আঞ্চলিক সংবাদ

আদিবাসী শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদ ও শাস্তির দাবিতে পিসিপি ও এইচডাব্লিউএফ এর যৌথ বিবৃতি

শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলায় দ্বিতীয় শ্রেণী পড়ুয়া এক আদিবাসী শিশুকে ধর্ষণের প্রতিবাদে এবং ধর্ষক ফাহিম এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও হিল উইমেন ফিডারেশন (এইচডাব্লিউএফ) এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অন্বেষ চাকমা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি এই বিবৃতি প্রদান করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৮ মে ২০২৪ দুপুরে শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলায় সীমান্তবর্তী এক গ্রামে দ্বিতীয় শ্রেণীর এক আদিবাসী শিশু বাড়ির পাশে লাকড়ি সংগ্রহের সময় ফাহিম(১৪) নামে স্থানীয় এক বখাটে কর্তৃক জোরপূর্বক ধর্ষণের শিকার হয়। এই ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডাব্লিউএফ) তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।

 

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত মঙ্গলবার(২৮ মে) দুপুরে শিশুটি নিজ বাড়ির পাশে লাকড়ি সংগ্রহের সময় ফাহিম নামে এক বখাটে নানা প্রলোভন দেখিয়ে এলাকার গভীর জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে শিশুটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষক একই উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের হালচাটি গ্রামের এরশাদ আলীর ছেলে। ভুক্তভোগী শিশুটি বাড়িতে গিয়ে তার দাদীকে বিষয়টি বলার পর শিশুটির দাদী থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এসআই তনু নন্দন রুরামকে ঘটনাস্থলে পাঠায়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ধর্ষক ফাহিম পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ কৌশলে ফাহিমকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণসহ আলামত সংগ্রহ করে। শিশুটির বাবা-মা সেসময় ঢাকায় অবস্থান করায় তার দাদী বাদী হয়ে ঝিনাইগাতি থানায় ধর্ষণ মামলায় একটি এজাহার দায়ের করেন। আরো জানা গেছে যে, ভুক্তভোগীর পরিবারকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য অভিযুক্তের পরিবার থেকে ক্রমাগত হুমকি দেয়া হচ্ছে।

বিবৃতিতে পিসিপি এবং এইচডব্লিউ এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পাহাড় ও সমতলে প্রতিনিয়ত আদিবাসী নারী ও শিশুদের ওপর ধর্ষণ, নিপীড়ন, অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। অধিকাংশ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা শাস্তির আওতায় আসছে না। পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন মনে করে, এ বিষয়ে প্রশাসনের নির্লিপ্ততা ও কার্যকরী ভূমিকা না থাকার কারণে অপরাধীরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। দেশের বিচারহীনতার সংস্কৃতির ফলে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে যার ফলে আদিবাসী নারী ও শিশুর নিরাপত্তা দিনদিন সংকুচিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, চিহ্নিত অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন যথাযথ আইনী প্রক্রিয়া প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হচ্ছে বলেও পিসিপি ও এইচডাব্লিউএফ মনে করে।

বিবৃতিতে উক্ত আদিবাসী শিশু ধর্ষণ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত ধর্ষক ফাহিমের বিরুদ্ধে যথাযথ ও দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিতসহ আদিবাসী নারী ও শিশুর ওপর ক্রমবর্ধমান ধর্ষণ, নিপীড়ন, অপহরণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানিয়েছে।

Back to top button