পাহাড়ী উদ্যোক্তাদের তিন অভাবঃ পুঁজি, প্রশিক্ষণ ও পরিকল্পনা
সতেজ চাকমা: পার্বত্য চট্টগ্রামের ১১ টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর দুর্বল আর্থসামাজিক কাঠামো, স্বতন্ত্র জীবন ধারা ও প্রথাগত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে উদ্যোক্তা গড়ে ওঠা এবং টিকে থাকার কাজটি বেশ কঠিন। এই বাস্তবতার মধ্যে করোনার কালোছায়াও বেশ দৃশ্যমান। করোনার ধাক্কায় অনেকেই কাজ হারিয়েছেন, পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হয়েছেন এবং ফলশ্রুতিতে পাহাড়ে বেড়ে গেছে দারিদ্রের সংখ্যা।
২০০৯ সালে ইউএনডিপি-চিএইচটিডিএফ এর সহায়তায় পরিচালিত একটি সার্ভে অনুযায়ী পাহাড়ে আদিবাসীদের মধ্যে নিশ্চিত দরিদ্রের হার ৬৫% এবং চরম দারিদ্রের হার ৪৪% । বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো অনুযায়ী জাতীয় হিসাবে চরম দারিদ্রের এই হার ১০.৫% (২০১৯)।
এছাড়া পাহাড়ের প্রায় তিন চতুর্থাশ আদিবাসী পরিবার যাদের হিসাবে ৭৪% নিম্ন দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছে বলে ইউএনডিপি উক্ত রিপোর্টে উল্লেখ করে। তবে সরকারী বেসরকারী নানা উদ্যোগ ও উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালে এসে এই পরিসংখ্যানটি পরিবর্তিত হয়েছে নিশ্চয়।
২০১৬ সালে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর মাউন্টেইন ডেভলপমেন্ট ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকাশিত ‘এ্যাচিভিং দ্যা এসডিজি’স ইন সিএইচটি: চ্যালেঞ্জেস এন্ড অপরচ্যুনিটিস’ নামের গবেষণা পুস্তিকায় বলা হয় যে, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে পেশাগত বৈচিত্র্যতায় কম ভিন্নতা এবং অতিমাত্রায় কৃষি নির্ভরতার কারণে এখানে দ্রারিদ্রতার হার বেশী’। এছাড়া ইউএনডিপি পরিচালিত উক্ত সার্ভে আরো দেখায় যে পাহাড়ের আদিবাসীদের কেবলমাত্র ৩% মানুষ নানা ব্যবসা এবং ৩.৫% শতাংশ মানুষ বেতনভুক্ত চাকুরীতে সম্পৃক্ত। এক যুগ পেরিয়ে এই হারও কিছুটা এগোবে কিন্তু বাড়তি জনসংখ্যা এবং সীমিত ভূমির উপর চাপ কমাতে নতুন নতুন কাজের সুযোগ এবং উদ্যোগ সৃষ্টি জরুরী বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা।
ছোট-বড় ও মাঝারি মানের বিভিন্ন ধরণের উদ্যোগে জড়িত তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ৮ জন নারী ও ১২ জন পুরুষ উদ্যোক্তার সাথে নানা মাধ্যমে কথা বলে জানা গেছে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কথা। উক্ত উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিল কৃষি উদ্যোক্তা, রিসোর্ট ব্যবসায়ী, ই-কমার্স সম্পর্কিত নারী উদ্যোক্তা, মুদি দোকানের মালিক, নৌ-পরিবহনের মালিক, ফ্রিল্যান্সার, জুম চাষী এবং এমনকি কয়েকজন বেকার যুবকের সাথেও কথা হয়েছে এই প্রতিবেদকের।
তাঁদের মধ্যে একজন তরুণ নারী উদ্যোক্তা পারমী চাকমা (২৩)। ২০১৯ সাল থেকে অনলাইন ব্যবসায়ে জড়িত পারমী আইপিনিউজকে বলেন, ‘৩০০০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করা আমার ব্যবসার বর্তমান আয় ৩ লক্ষাধিক। তবে করোনা সংকটে নানা বাঁধায় পড়ে অনেক ক্ষতিগ্রস্থও হয়েছি।’ গত ফেব্রুয়ারীতে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ থেকে অন্য ২০ উদ্যোক্তার সাথে সম্মাননা হিসাবে ২০ হাজার টাকা প্রণোদনা পেয়ে উৎসাহিত বোধ করলেও প্রশিক্ষণের অভাব ও দুরদর্শী পরিকল্পনা না থাকায় ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান বলে জানান পারমী।
অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করা ডনওয়াই ম্রো (২২) বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সময়েই বান্দরবানের চিম্বুকে তার বাড়ীর পাশে একটি ছোট্ট দোকান খুলে পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন ফল, চা-কফি ও অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি করেন। উদ্যোগের অবস্থা সম্পর্কে ডনওয়াই বলেন, ধার করা অর্থে এই কাজটি শুরু করা এবং দোকান ঘর থেকে স্থায়ী রূপ দিলেও এখন পর্যন্ত কত আয় হয়েছে তার কোনো সুনির্দিষ্ট হিসাব আমার নেই। মূলধনের দুষ্প্রাপ্যতা ও চাকুরী ব্যবস্থাকরণে পারিবারিক, সামাজিক নানা চাপে সন্দিহান এই উদ্যোগটি নিয়ে।’
উপরোক্ত বিশ উদ্যোক্তা প্রতিবেদককে জানিয়েছেন তাঁদের প্রধান সংকট হচ্ছে- পুঁজি, প্রশিক্ষণের অপর্যাপ্ততা ও পরিকল্পনাহীনতা। তবে এইসব সংকট ছাড়াও সরকারী বা বেসরকারী প্রণোদনা না পাওয়া; যোগাযোগ ব্যবস্থার অসুবিধা; উদ্যোক্তাদের নিয়ে প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিকল্পনা ও পর্যাপ্ত প্রণোদনার ব্যবস্থা না থাকা এবং গুনগত শিক্ষার অভাবকে দুষছেন তাঁরা।
তবে রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও পাহাড়ে উদ্যোক্তাদের নিয়ে কাজ করা প্রো-বেটার লিভিং লি: এর চেয়ারম্যান রনজ্যোতি চাকমা পাহাড়ে উদ্যোক্তাদের চারটি মূল বাঁধার কথা বলেন। তিনি বলেন, প্রথমত, পাহাড়ীরা ব্যবসা করতে পারবে না এমন বদ্ধমূল ভুল ধারণা, দ্বিতীয়ত, পরিবারিক বাঁধা, তৃতীয়ত, মূলধনের সংকট। তাছাড়া মূলধন যোগাড় হলেও চতুর্থ যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেটি হল- তাদের সুনির্দিষ্ট গাইডেন্স সাপোর্ট ও বিজনেস প্ল্যানের অভাব। যার জন্য তারা ঝরে পড়ে বলে মনে করেন এই শিক্ষাবিদ।
ব্যাংক ব্যবস্থার সাথে অভ্যস্ত নয় পাহাড়ীরাঃ
স্বতন্ত্র প্রথাগত জীবন ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার দরুন ব্যাংক ব্যবস্থার সাথে অধিকাংশের নেই পরিচয় ও সংযোগ। রাবিপ্রবি শিক্ষক রনজ্যোতি চাকমা এ প্রসঙ্গে বলেন, পাহাড়ীরা এমনকি একটি ব্যাংক হিসাবও খুলতে চায় না।
তফসিলী ব্যাংকসমূহ সহ বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত বিভিন্ন লোন বা প্রণোদনা প্রদান সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে অধিকাংশ উদ্যোক্তারাই বলেছেন তারা এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল নয়। সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসএমই ফাউন্ডেশন থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য যে ১লাখ থেকে ৭৫লাখ পর্যন্ত প্রণোদনা হিসাবে যে লোন প্রদান করা হচ্ছে তাও তারা জানে না। আর যারা জানে তারাও হয় সেই লোন প্রাপ্তির শর্তগুলো পূরণ করতে অক্ষম নতুবা প্রক্রিয়ার জটিলতায় লোন নিতে অপারগ।
এ প্রসঙ্গে রনজ্যোতি চাকমা আরো বলেন, ব্যাংক লোন দেয় উদ্যোক্তার ‘আর্থিক ব্যবস্থাপনার‘ বিবরণী দেখে এবং কতগুলো শর্ত পূরণ সাপেক্ষে। যদি শর্তগুলো পূরণও করে তার জন্য নানা প্রক্রিয়া, লেনদেন ও আয় ব্যায়ের হিসাব চেক এর মাধ্যমে আপডেট করার মত বিষয়ের সাথে পাহাড়ী উদ্যোক্তারা অভ্যস্ত নয়।
তবে এ বিষয়ে বান্দরবানের উন্নয়ন কর্মী লেলুং খুমী বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরে কর্মরত পলিসি প্রণয়নকারীরা পাহাড়ীদের প্রথাগত জীবন ব্যবস্থা নিয়ে অভিজ্ঞ নয়। তারা আদিবাসী বান্ধব পলিসি প্রণয়ন করতে পারে না এবং পাহাড়ীদের স্বতন্ত্র প্রথাগত জীবন পদ্ধতির কারণে নতুন প্রক্রিয়ার সাথে অভ্যস্ত না হওয়ায় তারা এই লোন প্রাপ্তিতে পিছিয়ে।
প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের যথাযথ পরিকল্পনার অভাবঃ
এদিকে পাহাড়ে দীর্ঘদিন ধরে পর্যটনের রিসোর্ট ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসার সাথে জড়িত গৌরব দেওয়ান বলেন, পাহাড়ে উদ্যোক্তাদের জন্য প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠান সমূহের যথাযথ নীতিমালা ও গাইডলাইন নেই। সমতলের মানুষ কাপ্তাই লেকের সৈন্দর্য্য দেখার জন্য রাঙ্গামাটি যায়। কিন্তু যেভাবে লেকটি নোংরা হচ্ছে এবং লেকের পাড়ে বসত বাড়ী নির্মাণ করা হচ্ছে আগামী দশ বছর পর আর এই সৈন্দর্য্য থাকবে না। আর এই সৈন্দর্য্য না থাকলে রিসোর্ট ও পর্যটন ব্যবসা অসম্ভব।
অন্যদিকে রিসোর্টগুলোর পথে পথে বিভিন্ন সময় আইনরক্ষাকারী বাহিনীর তল্লাশি, জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রত্যাশানুযায়ী অন্যান্য সেবা না পাওয়ায় পর্যটকরা হতাশ হন বলে মন্তব্য করেন গৌরব দেওয়ান।
অপর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ট্রেনিং ডিজাইন এর অসঙ্গতি ও দুর্বলতাঃ
পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাবও উদ্যোক্তাদের আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ। ২০১৭ সালে আইএলও এবং বিআইডিএস পরিচালিত একটি গবেষণা সার্ভেতে বলা হয় যে, পাহাড়ের ৭৩.১৩% আদিবাসীর মধ্যে ‘সিম্পল টাস্ক’ পরিচালনার জন্য ন্যুনতম দক্ষতা নেই। এ প্রসঙ্গে গৌরব দেওয়ান বলেন, অনেক দিন আগে জেলা পরিষদ থেকে ট্রেনিং এর কথা বলা হলেও এখন সেরকম ট্রেনিং আয়োজন করা হয়েছে বলে শুনিনি। আর বিভিন্ন সংস্থার আয়োজিত ট্রেনিংগুলো প্রাকটিক্যালের চাইতে থিওরিথিক্যাল বেশি হয়।’
এদিকে ট্রেনিংসমূহের ডিজাইন পাহাড়ী উদ্যোক্তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বেকগ্রাউন্ড এর সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ বলে মনে করেন রাবিপ্রবির শিক্ষক রনজ্যোতি চাকমা।
তিনি বলেন, পাহাড়ের জেলা পরিষদ সমূহের প্রাথমিক স্তরে যোগ্যতার পরিবর্তে ঘুষ বা প্রশ্ন জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ায় কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের মৌলিক শিক্ষায় ঘাটতি থেকে যায় এবং ট্রেনিং এর শিক্ষণ তারা বুঝতে পারে না।
পর্যাপ্ত দাম না পাওয়া ও যোগাযোগের অসুবিধাঃ
এদিকে বিগত মৌসুমে আনারসের দাম প্রতিটি দশ টাকা এবং সর্বনিম্ন ১০ টাকায় তিনটি পর্যন্ত আনারস বিক্রি করতে হয়েছে বলে রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ির চাষীরা জানিয়েছেন। আবার রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা নামের এক কৃষি উদ্যোক্তা আইপিনিউজকে বলেন, বর্ষা মৌসুম ছাড়া বিলে পানি না থাকায় অনেক দূর কাঁধে কিংবা পিঠে করে কষ্টে আনারস, কাঠাল বা অন্যান্য ফসল বাজারে নিতে হয়। এতে লেবার খরচও বেশি। তারপরও বাজারে নিয়ে পর্যাপ্ত দাম না পেলে খারাপ লাগে।’
এছাড়াও রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীলতায় অনেক সময় বাজার বন্ধ থাকা কিংবা ঝামেলার কারণে বাজারে নিতে না পেরে ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথাও বলেন উক্ত উদ্যোক্তারা।
পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ অবাস্তবায়ন ও প্রশাসনিক কাঠামোর দুর্বলতাঃ
উপরোক্ত সমস্ত কারণগুলোর উর্দ্ধে যে মৌলিক কারণটি পাহাড়ের সকল ধরণের ব্যাবসায়ীক উদ্যোগকে ব্যহত করছে সেটা হল পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ অবাস্তবায়নের ফলে সৃষ্ট প্রশাসনিক দুর্বলতা ও নানা সংকট। এ প্রসেঙ্গে এই প্রতিবেদকের সাথে এক আলাপে বিশিষ্ট রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে Entrepreneurship Development (ED) একটি অর্থনৈতিক বিষয় নয়, স্পষ্টতই এটি একটি রাজনৈতিক ইস্যু। পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং গত ৭০ বছর ধরে অ-আদিবাসী (Non-indigenous),আইনরক্ষাকারী বাহিনী ও ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক যে জমি ও জঙ্গল দখল হচ্ছে তার সম্পূর্ণ সমাধান ব্যতীত পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রকৃত অর্থে Entrepreneurship Development (ED) বা বানিজ্যিক উদ্যোগ অসম্ভব।
এই মতের পুনরাবৃত্তি করেন পাহাড়ে দীর্ঘদিন ধরে ট্যুরিজম ব্যবসার সাথে জড়িত উদ্যোক্তা গৌরব দেওয়ান। তাঁর মতে, চুক্তি বাস্তবায়ন হলে প্রকৃত জনপ্রতিনিধি কর্তৃক যদি প্রশাসন পরিচালিত হতো তাহলে সমস্ত কিছু পরিকল্পনা মাফিক বাস্তবায়ন হতো এবং ব্যবসায় ভালো সুযোগ ও পরিবেশ দুটোই তৈরী হতো।
এ প্রসঙ্গে ড. আবুল বারকাত আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য তিন জেলা পরিষদের হাতে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, সুসংহত সমন্বয় এবং আদিবাসীদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়া ব্যতীত পাহাড়ে Entrepreneurship Development সম্ভব নয়।
এদিকে উদ্যোক্তাদের জন্য গৃহীত নানা পদক্ষেপের খবর নিতে যোগাযোগ করা হলে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের কারোরই সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নেই বলে জানানো হয়। এ প্রসঙ্গে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিটন খীসা বলেন, উদ্যোক্তাদের নিয়ে জেলা পরিষদের কোনো নীতিমালা নেই। বিগত চার বছরে সেভাবে উদ্যোক্তাদের সাপোর্ট প্রদান করা হয়েছে এবং কোনো ধরণের ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে আমি দেখিনি।
এ বেপারে প্রশ্ন করা হলে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা উ চি মং বলেন, ইন্টিগ্রেটেড কোনো নীতিমালা নেই। তবে প্রকল্প ভিত্তিক যখন কাজ করা হয় তখন সেখানে উল্লেখ করা হয় কারা পাবে, কীভাবে পাবে। জেলা পরিষদের নানা সীমাবদ্ধতার কারণে এসব হচ্ছে।
তিনি বলেন, এখন তো মানুষ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য নানা কাজ করছে। কাজেই নানা ধরণের ট্রেনিং ও প্রণোদনা পেতে আগ্রহী মানুষ অনেক। কিন্তু আমরা সেভাবে সাপোর্ট দিতে পারি না। কেননা, এখানে এডমিনে চারটি পদের বিপরীতে আছে মাত্র একজন আর ৭ জন প্রকৌশলীর বিপরীতে আছে মাত্র তিন জন। এই কম সংখ্যক জনবল দিয়ে তো পারা যায় না।
এ বিষয়ে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা অরনেন্দু ত্রিপুরা বলেন, ট্রেনিংগুলো আয়োজন করে আমাদের অধীনস্ত প্রতিষ্ঠান বিসিক ও যুব উন্নয়ন। কিন্তু সেধরণের সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নেই। ‘উদ্যোক্তা’ ধারণাটিকে ‘নতুন কনসেপ্ট’ হিসাবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, বর্তমান জেলা পরিষদের যে অবকাঠামো তাতে এই বিষয়ে কেউ যে চিন্তা করবে বা ব্যাপারটিকে হুদয় অঙ্গম করে ব্যবস্থা নিবে সেরকম কেউ নেই। প্রণোদনা দেয়া এবং তাদের জন্য বাজেটিং করা কিংবা ব্যাংকের সাথে কানেক্ট করে দেয়া, এসব নিয়ে সত্যিকার অর্থে ভাবার মত এখনো কেউ নেই।