বাংলাদেশে আদিবাসী ঐতিহ্য-সংস্কৃতি সংরক্ষণ করা দরকার: রঁদেভূ’র আয়োজনে চবি উপাচার্য

আইপিনিউজ ডেক্স(ঢাকা): গতকাল ৫ মার্চ ২০২৩ ইং, “অক্ষরের মিছিলে জীবনের গান, ভাষায় অস্তিত্ব, ভাষাতেই প্রাণ” এই প্রতিপাদ্য নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আদিবাসী শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক সংগঠন রঁদেভূ শিল্পীগোষ্ঠী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক তৃতীয় বারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ‘আদিবাসী সংস্কৃতি ও ভাষা বৈচিত্র্য উৎসব – ২০২৩’।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়স্থ উন্মুক্ত মঞ্চ প্রাঙ্গণে আজ রবিবার দুপুর ২:০০ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত আয়োজনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আক্তার এবং অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে উপস্তিত ছিলেন রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. কাঞ্চন চাকমা। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে, সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিরাজ উদ দৌল্লাহ, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আনন্দ বিকাশ চাকমা, আইএমএল’র প্রভাষক জেসী ডেইজী মারাক ও ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষক উমে ছেন রাখাইন প্রমুখ।
রঁদেভূ’র সদস্য এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ডচেংনু চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন রঁদেভূ’র সভাপতি বর্ষা চাকমা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শিরীন আক্তার বলেন, “বাংলাদেশে যতগুলো আদিবাসী ভাষা রয়েছে সেগুলো চর্চা ও লালন চালিয়ে যেতে হবে।বাংলাদেশে আদিবাসী ঐতিহ্য-সংস্কৃতি সংরক্ষণ করা দরকার। বাংলাদেশ একটি সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যতার রাষ্ট্র। এখানে বসবাসরত আদিবাসীদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সবার মাঝে ছড়িয়ে যাক।”
উদ্বোধক ড. কাঞ্চন চাকমা বলেন, “আমাদের যে বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভাষাসমূহ প্রায় বিলুপ্তির পথে আছে তা সঠিকভাবে চর্চার প্রয়োজন রয়েছে। এজন্য সচেতন মহলকে এগিয়ে আসা অত্যন্ত জরুরী। শিক্ষানীতি ২০১০ সালে আদিবাসী মাতৃভাষাগুলোর শিক্ষাদানের কথা থাকলেও তা কার্যকরভাবে এখনো বাস্তবায়িত হয়ে ওঠেনি।সরকারের এই বিষয়ে আন্তিকতার সঙ্গে এগিয়ে আসা জরুরী।”
উপস্থিত অন্যান্য বক্তারা বলেন, “ভাষায় যে বৈচিত্র্যতা রয়েছে তার মধ্যেই সৌন্দর্য্য রয়েছে। আদিবাসীদের প্রান্তিক ভাষাগুলো রক্ষা করতে হবে সচেতন-শিক্ষিত সমাজকে।” এছাড়াও তারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আদিবাসী ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চা ইনস্টিটিউট চালুর প্রস্তাব দেন। আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সংগঠনের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক ভুবন চাকমা। এছাড়াও শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন পিসিপি, চবি শাখার সাধারণ সম্পাদক অন্তর চাকমা।
দ্বিতীয় পর্বে রঁদেভূ’র শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। এছাড়াও চবি চারুকলা ইন্সটিটিউটের আদিবাসী শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে অনুষ্ঠানে চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য যে, রঁদেভূ শিল্পীগোষ্ঠী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সকল আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ভাষা-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য রক্ষা ও চর্চার মধ্য দিয়ে তা প্রসারের জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছরের ন্যায় এই বছরও ‘আদিবাসী ভাষা ও সংস্কৃতি বৈচিত্র্য উৎসব-২০২৩’ আয়োজন করল সংগঠনটি।