বগুড়ার শেরপুরে আদিবাসী পল্লীতে হামলাকারী ভূমিদস্যুদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি
আইপিনিউজ ডেক্স(ঢাকা): সমতলের আদিবাসীদের ভূমির অধিকার নিশ্চিত, আদিবাসীদের জানমাল নিরাপত্তা, বসতভিটা, কৃষিজমি রক্ষা, বগুড়ার শেরপুরে ভূমিদস্যুদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে গতকাল এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, জনউদ্যোগ, আদিবাসী যুব পরিষদ, আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে গতকাল (১৩ জানুয়ারি) শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাজুু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে উপরোক্ত দাবিসমূহ উত্থাপন করা হয়।
লেখক ও আদিবাসী নেতা রাখী ম্রং এর সভাপতিত্বে আদিবাসী যুব পরিষদের সভাপতি হরেন্দ্রনাথ সিংহের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের প্রধান উপদেষ্টা ডা. দিবালোক সিংহ, আদিবাসী নেতা বিভূতিভূষণ মাহাতো, বিষুরাম মূর্মূ , স্বপন কর্নী দাশ প্রমুখ
সমাবেশে সংহতি বক্তব্য রাখেন সিপিবি নেতা মিহির ঘোষ, আসলাম খান, তারিক হোসেন মিঠুল, মাজাহারুল ইসলাম, যুবনেতা খান আসাদুজ্জামান মাসুম, ছাত্রনেতা দীপক শীল প্রমুখ।
ডা. দিবালোক সিংহ বলেন, দেশের বিপুল সংখ্যক আদিবাসীদের কেনো সাংবিধানিক স্বীকৃত নেই। তারা ভাষা, সংস্কৃতি, ভূমিসহ অন্যান্য অধিকার ও সুযোগ থেকে বঞ্চিত। ভূমিদস্যুরা আইনের মারপ্যাচে জোর করে আদিবাসীদের উচ্ছেদ করছে। তিনি বলেন, সমতলের আদিবাসীদের ভূমি কমিশন গঠন, সাংবিধানিক স্বীকৃতি নিশ্চিত ও সুরক্ষার জন্য আইন প্রণয়ন করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ডিসেম্বর থেকে বগুড়ার শেরপুর ভবানিপুর ইউনিয়নের আমবইল, গোর্তা, কেশবপুর, মরাদিঘী, জয়নগর গ্রামে ভূমি দখলকে কেন্দ্র করে আদিবাসীদের উপর নির্যাতন ও বাড়িঘরে হামলা চালানো হচ্ছে। গত কয়েকদিন হামলা চালিয়ে বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত মাহাতোসহ ১৯ জনকে গুরুতর আহত করে। মন্ডল গ্রæপ ভূমি দখলের জন্য সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। হামলায় নারী-পুরুষ শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। যখন স্থানীয় প্রশাসন উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন, সকল পক্ষের সাথে বৈঠক করছেন, তখন ভূমিদস্যুদের সন্ত্রাসী বাহিনী উদ্যোগকে উপেক্ষা করে ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং এলাকা ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে।
বিক্ষোভ সমাবেশে, আদিবাসী সংগঠনসমূহ দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে করে মিছিল সহকারে সমাবেশে যোগ দেন। সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এখন পর্যন্ত পার্বত্য চট্রগ্রামের শান্তি চুক্তি বাস্তবায়িত হয়নি। গাইবান্ধার বাগদা ফার্ম, শেরপুরের ভবানিপুর আদিবাসীরা উচ্ছেদ আতংকে ভুগছে। মধুপুর ইকো পার্কের নামে বন ধ্বংসের পাঁয়তারা চলছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসীদের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকলেও স্বাধীন দেশে অবহেলিত অসহায় এই নির্যাতিত নিপীড়িত আদিবাসীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে সমাবেশ থেকে আহ্বান জানানো হয়।