জাতীয়

উক্যনু মারমাকে অন্যায়ভাবে তুলে নেওয়ার প্রতিবাদ পিসিপি ও এইচডাব্লিউএফের

একইসাথে পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছে পিসিপি ও এইচডাব্লিউএফ

আইপিনিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিল (বিএমএসসি), খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক উক্যনু মারমাকে সেনাবাহিনী কর্তৃক অন্যায়ভাবে আটকের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে বিনাশর্তে ও সুস্থ শরীরে ছেড়ে দেওয়ার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডাব্লিউএফ) এক বিবৃতির মাধ্যমে জোর দাবি জানিয়েছে । একইসাথে পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছে।

বিবৃতিতে পিসিপি জানায় আজ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রাত আনুমানিক ৮:২০ ঘটিকার দিকে উক্যনু মারমাকে খাগড়াছড়ি সদরস্থ মধুপুর বাজারের এক মুন্ডি দোকান থেকে বন্ধুবান্ধবের সামনে থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায় সেনাবাহিনীর সশস্ত্র সদস্যরা। এসময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দুই টি গাড়ি ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীর সূত্রে জানা গেছে। তবে তুলে নিয়ে গিয়ে তাকে কোথায়, কিভাবে রাখা হয়েছে সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কিছুই জানা যায়নি।

উল্লেখ্য গত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে খাগড়াছড়ি সদরে ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক জুম্ম ছাত্রীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ ও ধর্ষণের ঘটনায় জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকে তিনদিনের ধর্ষণবিরোধী কর্মসূচি চলমান রয়েছে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে প্রতিবাদ সমাবেশ অব্যাহত রয়েছে।


পিসিপি বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক জুম্মদের ওপর ধরপাকড়, হামলা, গুম ও মিথ্যা মামলার মত ঘটনা নতুন নয়। পিসিপি ও এইচডাব্লিউএফ মনে করে, জুম্মদের জাতীয় অস্তিত্ব বিলুপ্তির জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামে শাসকগোষ্ঠী নিত্যনতুন ষড়যন্ত্র করে বেড়াচ্ছে। তারই একটি অংশ হচ্ছে, জুম্মদের অধিকার আদায়ের সম্মুখ সারিতে থাকা তরুণ ও যুবদের অন্যায়ভাবে আটক ও মিথ্যা মামলার মতো ঘটনাসমূহ।

পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘসময়ে রাজনৈতিক সমস্যাকে স্থায়ী ও রাজনৈতিক উপায়ে সমাধানের লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি মোতাবেক পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহারের কথা থাকলেও সরকার অস্থায়ী ক্যাম্পসমূহ প্রত্যাহার তো দূরের কথা, উপর্যুপরি ২০০১ সাল থেকে ‘অপারেশন উত্তরণ’ নামে সেনাশাসন জারি করে। তাই পিসিপি ও এইচডাব্লিউএফ পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার স্থায়ী ও রাজনৈতিক সমাধানের জন্য অতিদ্রুত অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহারপূর্বক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছে এবং উক্যনু মারমাকে অবিলম্বে বিনাশর্তে ও সুস্থ শরীরে ছেড়ে দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন।

তবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন স্তরে ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে সেনাবাহিনী উক্যনু মারমাকে ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

 

Back to top button