আঞ্চলিক সংবাদ

পাহাড়ী শ্রমিক কল্যাণ ফোরামের কর্মী সম্মেলন

চট্টগ্রাম থেকে এস জে চাকমা: “শ্রমজীবী মানুষের অধিকার চাই,পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাস্তবায়ন চাই” শ্লোগানকে সামনে রেখে ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ পাহাড়ী শ্রমিক কল্যাণ ফোরামের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুমন চাকমার নভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শক্তিপদ ত্রিপুরা, সহ-তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সজীব চাকমা, সমিতির চট্টগ্রাম অঞ্চলের সমন্বয়কারী শরৎ জ্যোতি চাকমা,বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, কক্সবাজার জেলা সভাপতি থোই অং রাখাইন বুবু। সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের সহ সাধারণ সম্পাদক মিন্টু চাকমা, শ্রমিক নেতা সুকাম দেওয়ান, অনিল বিকাশ চাকমা, সোনাবি চাকমা, নিকেল চাকমা, জেকশন চাকমা, জগৎ জ্যোতি চাকমা,বাবু চাকমা প্রমুখ। নগরির আরবান সেন্টার হলে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে চট্টগ্রাম বন্দর এলাকা, পতেঙ্গা, পাহাড়তলি ডবলমুরিং চান্দঁগাও,কাঠগড়, মহিলা ফোরামসহ মোট ১২টি কমিটি থেকে দুই শতাধিক কর্মী অংশ নেন। পর্যবেক্ষক হিসেবে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর ও বিশ^বিদ্যালয়ের নেতৃবৃন্দ অংশ গ্রহণ করেন।
কর্মী সম্মেলনের সম্মানিত অতিথি শক্তিপদ ত্রিপুরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি একটি মানবতাবাদী সংগঠন। মানবতাই এই পার্টির আদর্শ। তাই জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বে মানবতা এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম চলমান রয়েছে। এই সংগ্রামে শ্রমিক শ্রেণী মানুষকে অধিকতর সাহসের সাথে সংগ্রামে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, রাষ্ট্র আজ উগ্রজাতীয়তাবাদীর দিকে হাটছে। উগ্রজাতীয়তাবাদী চিন্তা ধারায় জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠা পায়না। আমরা জুম্ম জাতীয়তাবাদে বিশ^াস করি কারন এতে জুম অঞ্চলের সকল মানুষের অস্তিত্ব স্বীকার করে নেওয়া আছে। কিন্তু বাঙালি জাতীয়তাবাদের মধ্যে শুধু মাত্র একটি বিশেষ জাতির অস্তিত্ব রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ তো এক জাতি রাষ্ট্র নয়। বহু জাতির এবং ভাষার দেশ। তাই দেশের সকল মানুষের জাতীয় অস্তিত্ব সংরক্ষণের লক্ষে আমাদের প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক চিন্তা ধারা সম্পন্ন মানুষের সমাবেশ ঘটাতে হবে। এই ক্ষেত্রে পাহাড়ী শ্রমিক কল্যাণ ফোরাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সম্মেলনের বিশেষ বক্তা সজীব চাকমা বলেন, প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক চিন্তা ধারা সম্পন্ন নেতৃত্ব দ্বারা দেশ পরিচালিত না হলে সমাজের বা দেশের বঞ্চিত অংশের অধিকার প্রতিষ্ঠা পায়না। এখানে জাতিগত নিপীড়ন ও শোষণ থাকে, থাকে ধর্মীয় নিপীড়ন যা আমরা দেশের মধ্যে দেখতে পাচ্ছি। এই ধরনের সরকার ব্যবস্থায় আমরা যারা জাতিগত সংখ্যালঘু ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রাম করতে না পারলে অস্তিত্ব ঠিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। একটা সময় আসবে অস্তিত্বও থাকবেনা। আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই । সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫.৩০ ঘটিকা পর্যন্ত চলা সম্মেলনের একটা অধিবেশনে পাহাড়ি শ্রমিক কল্যাণ ফোরামের সমস্যা ও সম্ভাবনা এবং করনীয় শীর্ষক এজেন্ডার উপর বিভিন্ন থানা কিমিটির প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, সরকার চুক্তি বাস্তবায়ন না করে উল্টো জনসংহতি সমিতি ও চুক্তি বিরোধী অবস্থান নিয়ে পারষ্পরিক দূরত্ব বাড়াচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাঙ্গামাটির বিলাইছড়িতে সেনা সদস্য কর্তৃক দুই মারাম কিশোরী ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে প্রশাসনের অভিনব তালবাহানায় বুঝা যায় আদিবাসীরা কি ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। কর্মী সম্মেলন থেকে চাকমা রানী য়েন য়েন এর উপর পুলিশের হামলার নিন্দা জানানো হয়।

Back to top button