রুমায় জনসংহতি সমিতির শৈহ্লাপ্রুকে গ্রেফতার এবং ক্যসাপ্রুর বাড়িতে তল্লাশী
আজ ১৪ জুলাই ২০১৭ দিবাগত রাত আনুমানিক ৩:৩০ টার দিকে বান্দরবান পার্বত্য জেলাধীন রুমা উপজেলা সদরে অবস্থিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৯ বেঙ্গলের রুমা সেনা গ্যারিসনের কম্যান্ডার লে: কর্ণেল আতিকুর রহমান ও মেজর মেহেদির নেতৃত্বে সেনা ও পুলিশের একটি দল জনসংহতি সমিতির রুমা থানা কমিটির সদস্য ও রুমা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৩য় বার নির্বাচিত সদস্য শৈহ্লাপ্রু মারমা (৫০) পীং-মুই থুই মারমা, বর্তমান ঠিকানা-ইডেনপাড়া রোড, রুমা বাজার এর বাড়িতে তল্লাশী চালিয়ে শৈহ্লাপ্রু মারমাকে গ্রেফতার করে। শৈহ্লাপ্রু মারমা’র বাড়িতে কোন অস্ত্র না থাকা সত্বেও সেনা-পুলিশ সদস্যরা তল্লাশীকালে তার বাড়ি থেকে দুটি পিস্তল উদ্ধার করেছে বলে উল্লেখ করে এবং এই অজুহাতে শৈহ্লাপ্রু মারমাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি,রুমা থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মং মং চিং মারমা সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, একই দিন উক্ত সেনা ও পুলিশ সদস্যরা গ্রেফতারকৃত শৈহ্লাপ্রু মারমা’র বাড়ির পার্শ্ববর্তী গ্রাম লুংঝিড়ি গ্রামের বাসিন্দা জনসংহতি সমিতির রুমা থানা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ও পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ক্যসাপ্রু মারমা (৪৮) পীং-মৃত মংচিং মারমা এর বাড়িতেও রাত ২:৩০ টা নাগাদ তল্লাশী চালায় ও জিনিসপত্র তছনছ করে দেয়। তল্লাশীর সময় মেজর মেহেদি নিজে বাড়িতে প্রবেশ করে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রুমা থানা কমিটি সেনাবাহিনী ও পুলিশ কর্তৃক সমিতির রুমা থানা কমিটির সদস্য ও ইউপি সদস্য শৈহ্লাপ্রু মারমাকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো ঘটনায় গ্রেফতার এবং সমিতির রুমা থানা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ক্যসাপ্রু মারমার বাড়িতে হয়রানিমূলকভাবে তল্লাশী ও জিনিসপত্র তছনছের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। পাশাপাশি অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত শৈহ্লাপ্রু মারমাকে মুক্তির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছে।
নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার মত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত সেনাবাহিনী ও পুলিশ কর্তৃক এভাবে নিরস্ত্র ব্যক্তির বাড়ি থেকে অস্ত্র পাওয়া গেছে বলে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে গ্রেফতার ও মামলায় জড়িতকরণ এবং ঘুমন্ত মানুষকে জাগিয়ে হয়রানিমূলকভাবে তল্লাশী চালানোর মত কাজ কোনভাবে শুভ ফল বয়ে আনতে পারে না। সেনা ও পুলিশ কর্তৃক সংঘটিত এ ধরনের কাজসমূহ সম্পূর্ণ হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং একটি কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর সংকীর্ণ স্বার্থে পরিচালিত বলে প্রতীয়মান হয়।
বলাবাহুল্য স্বয়ং সেনা ও পুশিল বাহিনী কর্তৃক এভাবে অব্যাহতভাবে আইন ও মানবাধিকারকে তোয়াক্কা না করে জনসংহতি সমিতির সদস্যসহ নিরীহ মানুষকে আটক, গ্রেফতার, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও তল্লাশীর নামে হয়রানি করার ঘটনা যে জনগণের মধ্যে চরম নিরাপত্তাহীনতাবোধ ও পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে অধিকতর জটিলতর করে চলেছে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রুমা থানা কমিটি পার্বত্য সমস্যা সমাধান, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও এই এলাকায় শান্তি স্থাপনের স্বার্থে অবিলম্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশ কর্তৃক এ ধরনের হীন কর্মকান্ড বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের নিকট জোর আহ্বান জানাচ্ছে।