জাতীয়

পাঠ্যবই থেকে “আদিবাসী” শব্দ সংবলিত গ্রাফিতি বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে ঢাবিতে গ্রাফিতি অংকন

আইপিনিউজ ডেস্ক (ঢাকা): জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রণীত ২০২৫ সালের ৯ম-১০ম শ্রেণীর বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পাঠ্যপুস্তক থেকে আদিবাসী সংবলিত জুলাই আন্দোলনের গ্রাফিতি সরিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে গত ১৩-১৪ জানুয়ারী রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আদিবাসী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে গ্রাফিতি অংকন করে। তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জগন্নাথ হল ও রোকেয়া হল সংলগ্ন বিভিন্ন দেওয়াল ও রাস্তায় প্রতিবাদী গ্রাফিতি অংকন করে।

কর্মসূচীতে অংশগ্রহণকারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, বাংলাদেশ কোনো একক জনগোষ্ঠীর, একক ধর্মের এবং একক জাতির দেশ না। আজকে পাঠ্যপুস্তক থেকে আদিবাসী শব্দটি সরিয়ে দিয়ে পুরো বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মূলত সারা দেশব্যাপী  আদিবাসী জনগোষ্ঠী সম্পর্কে জনসাধারণের কাছে ভুল, মিথ্যা  ও বিকৃত তথ্য প্রচারের জন্যই এ ধরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি নামক একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক সংগঠন। তারা আদিবাসী শব্দটি নিয়ে সাধারণ জনগণের কাছে বিভ্রান্তি ও ধোঁয়াশা সৃষ্টি করছে। কিন্তু আমরা আমাদের জাতিগত অস্তিত্বের প্রশ্নে আপোষ করতে পারিনা। এ কর্মসূচীটি মূলত জুলাই গণ অভ্যুত্থানের চেতনায় আঁকা গ্রাফিতি পাঠ্যপুস্তক থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে।

আরেক অংশগ্রহণকারী শান্তিময় চাকমা বলেন, জুলাই গণ অভ্যুত্থানে এই আদিবাসী লেখা গ্রাফিতিটি ব্যবহার করা হয়েছে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাও জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে আদিবাসী শব্দ ব্যবহার করেছেন। কিন্তু জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পাঁচ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও একটি উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক সংগঠনের দাবি মেনে নিয়ে আদিবাসী শব্দের জন্য পাঠ্যপুস্তক থেকে জুলাই গ্রাফিতি সরিয়ে দেওয়া জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনায় বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যর সাথে সাংঘর্ষিক। আমরা চাই পাঠ্যবইয়ের মাধ্যমে আমাদের আদিবাসীদের ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হোক। তিনি বলেন, পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে আগামী ১৫ জানুয়ারি NCTB ভবন ঘেরাও করা হবে এবং সেখানে আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।

লিটন ত্রিপুরা বলেন, আজকে এই রাতের গ্রাফিতির মাধ্যমে আমরা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে বারবার সংঘটিত হওয়া রাষ্টীয় ষড়যন্ত্রের নকশাকে ভেঙে দিয়ে ইনক্লুসিভ, জনকল্যাণমুখী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য বর্তমান সরকারের কাছে জোর দাবি করছি। একই সাথে সরিয়ে দেওয়া গ্রাফিতিটি সংযোজন করে বহুত্ববাদী রাষ্ট্র গঠন করার দাবি জানাই।

উল্লেখ্য যে, গত ১২ জানুয়ারী স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি ব্যানারে একদল লোক এনসিটিবি ঘেরাও করার পর ২০২৫ সালের প্রণীত ৯ম-১০ম শ্রেণীর বাংলা দ্বিতীয় পত্রের প্রচ্ছদ থেকে আদিবাসী লেখা সংবলিত জুলাই গ্রাফিতিটি উক্ত বইয়ের অনলাইন সংস্করণ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

Back to top button