ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নেটওয়ার্ক, প্লাটফর্ম ও সংশ্লিষ্ট ষ্টেকহোল্ডারদের ভুমিকা শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত
আজ সোমবার রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ কনফারেন্স হলে ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নেটওয়ার্ক, প্লাটফর্ম ও সংশ্লিষ্ট ষ্টেকহোল্ডারদের ভূমিকা শীর্ষক একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সাংবাদিক সীমান্ত সিরাজ এর সঞ্চালনায় এবং গ্রাম বিকাশ সহায়ক সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মাসুদা ফারুক রত্নার সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন দৈনিক সময় বায়ান্ন পত্রিকার সম্পাদক শম্ভু সরকার ,শীল্ড এর নির্বাহী পরিচালক মাহবুব আলম ফিরোজ, কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনাল এর প্রোগ্রাম স্পেশালিষ্ট মেহেদী হাসান, বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরামের সভাপতি আন্তনী রেমা,মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্রের মহাসচিব মাহবুল হক,বাংলাদেশ দলিত নারী ফোরাম এর সাধারণ সম্পাদক তামান্না সিং বাড়াইক,নগর বস্তি উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হান্নান শাহ,বাংলাদেশ নদী বাচাও আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বশীর উদ্দিন,বারসিক প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফেরদৌস আহমেদ,কাজীর বাগ পঞ্চায়েত সভাপতি সুজন দাস প্রমুখ।
বক্তারা বলেন প্রায় তিন কোটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে অন্যতম ঋষি সম্প্রদায়। সাধারত নিম্নবর্ণের এবং চামড়া জাত কাজের/শিল্পের (বিশেষ করে পাদুকা শিল্পের) সাথে জড়িত ঋষি সম্প্রদায় ঢাকা শহর ও এর আশেপাশে ২৬টি ক্লাস্টার বা পাড়ায় প্রায় দুই লাখ ঋষি সম্প্রদায়ের অত্যন্ত অমানবিক অবস্থায় বসবাস করছে। জাতিগত এই সংখ্যালঘু ঋষিদের সমাজে “অস্পৃশ্য” সম্প্রদায় হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তারা স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং ন্যায় বিচারের পাশাপাশি অন্যান্য সাংবিধানিক অধিকারসহ বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত, জীবিকা অনিশ্চিত, সামাজিক পরিচয় ও কম মর্যাদা এবং শিক্ষা, অর্থনৈতিক সুযোগ বা ন্যায় বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রেও প্রবেশাধিকার খুব কম। এই সম্প্রদায়ের মানুষগুলো সামাজিক, মানবিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক সুবিধাপ্রাপ্তি থেকে পিছিয়ে আছে। এই গোষ্ঠীগুলি অবহেলা, বৈষম্য, সামাজিক প্রতিবন্ধকতাসহ নানা ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত। অথচ এসডিজি’র এজেন্ডা হচ্ছে “কাউকে বাদ দিয়ে নয়” তাই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুনির্দিষ্ট প্রতিবন্ধকতা দূর না করা পর্যন্ত বাংলাদেশের পক্ষে এসডিজি’র লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব নয় ।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাংবিধানিক ধারা মোতাবেক রাষ্ট্রের সকল জনগোষ্ঠীর মানুষ তাদের মৌলিক/ মানবিক সুযোগ সুবিধা পাওয়ার অধিকার রাখার কথা উল্লেখ থাকলেও স্বল্প শিক্ষার হার এবং মানবিক, মানসিক ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতার কারণে ঋষি সম্প্রদায় তাদের মৌলিক ও মানবিক অধিকার প্রাপ্তি থেকে উপেক্ষিত এবং অধিকাংশের কাছে তারা ঘৃণার পাত্র হিসেবে পরিগণিত। তাই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সাংবিধানিক অধিকার এবং সরকারি সেবায় প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য দলীয় নির্বাচনী ইশতেহার ও অঙ্গীকারে অন্তর্ভুক্তির জন্য ঋষি সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন নেটওয়ার্ক, প্লাটফর্ম ও সংশ্লিষ্ট ষ্টেকহোল্ডারদের আহবান জানান ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গঠিত অ্যাডভোকেসী ফোরাম। জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আত্মকর্মসংস্থান প্রভৃতি বিষয়ে ঋষি সম্প্রদায়ের জন্য বিশেষ বরাদ্দ প্রণয়ন করা,নিরাপদ পরিবেশে বসবাসের (পানি, স্যানিটেশন, ইউটিলিটি পরিষেবা ইত্যাদি) ব্যবস্থা করা, প্রান্তিক জনগোষ্টির ছেলেমেয়েদের জন্য উচ্চ শিক্ষায় কোটা বৃদ্ধি করার সুপারিশ করেন তারা।
ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার উন্নয়ন প্রকল্প এর আওতায় গ্রাম বিকাশ সহায়ক সংস্থা (জিবিএসএস) ইউএসএআইডি’র অর্থায়নে কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনাল এর কারিগরী সহায়তায় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।


