হালুয়াঘাটে মৃত্তিকার “প্রাণের টানে, পথে প্রান্তরে” অনুষ্ঠিত
লিজা নকরেক; হালুয়াঘাটের রাংরা পাড়া থেকে ফিরে; জাতিতাত্ত্বিক লোকায়ত জ্ঞান ও সংস্কৃতি পাঠকেন্দ্র-মৃত্তিকা’র সহযোগী সংগঠন মৃত্তিকা সংস্কৃতি কেন্দ্রের ধারাবাহিক আয়োজন “প্রাণের টানে, পথে প্রান্তরে” অনুষ্ঠিত হয়েছে ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট থানার রাংরা পাড়া গ্রামে।
গত ৯ মার্চ ২০১৮ তারিখ শুক্রবার মধুপুরের জয়নাগাছা, বেদুরিয়া, বন্দেরিয়া, ক্যাজাই, চুনিয়া গ্রাম থেকে মৃত্তিকা কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পর্ষদের আহবায়ক পান্থু সিমসাং ও যুগ্ম আহবায়ক ওয়েলসন নকরেক এর নেতৃত্বে মৃত্তিকা সংস্কৃতি কেন্দ্রর প্রায় ৫০ জনের একটি দল দুপুর ১ টায় রাংরা পাড়া কালচারাল একাডেমীতে পৌঁছায়। সেখানে আগত সকলকে স্বাগত জানান কবি, প্রাবন্ধিক,গবেষক জেমস জর্নেশ চিরান এবং মৃত্তিকা কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি কবি পরাগ রিছিল।
মধ্যাহ্ন ভোজের পর টিডব্লিও পরিষদ কক্ষে শুরু হয় প্রাণের টানে, পথে প্রান্তরে। অনুষ্ঠানের শুরুতে মৃত্তিকা পরিচালনা পর্ষদের সচিব জুয়েল বিন জহির জানান, “মৃত্তিকা সংস্কৃতি কেন্দ্র প্রথমবারের মতন আবিমা’র বাইরে তাদের এই ধারাবাহিক আয়োজন প্রাণের টানে পথে প্রান্তরে নিয়ে হাফালে হাজির হয়েছে।
ইতোপূর্বে এই অনুষ্ঠানটি চুনিয়া, বন্দেরিয়া, পেগামারি,জলই, বেদুরিয়া, বন্দেরিয়া প্রভৃতি গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই ধারাবাহিক আয়োজনের উদ্দেশ্য কেবল নিখুতভাবে নাচ-গান পরিবেশনা নয়; সংস্কৃতি কেন্দ্রর শিশু-কিশোরদের স্বপ্নের পরিধিকে আদিগন্ত করা, নিজেদের অস্তিত্বকে জানান দেওয়ার সাহসী স্পর্ধা তৈরীতে উপযুক্ত চর্চার পরিবেশ গড়ে তোলা।
কবি জেমস জর্নেশ চিরান তাঁর বক্তবে মৃত্তিকার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান এবং এই ধরণের কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে শিশু-কিশোরেরা সর্বোচ্চ মানবিকতা সম্পন্ন মানুষ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে সক্ষম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে শুরু হয় প্রাণের টানে, পথে প্রান্তরের মূল পরিবেশনা। টানা দেড় ঘন্টা ব্যপী সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেন মৃত্তিকা সংস্কৃতি কেন্দ্র’র কচি-কাঁচারা। এছাড়া উক্ত অনুষ্ঠানে রাংরাপাড়া গ্রামের সাংস্কৃতিক দলও বেশ কয়েকটি নাচ-গান পরিবেশন করেন।
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা শেষে, কবি জেমস জর্নেশ চিরান মৃত্তিকা গ্রন্থকেন্দ্র’র জন্য আবির্ভাব এর বেশ কয়েকটি সংখ্যা ও ব্যবহারিক গারো অভিধান তুলে দেন মৃত্তিকা কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও সচিবের হাতে।
সার্বিক সহযোগিতার জন্য কবি জেমস জর্নেশ চিরানসহ সংশ্লিষ্ট সকলে মৃত্তিকা কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে কবি পরাগ রিছিল অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠান শেষে মৃত্তিকা সংস্কৃতি কেন্দ্র’র দলটি প্রয়াত প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট প্রমোদ মানকিন এর সমাধিস্থল ও বাড়ি পরিদর্শণ করেন। এসময় প্রয়াত মন্ত্রীর সহধর্মিনী, প্রাক্তন স্কুল শিক্ষিকা মমতা আরেং শিশু-কিশোরদের সাথে বেশ কিছু সময় কাটান।