খাগড়াছড়ি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত
আজ শনিবার খাগড়াছড়ি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাদের স্মরণ করে তিনি বলেন, তাঁরা সেদিন এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বলেই এ বিদ্যাপীঠ থেকে অনেক আলোকিত মুখ আজ দেশে-বিদেশে আলো ছড়াচ্ছে। এক বছরের লক্ষ্যমাত্রা রেখে একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরী করে প্রথম ধাপে চার তলা বিল্ডিং নির্মাণের ঘোষণা দেন মন্ত্রী। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটিতে ল্যাবরেটরী, মাল্টিমিডিয়া সহ সকল কার্যক্রম চালুকরণে প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে বলে ঘোষণা দেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম সরকারের দৃষ্টির আড়ালে নয় বরং দৃষ্টির সীমানাতেই আছে। সরকারের অভিধানে পশ্চাদপদ বলতে কোন শব্দ নেই। সরকারের শিক্ষা নীতিতে পাহাড় সবার আগে অগ্রাধিকার পায় বলেও তিনি দাবী করেন।
পুনর্মিলনী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. সুধীন কুমার চাকমা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো: রাশেদুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি সদর জোন অধিনায়ক লে: কর্ণেল জি এম সোহাগ, পুলিশ সুপার মো: আলী আহমেদ খান এবং প্রবীন শিক্ষাবিদ অনন্ত বিহারী খীসা।
বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ও খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র মো: রফিকুল আলম এবং খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পুনর্মিলনী উদযাপন কমিটির সচিব শ্রীলা তালুকদার প্রমুখ পুনর্মিলনী উৎসবে বক্তব্য রাখেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তির মাধ্যমে পাহড়ের দু’দশকের বেশি সময় রক্তক্ষয়ী সমস্যার সমাধান এনেছেন। যা বিশ্বনন্দিত একটি মহৎ কাজ। শুধু তাই নয়, শান্তিচুক্তির পর পরই পাহাড়ের স¤প্রীতি ও শান্তি সহাবস্থান অটুটু রাখতে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে পাহাড়ের আধুনিক শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়েছে। ইতোমধ্যে রাঙামাটিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। রাঙামাটিতে মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। দেশের ১৯ হাজার নতুনভাবে শিক্ষার প্রসারে চারতলা বিল্ডিং নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার।
খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে একটি অডিটোরিয়াম নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন, পাহাড়ে অবারিত উন্নয়ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে পাহাড়ের দৃশ্যপট বদলে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘খাগড়াছড়ি বদলে গেছে, যা দেখি নতুন লাগে’।
খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য ও টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে তিন পার্বত্য জেলার মতো খাগড়াছড়িতেও সব সেক্টরে বিপুল অগ্রগতি হয়েছে। এই উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের অগ্রণী ভূমিকার বিকল্প নেই।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেন শিক্ষামন্ত্রী মো: নুরুল ইসলাম নাহিদ। এসময় খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পুনর্মিলনী উদযাপন কমিটির সচিব শ্রীলা তালুকদার তাকে স্বাগত জানান। এসময় তিনি উৎসবে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন ও সেলফি তোলেন। বিদ্যালয়ের পুনর্মিলনী উপলক্ষে বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠ থেকে শোভাযাত্রা বের করে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করা হয়।
উল্লেখ্য, পাহাড়ের ব্যতিক্রমী এ যাবতকালের সবচেয়ে বৃহৎ এ উৎসবকে ঘিরে ‘উৎসবের রঙে রঙিন খাগড়াছড়ি’। পাহাড়ের প্রাচীন এ বিদ্যাপীঠের প্রথম পুনর্মিলনী উৎসবের মাধ্যমে সম্প্রীতির মেলবন্ধন সৃষ্টি হয়েছে। এ উৎসব পাহাড়ে সম্প্রীতির নতুন ডানা মেলবে বলে মন্তব্য উৎসবে অংশগ্রহণকারী আলোকিতদের।