পিসিপি, ঢাবি, বাসাবো ও মিরপুর শাখার বার্ষিক সম্মেলন সম্পন্ন
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ “সময়ের আহবানে আদর্শিক শক্তিতে সংগঠিত হয়ে প্রতিরোধ করি সকল আগ্রাসন ”
এ স্লোগান কে সামনে রেখে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাসাবো ও মিরপুর শাখার বার্ষিক সম্মেলন ও ৩য় তম কাউন্সিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির মুনীর চৌধুরী অডিটোরিয়াম হলে সম্পন্ন হয়েছে। উক্ত সম্মেলন ও কাউন্সিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির, তথ্য ও প্রচার বিভাগের সম্মানিত সদস্য, দীপায়ন খীসা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন -পিসিপি, কেন্দ্রীয় সভাপতি, ছাত্রনেতা বাচ্চু চাকমা। আরো অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন -হিল উইমেন্স ফেডারেশন, ঢাকা মহানগর শাখার সভানেত্রী, চন্দ্রা ত্রিপুরা। বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের, সভাপতি, সুমন মারমা। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাবি শাখার, সভাপতি, তুহিন কান্তি দাশ।
প্রথমে , জাতীয় ও দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। এরপর অনুষ্ঠানের সভাপতি অতিথিদের নিয়ে মঞ্চে আসন গ্রহণ করে।
আলোচনা সভা শুরু করার আগে এ যাবৎ কালীন জুম্ম জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই সংগ্রামে যারা শহীদ হয়েছে তাদের উদ্দেশ্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এরপর অনুষ্ঠানে, পিসিপি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন অত্র সংগঠনের, সহ-সাধারণ সম্পাদক, লিপেন চাকমা।
পিসিপি, বাসাবো শাখার সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন, অত্র সংগঠনের, সভাপতি, শুভদেব চাকমা।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন, পিসিপি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার, সদস্য, সুজিক চাকমা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে, চন্দ্রা ত্রিপুরা বলেন, লড়াই সংগ্রামে নারীদের অংশগ্রহণ ছাড়া অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। আজকে যারা উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত আছে তাদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে শিকড়ের টানে ফিরে যেতে হবে। জুম্ম জাতির ক্রান্তিলগ্নে এই ছাত্রদেরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রত্যেক ছাত্রকে রাজনৈতিক ভাবে সচেতন হতে হবে। আদর্শিক রাজনৈতিক শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের, সভাপতি, সুমন মারমা বলেন, শাসকগোষ্ঠী জাতিগত নির্মূলীকরণের মধ্য দিয়ে আদিবাসীদের অস্তিত্ব কে চিরতরে ধ্বংস করার জন্য ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান ছাত্র সমাজকে ইতিহাস জানতে হবে। ইতিহাসের আলোকে ছাত্র সমাজের লক্ষ্যটা ও নির্ধারণ করতে হবে।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাবি শাখার,সভাপতি, তুহিন কান্তি দাশ বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে আদিবাসীরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ পরিচালিত হতে পারছে না।
পিসিপি, কেন্দ্রীয় সভাপতি, বাচ্চু চাকমা বলেন, আজকের এ সম্মেলন এমন সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যখন সারাদেশে দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন ও অরাজকতা বেড়ে চলেছে। শিক্ষার মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ সবসময় অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। আমরা শোষিত শ্রেণির পক্ষে কথা বলি, আর শাসকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি।
দীপায়ন খীসা, প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদকে প্রতি ক্ষণে ক্ষণে সংগ্রাম করতে হয়েছে। অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে আজকে এই পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ টিকে আছে। যুগে যুগে ছাত্ররাই নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে। তাই ছাত্রত্ব শেষ করে ছাত্রদের মানুষের মুক্তির সংগ্রামে সমর্পণ করতে হবে। ছাত্রদের বিপ্লবী আদর্শে শিক্ষিত হতে হবে। বৈপ্লবিক আদর্শ বলতে, সাম্যবাদী দর্শন কে বুঝানো হয়েছে। বাস্তবতা বড়ই কঠিন। কিন্তু, তারপর ও আমাদের লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে, সভাপতিত্ব করেন, পিসিপি, ঢাবি শাখার, সভাপতি ছাত্রনেতা নিপন ত্রিপুরা। সঞ্চালনা করেন, পিসিপি, ঢাবি শাখার, সাধারণ সম্পাদক, অমর শান্তি চাকমা।
সবশেষে, অমর শান্তি চাকমা কে সভাপতি, অরুন কান্তি তঞ্চগ্যা কে সাধারণ সম্পাদক, রিবেং দেওয়ান কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে পিসিপি, ঢাবি শাখার নব কমিটি ঘোষণা করা হয়।
শুভদেব চাকমা কে সভাপতি, লক্ষীরঞ্জন চাকমা কে সাধারণ সম্পাদক, উসংল্লা মারমা কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে পিসিপি, বাসাবো শাখার নব কমিটি ঘোষণা করা হয়।
তুর্বাণ রায়য় কে সভাপতি, দিগন্ত চাকমা কে সাধারণ সম্পাদক, রিপরিপ চাকমা কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে পিসিপি, মিরপুর শাখার নব কমিটি ঘোষণা করা হয়।
উক্ত কমিটি গুলো কে শপথ বাক্য পাঠ করান, পিসিপি কেন্দ্রীয়, সহ-সাধারণ সম্পাদক জেমশন আমলাই বম, পিসিপি কেন্দ্রীয়, তথ্য ও প্রচার সম্পাদক, সুলভ চাঙমা ঢেঙা, পিসিপি, ঢাকা মহানগর শাখার সহ-সভাপতি, জ্ঞানজ্যোতি চাকমা।