আন্তর্জাতিক

শান্তি চুক্তির ৬৫টি ধারা সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে – জাতিসংঘে বাংলাদেশ সরকার

সোহেল হাজং, নিউ ইয়র্ক থেকে: নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক স্থায়ী ফোরামের ২২তম অধিবেশনে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি তার বিবৃতিতে বলেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৬৫টি ধারা সম্পূর্ণভাবে, ৩টি ধারা আংশিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং বাকি ৪টি ধারা বাস্তবায়নাধীন অবস্থায় রয়েছে।

মোসাম্মৎ হামিদা বেগম
মোসাম্মৎ হামিদা বেগম
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগম বলেন বাংলাদেশে প্রায় ৯৯ ভাগ জনগণ হল বাঙালি। যারা বৃহত্তম এথনিক গ্রুপ এবং ইন্ডিজেনাস টু দ্যা ল্যান্ড। যাহোক, আমাদের আরও স্মল (ক্ষুদ্র) এথনিক মাইনোরিটি গ্রুপ আছে যারা আমাদের সংবিধানে নাগরিক হিসেবে সমান অধিকার ও সুযোগ নিয়ে যথাযথভাবে স্বীকৃত হয়েছে। তাদের সংখ্যা ৫০টি যার মধ্যে ১৩টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামে ও ৩৭টি সমতল অঞ্চলে বসবাস করে। সরকার অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তাদের আমাদের মূলধারার উন্নয়ন কাতারে নিয়ে আসার জন্য। পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ সময় ধরে সশস্ত্র সংঘাত ছিল যা সরকার ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধির মধ্যে ১৯৯৭ সালে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে দূর হয়। গতবছরের দেয়া আমাদের অঙ্গীকার অনুযায়ী, আমাদের আন্তঃমন্ত্রণালয়ে পার্বত্য চুক্তির বাস্তবায়ন পর্যায় পর্যালোচনা করেছি। আমরা আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৬৫টি ধারা সম্পূর্ণভাবে, ৩টি ধারা আংশিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং বাকি ৪টি ধারা বাস্তবায়নাধীন অবস্থায় রয়েছে। গত ১৯ তারিখ অধিবেশনের তৃতীয় দিন এজেন্ডা আইটেম ৫ (ডি) আদিবাসী বিষয়ক স্প্যাশাল রেপোর্টেয়ার ও জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক এক্সপার্ট ম্যাকানিজম এর সাথে মানবাধিকার সংলাপ সেশনে তিনি সরকারের পক্ষ থেকে এ বিবৃতি দেন।

এর আগের দিন অর্থাৎ গত ১৮ এপ্রিল অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে অধিবেশনের বিশেষ প্রতিপাদ্য এজেন্ডা আইটেম ৩ নিয়ে আলোচনা হয়। তখন বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মি. নিখিল কুমার চাকমা এক বিবৃতিতে প্রায় একই তথ্য তোলে ধরেন। তিনিও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৬৫টি ধারা সম্পূর্ণভাবে, ৩টি ধারা আংশিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং বাকি ধারাগুলো বাস্তবায়নাধীন অবস্থায় রয়েছে। আমরা আমাদের লোকজনের আর্থ-সামাজিক অবস্থা উন্নতির জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন সংগঠনের সাথে কাজ করছি। চলতি বছরে ৬০টি প্রকল্প বাষির্ক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় রয়েছে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে মোট ১৫৫৫টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে।

নিখিল কুমার চাকমা
নিখিল কুমার চাকমা
পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ সময় ব্যাপী সংঘর্ষ, দারিদ্র্য, ক্ষুধা-মন্দা লেগে ছিল। কিন্তু ১৯৯৭ সালে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের পর আমাদের লোকজন সম্পূর্ণভাবে মূলধারার জাতীয় উন্নয়ন নীতির আওতায় চলে আসে বলেন মি. নিখিল কুমার চাকমা।

তিনি নিজেকে লাস্ট এথনিক কম্যুনিটি গ্রুপ অব বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি হিসেবে পরিচিতি দেন।

Back to top button