ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় গারোদের জমি দখল করে বাঙালিদের ঘর নির্মান
গতকাল ৪ ডিসেম্বর সকাল থেকে দুই থেকে তিনশ বাঙালি দলবেঁধে ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া উপজেলাধীন ৬নং ঘোষগাঁঁও ইউনিয়নের গারো আদিবাসী গ্রাম রায়পুরে জোরপূর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়ি নির্মাণ করছে। এ ঘটনায় গারো অধ্যুষিত গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
রায়পুর গ্রামের বাসিন্দা মিনাক্ষি মানখিন আইপিনিউজকে জানান, “এই নিতাই নদীর পাশের জমির স্বত্বভোগী আমাদের গ্রামের গারো আদিবাসীরা। যুগ যুগ ধরে এই জমিতে বসবাস আমাদের। এই দখলদাররা এর আগেও দাবি করেছিল যে আমাদের গ্রামে তাদের জমি রয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে কয়েকবার বিচার সালিসের মধ্যে দিয়ে জমি মাপামাপির পরও তাদের কোন জমির সন্ধান পাওয়া যায়নি। হঠাৎ গতকাল থেকে পরিকল্পিতভাবে দলবেঁধে তারা আমাদের এলাকার গাছ কাটছে, বাঁশ কাটছে, ঘড় তৈরি করছে।”
তিনি আরও জানান, “আমরা গতকাল পুলিশে অভিযোগ করলে তারা ভেরিফাই করতে আসলেও তেমন কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তারা উভয় পক্ষে নোটিশ প্রদান করে। কিন্তু এর মধ্যেই অনেক বাড়িঘর তুলে ফেলেছে বাঙালিরা যা আজকে পর্যন্ত চলমান।”
বাঙ্গালিরা অনেকদিন ধরেই গারো আদিবাসীদের সত্ত্বদখলীয় জমি দখলের চেষ্টা করে আসছে দাবি করে স্থানীয়রা জানান, নিতাই নদীর ওপারের পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের ১ নং দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামের বাঙালিরা সংঘবদ্ধভাবে জমি দখল করছে। বাঁশের খুঁটি গেড়ে টিন, কাপড় ও চট পেঁচিয়ে গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় যত্রতত্র বাড়ি নির্মাণ করছে। এধরণের বাড়ি আনুমানিক ৮ থেকে ১২টা নির্মাণ করে ফেলেছে দখলদাররা। বোঝায় যাচ্ছে তারা এধরণের স্থাপনা নির্মাণ করে জমিগুলো স্থায়ীভাবে দখল দিতে চাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র আরও জানায়, বাঙালিরা লাঠি সোটা, শাবল, মাটি খোঁড়ার সরঞ্জামাদি নিয়ে সাবেক ইউপি সদস্য খলিলসহ দলবেঁধে গ্রামে অনুপ্রবেশ করছে, স্থানীয়রা বাঁধা দিলেও কারও কথা তোয়াক্কা করছে না। রায়পুর গ্রামে ২০টির মতো গারো পরিবারের বাস, সবাই শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে। এমনকি তারা গারো আদিবাসীদের বাঁশঝাড় থেকে বাঁশ কেটে এই দখল যজ্ঞ চালাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, এই বিষয় নিয়ে গ্রামবাসী ধোবাউড়া থানায় গতকাল থেকে যোগাযোগ করলেও থানা থেকে এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
সর্বশেষ তথ্য মতে আজ ৫ ডিসেম্বর বিকাল ৪টা পর্যন্ত এই দখলদারি চলমান রয়েছে ও থানায় মামলার জন্য প্রস্তুতি চলছে।