ছাত্রদল কর্মী কর্তৃক জাতিগত বিদ্বেষের শিকার আরইউডিএফ সাবেক প্রধান নির্বাহী সদস্য অনাবিল চাকমা
আজ ১৩ নভেম্বর, বুধবার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং ফোরামের প্রধান নির্বাহী সদস্য আকিব হোসেনের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং ফোরাম।
বিবৃতিতে বলা হয় গতকাল ১২ নভেম্বর, মঙ্গলবার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং ফোরাম (আর.ইউ.ডি.এফ)-এর সাবেক প্রধান নির্বাহী সদস্য অনাবিল চাকমা রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের কিছু কর্মীদের দ্বারা শারীরিক ও মানসিক হেনস্তার শিকার হন, যেখানে তাকে আটক করে রেখে বিপুল পরিমাণ অর্থ দাবি করা হয়। ছাত্ররাজনীতির সাথে সম্পূর্ণ অসম্পৃক্ত অনাবিল চাকমার একমাত্র অপরাধ ছিলো বিগত একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতার টি-শার্ট পরা, যেখানে কামারুজ্জামানের ছোট একটি ছবি ছিলো।
উক্ত বিবৃতিতে বিস্তারিত ঘটনাপ্রবাহ উল্লেখ করে বলা হয়:
রাণীবাজার মোড়ে ক্যালিস্টো রেস্টুরেন্টে অবস্থানরত অবস্থায় ৫০-৬০ জন ছাত্রদল-যুবদল কর্মী অনাবিল চাকমাকে জিম্মি ও হেনস্তা করে। তিনি আরইউডিএফের বিগত একটি জাতীয় টুর্নামেন্টে তৈরি টি-শার্ট পরিহিত ছিলেন, যাতে জাতীয় চার নেতার অন্যতম কামারুজ্জামানের ছোট একটি ছবি থাকাকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাকে প্রথমে একটি আন্ডার কন্সট্রাকশন বিল্ডিং এবং পরে শিরোইল স্কুল মাঠে জিম্মি করে রাখা হয়। জনসম্মুখে তার গায়ের টি-শার্ট ছিঁড়ে শারীরিক লাঞ্চনা করা হয় এবং তিনি জাতিগত বিদ্বেষেরও শিকার হোন। শারীরিক আঘাত এবং হত্যার বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়া হয়। মুক্তিপণ হিসেবে ৫ লক্ষ টাকা দাবী করা হয়। ওয়ালেটে থাকা প্রায় ৪ হাজার টাকার পুরোটাই নিয়ে নেওয়া হয়। জোর করে ফোন এবং বিকাশের পাসওয়ার্ড নিয়ে নেওয়া হয়। সন্ত্রাসীরা ফোনের ব্যক্তিগত ছবি ঘাঁটতে থাকে এবংতার একান্ত ব্যক্তিগত ছবি নিজেদের কাছে ছবি তুলে রেকর্ড আকারে রেখে দেয়। পরবর্তীতে যাতে প্রতিবাদ করতে না পারে, এইজন্য চাপের মুখে ভিডিও ধারণ করা হয় এবং ছিঁড়া টি-শার্ট নিজেদের কাছে রেখে দেয়। জাতিগত পরিচয় নিয়ে বিভিন্ন ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য করা হয়।
বিবৃতিতে আরো যুক্ত করে বলা হয়, পুরো সময়ে যারা জড়িত ছিলো তাদের মধ্যে অন্যতম লিমন, সৈকত, সুইট এবং অন্যান্যরা। আর.ইউ.ডি.এফ-এর এই প্রতিবাদ কেবল অনাবিল চাকমার জন্যে নয় বরং বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশের অন্যতম শহর রাজশাহী-কে সুরক্ষিত করার জন্য। আর.ইউ.ডি.এফ উক্ত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানায় এবং জড়িতদের আইনের আওতায় আনার মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করার জোর দাবী জানাচ্ছে। সেইসাথে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিতর্ক অঙ্গনের সকল অরাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে উক্ত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে বলে বিবৃতি প্রকাশ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং ফোরাম।