আগামীকাল থেকে সাঁওতালদের দু’দিন ব্যাপী বাহা উৎসব
আগামীকাল থেকে সাঁওতাল জাতিগোষ্ঠীর দ্বিতীয় বৃহৎ উৎসব বাহা পরব দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বারকোনা গ্রামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বাহা পরব উদযাপন কমিটি ও আদিবাসী সাংস্কৃতিক পরিষদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত দুদিনব্যাপী বাহা পরব উপলক্ষে নানান আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রকৃতি বাঁচলে প্রাণও বাঁচবে এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত বাহা পরবের উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী এবং স্থানীয় এমপি এড. মোস্তাফিজুর রহমান। সাঁওতালদের ঐতিহ্যবাহী রীতিনীতিতে বাহা পরব পালনের পাশাপাশি এবারের বাহা পরবের সাংস্কৃতিক আয়োজনে থাকবে ভারতের জনপ্রিয় সাঁওতাল চলচ্চিত্র শিল্পী বীরবাহা হাঁসদা, সঙ্গীত শিল্পী লাঙতিতি কিস্কু ভাবিনী বাস্কে, পুষ্পলতা বাস্কে সহ বাংলাদেশের সাঁওতালী শিল্পীদের গান ও নাচের পরিবেশনা।
আয়োজক কমিটির পক্ষে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন জানান, বাহা পরব আদিবাসী সাঁওতাল জাতিগোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান উৎসব। এ দেশে নানা সময় আদিবাসীদের জীবন ও তাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ধর্ম হুমকির মুখে পড়েছে এখনো প্রতিনিয়ত পড়ছে। এরকম পরিস্থিতিতেই আমাদের উদযাপন করতে হচ্ছে বাহা পরব। তিনি সরকার কে আদিবাসীদের সংস্কৃতি ঐতিহ্য রক্ষার্থে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বলেন, আমাদের উৎসব সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে আমাদের নিরাপত্তা জরুরী এই দেশে। তাই সরকারকে আদিবাসী সংস্কৃতি রক্ষায় এগিয়ে আসার আহবান জানায়।
অনেক সাঁওতাল নিজস্ব ধর্ম ছেড়ে খৃষ্ট ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার ফলে আগের মতন বাহা পরব করা যাচ্ছেনা। বাহা পরব হুমকির মুখে পড়ছে বলে জানিয়েছেন যুবনেতা সুভাষ চন্দ্র হেমব্রম। দিনে দিনে হয়তো আদিবাসী সাঁওতালদের এই উৎসব হারিয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রকৃতিপূজারী সাঁওতাল জাতিগোষ্ঠী বাহা পরব পালন করে থাকেন শাল পলাশ ফুল ফোটার পর। বাহা মানে ফুল, বাহা পরব এক অর্থে তাই ফুল উৎসব বা বসন্ত উৎসব। দোল পূর্ণিমার পর প্রতিটা সাঁওতাল গ্রাম বাহা উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠে।