জাতীয়

‘আদিবাসী অধিকার আইন পেতে হলে রাস্তায় নামতে হবে’ পলিসি ডায়ালগে বক্তারা

শ্যাম সাগর মানকিন: ‘বাংলাদেশে আইন তৈরি হয় রাস্তা থেকে, আদিবাসীদেরও তাই আলাদা আদিবাসী অধিকার আইন পেতে হলে রাস্তায় নামতে হবে। সংসদীয় ককাস আদিবাসী অধিকার আইন সংসদে জমা দিয়েছে, আপনারা কি করতে পারবেন তার উপর নির্ভর করবে এটা হবে কি হবেনা’। আজ ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সন্মেলন কেন্দ্রে আদিবাসী অধিকার আইন নিয়ে এক পলিসি ডায়ালগে বক্তারা এসব কথা জানান। রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট কালেকটিভ (আরডিসি), হিউম্যান রাইটস প্রোগ্রাম ও আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের যৌথ আয়োজনে এ ডায়ালগ অনুষ্ঠিত হয়।

‘ইম্পলিমেন্টেশন অফ বাংলাদেশ: ইন্ডিজিনাস পিপলস রাইটস এক্ট শিরোনামে অনুষ্ঠিত পলিসি ডায়ালগে সংসদীয় ককাসের নেতৃবৃন্দের সাথে দেশের বিভিন্ন জায়গায় থেকে আসা আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর মানুষ আলোচনায় অংশগ্রহন করে। বক্তারা জানান, আদিবাসী সংসদীয় ককাসের পক্ষ থেকে সংসদে বিল পাশ করার আদিবাসী অধিকার আইন প্রস্তাব করা হয়েছে, যা মাননীয় স্পীকারের কাছে জমা দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেটা এখনো আলোর মুখ দেখেনি। সংসদীয় ককাস চেষ্টা করছে, কিন্তু কেবল এটাই যথেষ্ট নয় দরকার আদিবাসীদের চাপ প্রয়োগ। সে জন্যই রাস্তায় আন্দোলন করতে হবে।

আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের টেকনোক্র‍্যাট সদস্য অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেন, ‘আদিবাসী হিসেবে ও নিজ নিজ জাতিগোষ্ঠীর নামে স্বীকৃতির দাবি আদিবাসীদের। এই দাবী পূরণ করে বাংলাদেশ ও সরকার নিজে গর্বিত হতে পারে।’ তিনি আদিবাসী দিবসের প্রতিপাদ্য আদিবাসীদের দেশান্তর নিয়ে বলেন, দেশান্তর প্রাচীন বিষয়, তবে জোর করে দেশান্তরকরণ অপরাধ। আমাদের দেশ থেকেও অনেক মানুষ চলে যাচ্ছে, এর সাথে সাথে অনেক মেধার পাচারও হচ্ছে।’

সংসদীয় ককাসের আহবায়ক সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘আদিবাসীদের জন্য আলাদা আইন অপরিহার্য একটা ব্যাপার। আমরা সংসদে জমা দিয়েছি, কিন্তু সংসদে বিল আকারে আলোচনার জন্য এখনো উঠেনি। সংসদীয় ককাসের পক্ষ থেকে আবারো এই আইন উত্থাপনের চেষ্টা করে যাবো। আপনাদের রাস্তার লড়াইয়ে এই দাবী আপনারাও তুলবেন।

পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান আর.এ.এম মুক্তাদির চৌধুরি এমপি বলেন, ‘ব্যাক্তিগতভাবে আমি মনে করি আদিবাসী বিষয়ক কনভেনশনে সরকারের স্বাক্ষর করা উচিৎ। এভাবে আদিবাসীদের এগিয়ে নিলে একদিন তারা নিজেদের জাতির পরিচয়ে পরিচিত হবে।’

সংসদীয় ককাসের সদস্য ও আদিবাসী ফোরামের সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, ‘সংসদে যদি আদিবাসী অধিকার আইন গৃহীত হয় তবে সবার জন্যই ভালো হবে। আদিবাসীদের সাথে বাঙালিদের একটা সেতুবন্ধন তৈরি করা দরকার।’

জান্নাত-ই ফেরদৌসীর সঞ্চালনায় এবং ফজলে হোসেন বাদশার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাংসদ ঊষাতন তালুকদার। এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য ক্য এস মং, আদিবাসী বিষয়ক সাংসদীয় ককাসের সদস্য নাজমূল হক প্রধান, খালিদ মাহমুদ চৌধুরি, কাজী রোজি, হাজেরা সুলতানা, ন্যাশনাল কোয়ালিশন ফর ইন্ডিজিনাস পিপলের সহ সভাপতি নমিতা চাকমা, নাহারপুঞ্জির হেডম্যান দিবার্মিন পতাম প্রমূখ।

Back to top button