ভারতের ১৪তম রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ
ভারতের ১৪তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন রামনাথ কোবিন্দ। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার কিছু আগে তাকে সরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। পার্লামেন্ট সদস্য ও রাজ্যের বিধায়কদের দুই তৃতীয়াংশের সমর্থন অর্থাৎ প্রায় ৬৬ শতাংশ ভোট নিয়ে বিজয় লাভ করেছেন সরকার সমর্থিত এ প্রার্থী। বিদায়ী রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির স্থলাভিষিক্ত হবেন ৭১ বছর বয়সী কোবিন্দ। ২৫ জুলাই প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে তার। কৃষকের সন্তান কোবিন্দ ভারতের দ্বিতীয় দলিত প্রেসিডেন্ট। এর আগে দলিত সম্প্রদায় থেকে কে আর নারায়ণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বিহারের সাবেক গভর্নর রামনাথ কোবিন্দ যে ভারতের ১৪তম রাষ্ট্রপতি হতে যাচ্ছেন তা আগেই আভাস দিয়েছিল ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। অবশেষে সেই আভাসকে সত্যি করে বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তবে এনডিটিভি বলছে, সরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণার অনেক আগে থেকেই শুভেচ্ছা জানিয়ে রামনাথ কোবিন্দের দিল্লির বাড়িতে ফুল ও মিষ্টি পাঠাতে শুরু করেন সমর্থকরা। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দ এবং ইউপিএ জোটের প্রার্থী মীরা কুমারের মধ্যে মূলত প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার লড়াইটা চলছিল। কোবিন্দের প্রাপ্ত মোট ভোটের সংখ্যা ৭ লাখ ২ হাজার ৪৪। অন্যদিকে ১৮টি বিরোধী দলের সর্বসম্মত প্রার্থী এবং লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার মীরা কুমার পেয়েছেন ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৩১৪টি ভোট। বিজয়ী ঘোষণার পর কোবিন্দ বলেন, “এটি একটি বড় দায়িত্ব। আমার কাজ হবে সংবিধানকে ধারণ করা এবং এর সুরক্ষা দেওয়া। আমার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়াটা ভারতের গণতন্ত্রের মহত্বেরই নিদর্শন।”
পেশায় আইনজীবী কোবিন্দ দীর্ঘদিন রাজধানী দিল্লিতে ওকালতির চর্চা করেছেন। দুই মেয়াদে রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৮-২০০২ সাল পর্যন্ত বিজেপির দলিত মোর্চার সভাপতির পদ সামলেছেন তিনি। এছাড়া অখিল ভারত কোলি সমাজের সভাপতিত্বও করেছেন কোবিন্দ। একসময়ে বিজেপির জাতীয় মুখপাত্রও ছিলেন তিনি।
২০১৫ সালের ৮ আগস্ট বর্তমান রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি তাকে বিহারের রাজ্যপাল নিয়োগ করেন। বর্তমানে বিহারের রাজ্যপাল হিসেবেই নিয়োজিত আছেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হয় গত ১৭ জুলাই সোমবার। রাষ্ট্রপতিকে বেছে নিতে দেশের জনপ্রতিনিধিরা ভোট দেন। ৩২টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। এরমধ্যে একটি কেন্দ্র ছিল পার্লামেন্ট হাউসের ভেতর,২৯টি বিধানসভায় একটি করে ২৯টি কেন্দ্র এবং দুটি ইউনিয়ন টেরিটরিতে আলাদা দুটি ভোটকেন্দ্র ছিল। সব মিলিয়ে ৪১২০ জন বিধায়ক ও ৭৭৬ জন সংসদ সদস্য ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পান। রিটার্নিং অফিসার জানান,সোমবার ৯৯ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে ভোট গণনা শুরু হয়। প্রথমে খোলা হয় সংসদ থেকে জমা পড়া ভোটের বাক্স। তারপর রাজ্য থেকে আসা ভোট গণনা করা হয়। চারটি আলাদা আলাদা টেবিলে আট দফায় চলে গণনা।
এনডিএ ছাড়াও কোবিন্দকে সমর্থন করেছে বিজেডি,জেডিইউ,এডিএমকের মত দলগুলো।