১০ দফা দাবিতে তীর-ধনুক নিয়ে সাঁওতালদের বিক্ষোভ, কর্মসূচি ঘোষণা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গাইবান্ধার গোবিন্দগজ্ঞে সাঁওতালদের ওপর রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের হামলায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনাসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ। এসব দাবি দ্রুত মানা না হলে আগামী ৬ মার্চ ১৬টি জেলার শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।
রবিবার দুপুরে রংপুর নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ করে ১০ দফা দাবি জানানো হয়। বিক্ষোভ মিছিলে সাঁওতালরা তীর-ধনুক ও লাঠিসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে অংশ নেন।
দুপুরে নগরীর শাপলা চত্বর থেকে সাঁওতালদের অংশগ্রহণে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রংপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে মানবন্ধন ও সমাবেশ করে সংগঠনের নেতারা।
সমাবেশে সংগঠনের নেতারা সাঁওতালদের ওপর হামলা, মামলা, লুটপাট, খুন, উচ্ছেদ, অগ্নিসংযোগ ও হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়ে আগামী ৬ মার্চ উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলার শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সমাবেশে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি রবিন্দ্র সরেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সবিন চন্দ্র মুণ্ডা, আদিবাসী নেতা সুবিন তিরকী, সুভাষ চন্দ্র, আদিবাসী যুব পরিষদের সভাপতি নরেন চন্দ্র পাহান, ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিভূতি ভুষণ মাহাতো ও সাহেবগঞ্জ বাগদা ফামার্স ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম পরিষদের সহ-সভাপতি সিলিমন বাস্কে প্রমুখ।
এ সময় নেতারা অভিযোগ করে বলেন, আড়াই মাস ধরে গোবিন্দগঞ্জে শত শত সাঁওতাল পরিবার খোলা আকাশের নীচে বাস করছেন। এখন পর্যন্ত তাদের থাকার কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। এমনকি এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামিদের গ্রেফতার করা হয়নি।
তারা আরও বলেন, জ্বালিয়ে দেওয়া স্কুলটি ভবনটি আরও পুনর্নির্মাণ না করায় সাঁওতাল ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ রয়েছে। এ বিষয় নিয়ে সাঁওতালরা আন্দোলন করে আসলেও সরকার কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
দাবিগুলো হলো- সাঁওতালদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও হয়রানি বন্ধ, ক্ষেতের ফসল ও পুকুরের মাছের ক্ষতিপূরণ দেওয়া, হামলায় নিহত ও আহতদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া, ক্ষতিগ্রস্থদের পুর্নবাসন করা, পুড়ে যাওয়া ঘর ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তৈরি করে দেওয়া, খামার এলাকার কাঁটাতার তুলে ফেলা, হামলার পরিকল্পনাকারী, ইন্ধনদাতা ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ববস্থা গ্রহণ করতে হবে, পক্ষপাতদুষ্ট ইউএনও এবং ওসিকে প্রত্যাহার, সাঁওতালদের বাড়ি ঘরে আগুন দেওয়া পুলিশ ও তাদের নির্দেশদাতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা ইত্যাদি।