৫১তম গণহত্যা দিবসে পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সামাজিক আন্দোলন
’৭১ এর ২৫ মার্চ কালরাত্রি গণহত্যার বীর শহীদদের স্মরণে আজ ২৫ মার্চ ২০২২ বিকাল ৫টায় শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন ও আনন্দন সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে আলোচনা সভা, প্রতিবাদী গানের অনুষ্ঠান ও আলোর শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য রাজিয়া সামাদ ডালিয়ার সভাপতিত্বে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ’৭১ এর গণহত্যার প্রতিবাদী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চের সদস্য-সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার। আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য জয়ন্তী রায়, ড. সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী, ঐক্য ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আসাদুল্লাহ তারেক, সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক একে আজাদ, জহিরুল ইসলাম জহির, অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য অলক দাশগুপ্ত, মহানগর নেতা জুবায়ের আলম প্রমুখ। সভায় ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করেন সংগঠনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট পারভেজ হাসেম।
উদ্বোধনী বক্তবে ড. নুর আহমেদ তালকুদার বলেন, বর্বর পাকিস্তানীদের সাথে যে কোন ধরনের মিল খুঁজে না পেয়ে ষড়যন্ত্র করে শুধুমাত্র ধর্মের দোহাই দিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে এই বাংলাকে পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত করা হয়। ধর্মের আবরণে যে জাতি গঠিত হতে পারে না, তা জেনেও কিছু উচ্চ বিলাসী রাজনীতিক তদানিন্তন সময়ে এই বিভাজনকে সমর্থন করে বাঙালি সাংস্কৃতি ও ইতিহাস নিশ্চিন্ন করতে চেয়েছে। ভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি চাপিয়ে দেবার মধ্য দিয়ে শুরুতেই পাকিস্তানীদের ষড়যন্ত্র সামনে আনে ফলে জাতিসত্ত্বা অস্তিত্বের লড়াইয়ে বাঙালিরা ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের ধারাবাহিকতা নিয়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও পাকিস্তানী স্বৈরশাসকদের অত্যাচার, নিপীড়ন, হত্যার নৃসংসতা, বৈষম্য লুন্ঠনের ইতিহাস ভুলা যায় না। পাকিস্তানের নৃসংসতার ক্ষমা করা যায় না। ইতিহাসে পাকিস্তান একটি সন্ত্রসী রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত। এদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন ঘৃণা প্রদর্শন করবে।
সভা প্রধানের বক্তব্যে রাজিয়া সামাদ ডালিয়া বলেন, পাকিস্তানী স্বৈরশাসকরা সাধারণ নির্বাচনে পরাজিত হয়ে ক্ষমতাকে দীর্ঘমেয়াদী করতে যে নারকীয় ভাবে মেতে উঠেছে অতর্কিতভাবে নিরস্ত্র জাতির উপর হামলা চালিয়ে জাতিসত্ত্বা নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা চালিয়েছে তা ৩০ লক্ষ শহীদের তাজা রক্ত দিয়ে বাঙালিরা সে দিন প্রমাণ করেছে বাঙালি জাতি বীরের জাতি। নারকীয় হত্যা, লুন্ঠন, ধ্বংস ও বিভ্যস ২৫ মার্চ ’৭১ এর ৫১তম বার্ষিকীতে আমরা সেই সকল বীরদের গভীর শ্রদ্ধা জানাই। যে দিনের ছোট স্বপ্ন নিয়ে জাতি ঝপিয়ে পড়েছে লড়াইয়ে তা ছিল শোষণ, বঞ্চনা, ধর্মান্ধতামুক্ত সম্প্রীতির স্বদেশ গড়ে তোলা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আমৃত্যু এই স্বপ্ন দেখে গেছেন, আজকেও সম্প্রীতি ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্টা পায়নি। এই ব্যর্থতার দায় যারা ক্ষমতায় গেছেন তাদের বহন করতে হবে। আজকে জাতি পূণর্গঠনে মহান মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গণতান্ত্রিক সকল শক্তির ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।
সভার শেষে আলোর পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় এবং প্রতিবাদী গান পরিবেশন করেন আনন্দনের শিল্পীবৃন্দ।