আঞ্চলিক সংবাদউল্লেখযোগ্য

টাঙ্গাইলের মধুপুরে শিশুদের বিদ্যালয়ে গমন ও স্থানীয়দের চলাচলের রাস্তা বেদখলের অভিযোগ

টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়াঞ্চলে কোমলমতি শিশুদের বিদ্যালয়ে গমন ও স্থানীয়দের চলাচলের রাস্তা, বাড়ির উঠান, স্থানীয় গারো আদিবাসীদের আবাদী কৃষি জমি কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে জোরপূর্বক বেদখল করে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে বানিজ্যিক কৃষি উদ্যোক্তা হযরত আলী আকন্দ গং এসকল ভূমি বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য লিজ নিয়েছেন। লিজ নিয়ে হযরত আলী আকন্দ ইতিমধ্যে মধুপুরের কয়েকটি আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম টেলকি, গেৎচুয়া, বেরীবাইদ-উত্তর, মাগন্তিনগর উত্তর, রাজবাড়ী এবং পঁচাচনার শত বছরের চলাচলের রাস্তা, খেলার মাঠ, বাড়ির উঠান, আদিবাসীদের আবাদী কৃষি জমি কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। এতে নিজেদের ভূমি থেকে উচ্ছেদের আশংকা করছেন স্থানীয় অধিবাসীরা।

স্থানীয় আদিবাসীদের ঘরের উঠোন ঘেষে নির্মিত কাঁটা তারের বেড়া

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আদিবাসী অধ্যুষিত এসকল গ্রামের ভূমি জোরপূর্বক দখল ও উচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু হয় ১৯৭৭-৭৮ সালের দিকে। সেসময় রসুলপুর ফায়ারিং এন্ড বোম্বিং রেঞ্জ স্থাপনের নামে নয়াপাড়া গারো আদিবাসী গ্রাম জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়। পরবর্তীতে আদিবাসী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কোন ধরনের আলোচনা ছাড়াই জোরপূর্বকভাবে সর্বমোট ৩২০.৯২ একর ভূমি সামরিক ভূ-সম্পত্তি হিসেবে রেকর্ড করে নেয়া হয়।

স্থানীয় অধিবাসীরা জানিয়েছেন, আদিবাসীদের নিজ ভূমি ও গ্রাম থেকে উচ্ছেদ করার লক্ষেই নামে-বেনামে এসব ভূমি ইজারা প্রদান করা হচ্ছে। টেলকি গ্রামের প্রায় ৩০টি আদিবাসী পরিবার, কোমলমতি  শিশু ও জনসাধারণের দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তা, বাড়ির উঠান, খেলার মাঠ, কিছু আদিবাসী পরিবারের বাড়ির উঠান উন্মুক্ত রাখার জন্য সেখানকার এক অফিসার ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট স্থানীয় অধিবাসীরা অনুরোধ করা সত্বেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায় নি। বরং বলা স্থানীয়দেরকে বলা হয়েছে, যাদের সমস্যা তারা যেন এখান থেকে অন্যত্র চলে যান। আর যারা স্থাপনা নির্মাণ কাজে বাঁধা দিবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হবে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য স্থানীয় অধিবাসী এবং আদিবাসী অধিকারকর্মী টনি চিরান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “স্থানীয়রা একটি বাহিনীর হুমকি, জোরপূর্বক দখল ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে পারছেনা।” রাষ্ট্রীয় একটি নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি ইঙ্গিত রেখে তিনি প্রশ্ন রাখেন, “রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তায় নিয়োজিত একটি বাহিনী কাজ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা নাকি বানিজ্যিক কোন গ্রুপকে জমি লিজ প্রদান দিয়ে অর্থ উপার্জন করা? কোমলমতি শিশুদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তা, সাধারণ জনগনের দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তা, বাড়ির উঠান, খেলার মাঠ কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা কি রাষ্ট্রের কোন বাহিনীর দায়িত্ব ও কর্তব্য?”

Back to top button