আন্তর্জাতিক

গণভোটে ৯৬ শতাংশের বেশি রাশিয়ার সঙ্গে যোগ দেওয়ার পক্ষে

রুশ নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের ৪টি অঞ্চলে প্রথম আংশিক গণভোটের শেষে, ৯৬ শতাংশের বেশী ভোটে রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার পক্ষে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া গেছে । তবে, কিয়েভ ও পশ্চিমারা এই গণভোটকে ছলচাতুরি হিসেবে দাবি করে নিন্দা জানিয়েছে।

 

দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া এবং খেরসন- এই ৪টি অঞ্চলে ৫ দিন ধরে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা ইউক্রেনের প্রায় ১৫ শতাংশ এলাকা। খবর রয়টার্সের

ইউক্রেনের যেকোনো পরিবর্তন প্রত্যাখ্যান করার জন্য জাতিসংঘে একটি প্রস্তাবের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেনের ভূখণ্ড সংযুক্ত করলে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তুতি নেয়া হবে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সেই সাথে ইউক্রেনের জন্য ১.১  বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র সহায়তা শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে বলে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পূর্বাঞ্চলের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক এবং দক্ষিণাঞ্চলের জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসনে তড়িঘড়ি করে গণভোটের আয়োজন করে রাশিয়া। এই অঞ্চলগুলো ইউক্রেনের সমস্ত ভূখণ্ডের প্রায় ১৫ শতাংশ নিয়ে গঠিত।

লুহানস্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে এ অঞ্চলে ভোট পড়েছে ৯৮.৪ শতাংশ। জাপোরিজ্জিয়ায় নিয়োজিত রুশ প্রশাসন জানিয়েছে, ওই অঞ্চলের ৯৩.১ শতাংশ ভোটার রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন।

অন্যদিকে, খেরসনের ভোট গ্রহণ কমিটির প্রধান বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে সেখানে ‘হ্যাঁ’ ভোট পড়েছে প্রায় ৮৭ শতাংশ। স্বঘোষিত দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের প্রধান ডেনিস পুশিলিন বলেছেন, এই অঞ্চলের ৯৯.২ শতাংশ ভোটার রাশিয়ায় যোগ দেওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চার অঞ্চলের বাস্তুচ্যুত মানুষ রাশিয়ার আয়োজিত গণভোটে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ জানিয়েছে, প্রাথমিক গণনার ভিত্তিতে ৯৬ শতাংশেরও বেশি ভোটার রাশিয়ার শাসনাধীনে যাওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন।

ইউক্রেন ও পশ্চিমাদের দাবী, এই ৪টি অঞ্চল দখলে এটি রাশিয়ার একটি আইনি অজুহাত তৈরির অবৈধ, দমনমূলক প্রক্রিয়া। যাতে এই ৪টি অঞ্চলে পুনরায় দখলে ইউক্রেনের যে কোনো প্রচেষ্টাকে রাশিয়ার ওপর আক্রমণ হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। 

ইউক্রেন দাবি করেছে, অনেক ক্ষেত্রে বন্দুকের ভয় দেখিয়ে ভোট দিতে বাধ্য করা হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, ভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে এই অঞ্চলগুলোকে শীঘ্রই রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার ঘোষণা দিতে পারেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পুতিনের এই ঘোষণা আসতে পারে শুক্রবারেই (৩০ সেপ্টেম্বর)। এইদিন পার্লামেন্টে ভাষণ দেবেন রুশ প্রেসিডেন্ট।

 

ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা ভোটের শাস্তি হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে রাশিয়ার ওপর আরও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে, রাশিয়ার এই উদ্যোগ যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের কর্মকাণ্ডে পরিবর্তন আনবে না।

কিয়েভ বারবার সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, রাশিয়ার অতিরিক্ত অঞ্চল দখল করলে তা শান্তি আলোচনার যে কোনো সুযোগ নষ্ট করে দেবে। এতে বলা হয়েছে, যেসব ইউক্রেনীয়রা রাশিয়াকে ভোট আয়োজনে সহায়তা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হবে।

পুতিন মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, জাতিগত রাশিয়ান ও রুশভাষীদের রক্ষা করতে এই ভোট। যা যা কিয়েভ অস্বীকার করেছে।

তিনি বলেন, ‘যেসব অঞ্চলে এই গণভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেখানকার মানুষকে বাঁচানো আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও আমাদের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে।’

Back to top button