জাতীয়

নান্যেচর গণহত্যার ৩১তম বার্ষিকী: আলাদা ট্রাইব্যুনালের দাবিতে পিসিপির স্মরণসভা

গতকাল ১৭ নভেম্বর রবিবার, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা শাখার উদ্যোগে বর্বরোচিত নান্যেচর গণহত্যার ৩১তম বার্ষিকীতে শহিদের স্মরণে একটি স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

‘নান্যেচর গণহত্যাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা-সেটেলার কর্তৃক সংঘটিত সকল গণহত্যার বিচার নিশ্চিত কর’ – এই দাবিকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিসিপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ছাত্রনেতা রুমেন চাকমা, বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি, রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সদস্য রিতেশ চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রীমতি এলি চাকমা। স্মরণ সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন পিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা শাখার অর্থ সম্পাদক মিলন চাকমা। স্মরণ সভায় সঞ্চালনা করেন পিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সহসাধারণ সম্পাদক রনেল চাকমা এবং সভাপতিত্ব করেন পিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন চাকমা।

স্মরণ সভায় শুরুতে নান্যেচর গণহত্যাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপত্তা বাহিনী ও সেটলার কর্তৃক সংগঠিত সকল গণহত্যায় নিহত শহিদের স্মরণে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

নিরাপত্তা বাহিনী ও সেটলারদের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে সংগঠিত গণহত্যা ও সাম্প্রদায়িক হামলাগুলো জুম্ম জনগণকে তাদের নিজ ভূমি থেকে উৎখাত ও জাতিগতভাবে বিলুপ্ত করার ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন পিসিপির সাধারণ সম্পাদক রুমেন চাকমা। তিনি অভিযোগ করেন, রাষ্ট্র নিরাপত্তা বাহিনী ও সেটলারদের হামলার প্রশ্রয় দিচ্ছে এবং এ পর্যন্ত কোনো হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার হয়নি। চুক্তি বিরোধী শক্তিগুলোর ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন ও আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠায় তরুণ সমাজকে বৃহত্তর আন্দোলনে সামিল হতে হবে। পাশাপাশি তিনি আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠনের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্মদের উপর সংগঠিত গণহত্যার বিচার এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।

বিশেষ আলোচনায় যুব সমিতির সদস্য রিতেশ চাকমা নান্যচর গণহত্যার ৩১ বছর পরও বিচার না হওয়ার বিষয়টি রাষ্ট্রের ব্যর্থতা ও লজ্জা বলে উল্লেখ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত বা গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানও মেলেনি।

হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙামাটি জেলার সাধারন সম্পাদক এলি চাকমা তার বক্তব্যে নিরাপত্তা বাহিনী ও সেটলার চক্রকে দায়ী করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে গণহত্যা, গুম-খুন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন নিপীড়ন এখনো চলছে, যা জুম্ম জনগণের অধিকার হরণ করছে। তিনি এই সংকট মোকাবিলায় তরুণ সমাজকে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন ও আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে সুমন চাকমা অভিযোগ করেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিগত নিপীড়ন ও জুম্ম অধ্যুষিত অঞ্চলকে মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে রূপান্তরের ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি তরুণ সমাজকে জাতির ভবিষ্যৎ হিসেবে উল্লেখ করে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।

Back to top button