খাদ্য সংকটে আছে বিলাইছড়ির বিভিন্ন গ্রাম
লালটান পাংখোয়া; বিলাইছড়ি থেকে: দীর্ঘ দেড় মাসের অধিক চলমান লকডাউনে রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে খাদ্য সংকট দেখা দিচ্ছে । লকডাউন হওয়াতে বাজারে বেঁচা- কেনা নেই পাহাড়ে জুমচাষ উপর নির্ভশীল সাধারণ মানুষদের। শতশত বাগান জুড়ে কলা-পেপে বিক্রি হচ্ছে না বাজারে। আর এগুলো পঁচে পাখি-কাঠবিড়ালিদের খাবারে পরিণত হচ্ছে।
এমন কথা আইপিনিউজকে জানান বিলাইছড়ি উপজেলায় ফারুয়া ইউনিয়নে ছসিড়ি পাড়া বাসিন্দা কালাধন চাকমা।
তিনি আরো বলেন- এই গ্রামে ১৪টি পরিবারের বসবাস তার মধ্যে ৪টি পরিবার খুব অসচ্ছলতায় দিন পার করছে। গ্রামে সবাই মিলে যতটুকু পারছি চাল দিয়ে সাহায়তা করছি। আর আমরা কয়দিন পারবো আমাদের অবস্থাও দিন দিন খারাপ দিকে যাচ্ছে। বাজারে চালের দাম ইদানীং বেড়েই যাচ্ছে। আমাদের কলা-পেপে,শাকসবজি তো বিক্রি হয়না টাকা পয়সা কোথায় থেকে আসবে। বাজার তো বসে না। গত একদশক ধরে পাহাড়ে শিম বিচি চাষে প্রবণতা বাড়ছে। বিগত বছরগুলোতে শিম বিচি প্রতি মণ ৪০০০-৪২০০টাকা করে বিক্রি হলেও এখন ১৯০০-২৩০০টাকা করে বিক্রি হচ্ছে । লকডাউন হওয়াতে কখনো কখনো ব্যবসায়িকদের দেখা মিলে না।
বিলাইছড়ি ইউনিয়নে পাংখোয়া পাড়ার বাসিন্দা সাপকুং পাংখোয়া এমন পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে বলেন, এবছর প্রায় ৩০মণ মতো লাভবান হয়েছি কিন্তু দুর্ভাগ্য এখনো বিক্রি করতে পারিনি। আর গুটিকয়েক ব্যবসায়িক খুব অল্প দামে দর কষাকষি করলে আমি তা দিতে রাজি নই।
এইদিকে তনুকছড়ি মারমা গ্রামে প্রায় ২০টি পরিবারের মতো বসবাস। তাদের প্রধান আয় নদীর মাছের উপর। কিন্তু মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় তাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। উক্ত গ্রামের বাসিন্দা থুইবাই মারমা। তিনি জানান-দুয়েকবছর আগে জুমে কাজ করতে গিয়ে হাত ভেঙে গেছে এখন আর ঠিক মতো কাজ করতে পারিনা। তাছাড়া দিন দিন জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির সাথে আমাদের আয় মিলছে না তাই জীবনটা কঠোর হতে যাচ্ছে।
বিলাইছড়ি উপজেলায় ফারুয়া ইউনিয়ন লতা পাহাড় গ্রামে ৩১টি পরিবারের বসবাস। তার মধ্যে ১৪টি পরিবার খাবারে সংকটে দিন কাটছে। গ্রামটি পাহাড়ের চূড়ায় হওয়ায় সবাই জুম চাষের উপর নির্ভরশীল। জুম চাষ পদ্ধতিতে এখন ধান রোপণ মৌসুম। তাই সবাই স্বাভাবিক পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে আছে। এই দিকে একই ইউনিয়নের নোয়া পাড়ায় ২৫টি চাকমা পরিবারের বসবাস। সবখানে লকডাউন হওয়াতে চিন্তায় দিন পার করছে সবাই।