নিজস্ব রাজনৈতিক শক্তি ছাড়া মুক্তির আন্দোলন বেগবান হবেনাঃ আদিবাসী মহাসমাবেশে সন্তু লারমা
শ্যাম সাগর মানকিন ও আন্তনী রেমাঃ “নিজস্ব রাজনৈতিক শক্তি ছাড়া মুক্তির আন্দোলন বেগবান হবেনা, তাই প্রগতিশীল মানবতাবাদী গণমানুষের আদর্শিক রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ঘোষণার প্রতিবাদী মহাসমাবেশে সন্তু লারমা এ কথা বলেন। ২২ জুলাই মধুপুরের গায়রা মাঠে আদিবাসী মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি আরও বলেন, “এই সমাবেশ শুধু একটা সমাবেশ না, এটা একটা আন্দোলন; ভূমি রক্ষার আন্দোলন, অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলন।” আদিবাসী অধিকার লড়াইয়ের অবিসংবাদিত নেতা এবং জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা(সন্তু লারমা) প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন।
সমাবেশে উপস্থিত অন্যান্যদের মধ্যে আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, “ভূমিকে আমরা মা মনে করি, মধুপুরের মান্দিরা মধুপুর গড়কে আবিমা বলে। যার মানে মাতৃভুমি। যেটাকে মা মনে করি তা দলিল করার প্রয়োজন, রেজিস্ট্রি কেনো করবো?”
মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসীদের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক মেজবাহ কামাল বলেন, “দেশ স্বাধীন হয়েছে ৭১ সালে। আদিবাসীরা কি স্বাধীন হয়েছে?
ঐক্য ন্যাপের আহ্বায়ক, বর্ষীয়ান নেতা, মুক্তিযোদ্ধা পঙ্কজ ভট্টাচার্য মধুপুরের আদিবাসী শহীদদের কথা স্মরণ করে বলেন, “এই মাটির জন্য রক্ত দিয়েছে যারা, তারা এই পাকিস্তানী চেতনার প্রজ্ঞাপন মানবেনা।
সমাবেশে উপস্থিত আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট অঞ্চল, বৃহত্তর ময়মনসিংহ এবং উত্তরবঙ্গে আদিবাসীদের উপর নির্যাতনের মাত্রা একই।”
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ্রী রানা দাশ গুপ্ত, অ্যাডভোকেট ইমতিয়াজ মাহমুদ, জয়েনশাহী আদিবাসী পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক, জনসংহতি সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী শক্তিপদ ত্রিপুরা, মধুপুরের প্রবীণ সমাজসেবী আলবার্ট মানকিন, জয়েনশাহী আদিবাসী পরিষদের সাবেক সভাপতি অজয় এ মৃ এবং বিভিন্ন সংগঠন ও ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য গত ১৫ই ফেব্রুয়ারী ২০১৬ খ্রিস্টাব্দ পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় (বন-অধিশাখা-১) থেকে টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর গড়ের ৯,১৪৫.০৭ একর ভূমিকে ১৯২৭ বন আইনের ২০ ধারার ক্ষমতাবলে সংরক্ষিত বনভূমি ঘোষণা করা হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে এখন এই ভূমিতে বসবাসরত গারো, কোচ, বাঙ্গালী ও আদিবাসী মানুষের মনে উচ্ছেদ আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এই ঘোষণার প্রতিবাদে গারো স্টুডেন্ট ইউনিয়ন ইউনিয়ন (গাসু) এবং মধুপুরের সন্মিলিত আদিবাসী সমাজ এই মহাসমাবেশের আয়োজন করেন। গারো স্টুডেন্ট ইউনিয়নের (গাসু) কেন্দ্রীয় সভাপতি ডেনী দ্রং এই মহাসমাবেশের সভাপতিত্ব করেন।