মতামত ও বিশ্লেষণ

আদিবাসী কে? ফারহা তানজীম তিতিল

মানবজাতির আদি মাতা-পিতা কেউই আর বেঁচে নেই। তারা ষাট হাজার বছর বা তার অনেক আগেই পূর্ব আফ্রিকা থেকে হাঁটতে শুরু করেছিলেন নানাদিকে। ষাট হাজার বছর আগেই ভারতবর্ষে মানবজাতির অস্তিত্ব ছিল। সুন্দরবনের বাঁশফোড়দের দেহে এই আদি মানুষের চিহ্ন আছে বলে মনে করা হয়। কুড়ি হাজার বছর আগের অস্ট্রালয়েড বা অস্ট্রিক মানুষ ছিল বাঙলার নাগপুর থেকে ত্রিপুরা বা হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকার নানা জায়গাতে। পনেরো হাজার বছর আগে দ্রাবিড় ভাষাভাষী মানুষেরা আসে এ অঞ্চলে। সুবর্ণরঙের মঙ্গোলয়েডরাও কাছাকাছি সময় আসে। আর্যরা এলো আড়াই হাজার বছর আগে। এসে মুছে দিতে চাইল আগের চিহ্ন। নিজেদেরকে উঁচু এবং অন্যদেরকে নিচু ভাবত তারা। মুসলমান এবং ইউরোপীয়দের আসার বিষয়ে আমরা স্কুলেই পড়েছি। এভাবে অনেক ‘চন্দ্রভূক অমাবস্যা’ কেটে গেল, নানা রাজ্যের উত্থান পতন হলো, সভ্যতার ওপরে পড়ল ধুলার পরত— তো আদিবাসী মানুষ কি আর আছে? কে-ই বা আসল আদিবাসী? কে খন্ডিত বাংলার প্রকৃত আদিবাসী? বাঙালি কি আদিবাসী? বাঙালি তো এই আদিবাসীদের মিশ্র রক্ত। যারা মিশেছে, তারা সংকর। যারা মেশেনি, তারা আদিবাসের রীতিতে বিরাজিত। তারা আদিবাসী।

আদিবাসী সেই, যে আদিবাসের রীতি জানে এবং মানে। এই রীতিটা হলো বনের সঙ্গে, নদীর সঙ্গে, পাহাড়ের সঙ্গে থাকার জ্ঞান বা অভ্যাস। পাহাড় আপনার খাবার দেবে, বসবাসের জায়গা দেবে, কিন্তু আপনি পাহাড় কেটে সমতল ভূমি বানাবেন না। বনকে আপনার মনমতো বাগান বানাতে যাবেন না, যেমন করা হচ্ছে—শালবনে, পার্বত্যবনে বা সুন্দরবনে। নদীর মৃত্যু হয়, নদী মরে যায়, গতিপথ বদলায়, জনপদ নিশ্চিহ্ন করে দেয়— এই সবই প্রকৃতির নিয়মে হতে পারে। তাই বলে আপনি-আমি নদীর মৃত্যুর কারণ হতে পারি না। নদীর কান্না শোনার মতো সংবেদনশীলতা থাকে আদিবাসের জীবনে। নৃবিজ্ঞানীরা হয়তো আদিবাসী বিষয়ে এই সংজ্ঞা মানবেন না। রাজনীতিকেরা দরকার মতো সংজ্ঞা বদলে নেবেন। কিন্ত, সহজে বোঝার জন্য এমন করে বলছি।

ফারহা তানজিম তিথিল।

শিক্ষকতুল্য আমার এক সহকর্মী আমাকে বললেন, ‘উপজাতি অঞ্চলে নিয়ে চলো’। আমি তাঁকে বললাম, ‘উপজাতি মানে কি উপনদীর মতো কিছু? কোন জাতির উপজাতি কে? কোনো জাতি কি অন্য কোনো জাতির উপ হয়?’ বাংলাদেশের আদিবাসীরা ‘উপজাতি’ শব্দটি পছন্দ করছিলেন না, এখন আমরা ওই শব্দ বিতাড়নের নামে ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ জাতীয় যে সব শব্দ ব্যবহার করছি সেগুলো আদিবাসীদের জন্য আরো বেশি বেদনাদায়ক হয়েছে।

নৃতত্ত্ববিদ প্রশান্ত ত্রিপুরার লেখায় আদিবাসী শব্দটির প্রচলন নিয়ে একটি ধারাবাহিক ইতিহাস পাওয়া যায়। ব্রিটিশরা ‘আদিবাসী’ এবং ‘উপজাতি’ শব্দ দুটিকে প্রায় সমার্থক বলে ধরে নিয়েছিল। তারা আদিবাসীদের পরিচয় কিছু বিশেষ প্রত্যয়ে আটকে দিয়েছিল, যার একটি আদি নয় ‘আদিম’ অর্থ বোঝায়। প্রশান্ত ত্রিপুরা তাঁর ‘বহুজাতির বাংলাদেশ : স্বরূপ অন্বেষণ ও অস্বীকৃতির ইতিহাস’ বইয়ের ‘অস্তিত্বের জমিন যখন লুটেরাদের দখলে’ শীর্ষক প্রবন্ধে লিখেছেন, ”উপজাতীয়রা ‘আদিবাসী’ কি না, প্রশ্নটি প্রথম জনসমক্ষে আসে মূলত ১৯৯৩ সালে। জাতিসংঘ ‘আন্তর্জাতিক আদিবাসী বর্ষ’, ঘোষণা করার প্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল, ‘এদেশের উপজাতীয়রা আসলে বহিরাগত, কাজেই বর্ষটি সরকারিভাবে পালনের কোনো প্রয়োজন নেই’। যাহোক, জাতিসংঘ-ঘোষিত বর্ষের সূত্রেই ‘ইনডিজেনাস পিপল’-এর প্রতিশব্দ হিসেবে ‘আদিবাসী’ শব্দের ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয় এদেশে।” আদিবাসী শব্দকে ‘আদিম’ বোঝানোর ইংরেজ আমলের রীতির ফল হয়েছিল, আদিবাসীরা ক্রমাগত নিজেদেরকে আড়াল করে নিয়েছিলেন। আজও তাই বাংলাদেশের সমতলে বসবাসকারী অবাঙালি মানুষদের জাতিসত্তা খুঁজে পাওয়া কঠিন।

বাংলাদেশের যে আদিবাসীরা এখন সাংবাধিনিকভাবে দেওয়া ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীজাতীয় নামগুলো প্রত্যাখান করছে, তখন তারাও আদিবাসী শব্দটি গ্রহণে দ্বিধান্বিত ছিলেন। কেন শব্দটি এমন ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেল এবং আবার কেনই বা এখন বাতিলের পাঁয়তারা চলছে? প্রশান্ত ত্রিপুরা একই প্রবন্ধে লিখেছেন, ”শেষ পর্যন্ত তাদের অনেকেই এই সিদ্ধান্তে আসে যে, আদিবাসী শব্দটির নেতিবাচক ব্যঞ্জনা থাকলেও এ নামে অভিহিত মানুষেরা নিজেরাই যদি এ পরিচয়কে সগৌরবে ধারণ করেন এবং ‘ইনডিজেনাস’-এর প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহার করেন, তবে তা তাদের দাবি আদায়ে সহায়ক হতে পারে। এই প্রেক্ষিতে শুরুতে বাংলা ‘আদিবাসী’ শব্দটা নিয়ে ক্ষমতাসীন মহলে তেমন মাথাব্যথা ছিল না। কিন্তু কীভাবে যেন সম্প্রতি সেখানে এটিকে বিপজ্জনক, ‘রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতার জন্য হুমকি’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে।”

আমরা যদি বসতি স্থাপনের ইতিহাস ধরে জানতে চাই বাংলার আদিবাসী কারা, তাহলেও এটা নিশ্চিত যে এই অঞ্চলের আদিবাসী বাঙালি নয়। জাতি হিসেবে বাঙালির ইতিহাস নেহায়েত কম দিনের নয়, তবে তারও আগে অনেক জাতি বর্তমানকালের বাংলাদেশে বাস করত। এবং ১৯৪৭ সালের আগে বাংলাদেশের বর্তমান মানচিত্র তৈরিই হয়নি। বাঙালি একটি সংকর জাতি এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বসবাসকারী আদিতম মানবগোষ্ঠীগুলোর মিলিত ফল। নৃতত্ত্ববিদরা মানুষকে অনেকগুলো গোষ্ঠীতে ভাগ করলেও বিশুদ্ধ কোনো জাতিগোষ্ঠী নেই বলেই মনে করেন। ফলে বাঙালিকে সংকর বলে উপেক্ষা করবার কোনো সুযোগ নেই। অন্তত দেড় হাজার বছর আগে আর্য-অনার্য মিশ্রিত প্রাকৃত ভাষা থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে বাংলা ভাষার জন্ম হয়েছে এবং ব্রাহ্মী লিপি থেকে সিদ্ধম লিপি হয়ে বাংলা লিপির সৃষ্টি। এর আগে-পরে অস্ট্রিক ও নিগ্রিটো জাতির মানুষসহ বহু জাতির রক্ত এসে মিশেছে বাঙালির সঙ্গে। তাই বাঙালিদের কেউ একটু বেশি লম্বা, কেউ মাঝারি, কেউ আবার বেঁটে। কারও গায়ের রং খুব ফরসা, কেউ শ্যামবর্ণ, কেউ বা কালো। কারও নাক খাড়া, কারও অতটা নয়। মাথার চুল কারও সোজা, কারও অল্প বা বেশি কোঁকড়ানো।

বাঙালির জাতিতাত্ত্বিক ইতিহাসের সঙ্গে আর্য-অনার্যের লড়াই জড়িয়ে আছে। আর্যদের আদিবাস ছিল উত্তর ইরানে, কাস্পিয়ান সাগরের তীরে। আর্যরা এসে দ্রাবিড়দের অধিকার করে নিল। দ্রবিড়রা আরো আগেই এ অঞ্চলের আদি মানুষ অস্ট্রিকদের সঙ্গে শান্তিতেই বসবাস করছিল। এখানে একটি পূর্ণ সভ্যতা গড়ে উঠেছিল, যা আর্যদের রচিত সাহিত্যে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। আজও বাংলার আদি বাসিন্দা যারা এই অঞ্চলের জল-জঙ্গলকে বাসযোগ্য করেছে, যারা ইতিহাস পূর্ব সময় থেকে এঅঞ্চলের উঁচু এলাকাগুলিতে ছিল; তাদের বিষয়ে বিস্তৃত ইতিহাস পাওয়া কঠিন হলেও, সবখানে ছড়িয়ে আছে তাদের অস্তিত্ব। শতচেষ্টাতেও সব চিহ্ন মোছে না। নানা জাতির মানুষ যে সারা বাংলায় ছড়িয়ে আছে, তা ছোটোবেলায় আমাদেরকে জানতে দেওয়া হয়নি, তবুও জানতে পারছি ক্রমশ। এখনো রয়েছে অস্ট্রিক শব্দ ‘কুড়ি’। মান্দি, হাজং, চাকমা, মারমা, কোল, ভীল, মুন্ডা, সাঁওতাল, কড়া, কডা, পাহাড়িয়া, প্রভৃতি জাতিও তো টিকে আছে আজও। এই জাতিগুলো শুধু বাংলার নয়, গোটা ভারতবর্ষের আদি বাসিন্দা।

ভারতে আসার পর আর্যরা ঠিকই বাংলায় প্রবেশ করতে চেয়েছিল। উর্বর ভূমির সন্ধানে খ্রিস্টের জন্মের দুই হাজার বছর আগে উত্তর ভারতে আসে আর্যরা। ভারতবর্ষের সবচেয়ে উর্বর জমির অঞ্চল বাংলাকে আর্যরা দখল করতে চাইবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেকালে বাংলায় বসবাসকারী কোল, ভীল, মুন্ডা, সাঁওতাল প্রভৃতি জাতির লড়াকু মানুষগুলো প্রতিরোধ তৈরি করেছে। ফলে অহংকারী আর্যরা বারবার পরাজিত হয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে।

আর্য অহঙ্কার, আর্যদের জাতিগত উদ্ধত্যের কথা নৃতত্ত্ববিদ এ কে এম শাহনাওয়াজের ছোটদের জন্য একটি লেখায় পাওয়া যায়, ‘নিজেদের লেখা বেদ গ্রন্থে তারা অদ্ভুত অদ্ভুত কথা বলেছে। অন্যের দেশ দখল করেছে—এ নিয়ে পরে যদি কথা ওঠে, তাই নিজেদের বাঁচানোর জন্য গল্প ফেঁদেছে। এমনিতে আর্যরা নিজেদের খুব উঁচু জাতের মনে করত। নিজেরাই নিজেদের উচু নাটকে সুন্দর বলেছে তারা। আগুনের পূজা করত তারা। সে যুগে অগ্নি উপাসকদের সেরা জাতের মনে করা হতো। এই নাক উঁচু আর্যরা লিখেছে, ভারত অপবিত্র দেশ। এখানে বর্বর মানুষেরা বাস করে। আর্যরা অমন দেশে থাকতে পারে না। তবে তাদের একটি সুবিধা ছিল। বিদেঘ নামে একজন মুনি বা পুরোহিত ছিলেন। তাঁর এক অদ্ভুত ক্ষমতা ছিল। বিদেঘের মুখ দিয়ে আগুন বের হতো। তিনি হেঁটে যেতেন আর মুখের আগুনে চারপাশ পুড়িয়ে খাঁটি করা হতো। আর সেই পবিত্র মাটিতে বসত করেছিল আর্যরা।’ নিজেদেরকে ওপরে তোলার চেষ্টার সঙ্গেই ওতোপ্রতোভাবে এসেছে অপরকে নিচু করার চেষ্টা। সেই চেষ্টার শেষ হয়নি আজও। বাংলার আদি বাসিন্দাদের তুলনায় নবীন হলেও আমরা বাঙালিরা বোধ হয় আর্যদের জাত্যাভিমানে আক্রান্ত হচ্ছি। বাঙালির রক্তে অস্ট্রিক-দ্রাবিড়-মঙ্গোলীয়-আর্য মিশ্রণ হবার কথা। এই মিশ্রণ প্রক্রিয়াতে মুসলিম রক্ত মিশে গেল ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির আগমনের পরে ব্যপকভাবে।

আজকের দিনে বাংলাদেশে বাঙালি মুসলমানের সংখ্যা বেশি। বৃটিশ আমলে ঝাড়খণ্ড ও তার আশেপাশের এলাকা থেকে যাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে বাংলায় আনা হয়েছিল তারা নিজেদের ভাষা এবং ভাব ভালোভাবে রক্ষা করতে পারেনি বোধহয়। সমতলের কিছু জাতিসত্তার মানুষের অবস্থা বলছি, যারা সংখ্যায়ও খুব কম। কিন্তু অনেকেই তো ছিল এখানে—সমতলে এবং পাহাড়ে। বাংলাদেশ জন্মের পরপর গারো পাহাড় জোড়া দুই শতাংশ বাঙালি আজ একান্ন শতাংশ। চম্পকনগরীর সুবর্ণ মানুষের দেশেও তাই হয়েছে। দক্ষিণে রাখাইনরা নিশ্চিহ্ন হচ্ছে। সমতলের আদিবাসীরা প্রদীপের নিচের অন্ধকারে আড়াল থাকেন। পাশে থেকেও চোখে পড়ে না বুনো-বাগদী-মালো-ভুঁইমালী-পাহাড়িয়ারা।

আর্যরা ভাবত এবং অন্যদের ভাবাতে চাইত, তাদের তৈরি ‘সোমরস’ হচ্ছে শ্রেষ্ঠ পানীয়, সাঁওতালদের ‘হান্ডি’ হচ্ছে পঁচা ভাত। আর্য অহঙ্কার, আর্যদের জাতিগত উদ্ধত্যের উত্তরাধিকারীর মতো কাজ হয়েছে আমাদের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। বাংলাদেশে সরকারিভাবে আদিবাসীদের ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ বলার প্রচলন শুরু হয় ২০১০ সালে প্রণীত একটি আইন দিয়ে, যা পরের বছর সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয় পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। ক্ষুদ্র কি? ওদের সংখ্যা, না আমাদের মানসিকতা? অভিধানে ‘ক্ষুদ্র’ বলতে বোঝায় ছোট, নীচ, সামান্য, অল্প ইত্যাদি। ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ বলাটা যে তুচ্ছার্থে হয়ে যাচ্ছে, সেটা আমরা বুঝতে পারি না।

এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী অবাঙালি জাতি হলো চাকমা। অন্তত হালের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক বিবেচনায় তো বটেই, পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসী হিসেবে বিবেচনা করলেও চাকমাসহ সেখানকার অন্য আদিবাসীরা পাহাড়ের আদি বাসিন্দা বলেই বিবেচিত হবে। অনেককাল আগে সেখানে কিছু বাঙালি, বিশেষ করে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী বাঙালির বসবাস ছিল। পরে সামরিক শাসকদের আমলে পাহাড়ে বাঙালিদের নিয়ে রোপন করা হয়েছে। সেটেলাররাই পাহাড়ে ‘আদিবাসী কে’ সেই কুতর্কের আগুন জ্বালিয়েছে, যাতে তাদের বাস প্রশ্নহীন হয়।

 

লেখক, 

সহকারী অধ্যাপক 

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।  

Back to top button