাওয়ায় মা শাতল কড়া অনেক খুশি।
এসময় বিরল উপজেলা কমিশনার (ভূমি) আব্দুল ওয়াজেদ, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাহমিদা ইসলাম, বিরল প্রেস ক্লাব সভাপতি এম এ কুদ্দুস সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।