অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী পাহাড়ের আদিবাসী কন্যার অনন্য সাফল্য
বিশেষ প্রতিবেদন: ছয় বছর আগে বাবা মার হাত ধরে জন্মভূমি ছেড়ে ক্যাঙারুর দেশে পাড়ি দেয় ছোট্ট মণি নাইরৌং ত্রিপুরা । বাংলাদেশের থাকা কালীন আদিবাসী সমাজ ও আদিবাসীদের শুভাকাঙ্ক্ষী অনেকেরই পরিচিত ছিল নাইরৌং ত্রিপুরার । বাবা অভিলাষ ত্রিপুরা আইএলওতে আদিবাসী বিষয়ক ডেস্কে শীর্ষ পদের চাকরি করতেন। বাবার কাজের সুবাদে বাল্যকালে দেশের বিভিন্ন আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় সভা, সেমিনার ও সফরে নাইরৌং সঙ্গী হতো। মাতৃভাষা কক বরকের পাশাপাশি বাংলা ও চাকমা ভাষায় গান করতো মা বাবার সাথে বিভিন্ন আসরে।
সেদিনের সেই ছোট্ট নাইরৌং আন্তর্জাতিক সাঁতারে পৃথিবীর অন্যতম শীর্ষ দেশ অস্ট্রেলিয়ার বয়সভিত্তিক সাঁতারে শ্রেষ্ঠদের তালিকায় নাম লেখালো। পার্বত্য চট্টগ্রামের এই কৃতি সন্তান সারা Australian Capital Territory (ACT) রাজ্য পর্যায়ের শতাধিক প্রাইমারী স্কুলের ১০-১১ বছরের প্রায় তেরোশো ছাত্রীর মধ্যে প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন ধাপে বাছাইপর্বে জয়ী হয়ে গত ৬ই মে চূড়ান্ত পর্যায়ে অনুষ্ঠিত ACT STATE CHAMPIONSHIP এ দুটি ইভেন্টে ৩য় স্থান অর্জন করেছে। ১১ বছর বালিকা গ্রুপে ৫০ মিটার বাটারফ্লাই ও ৫০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে এ অর্জনে সে টাইমিং নিয়েছে ৪০•১৫ সেকেন্ড ও ৪১•৬৬ সেকেন্ড যা ছিল পুরো রাজ্যের শীর্ষস্থান অধিকারীর চেয়ে যথাক্রমে মাত্র ০•৪ ও ০•৮ সেকেন্ড পিছনে। সবকিছু ঠিক থাকলে জুলাইয়ে School Sports Australiaর আয়োজনে প্রতি রাজ্য থেকে তিন জন করে সারাদেশের আটটি রাজ্যের সেরা ২৪ জনের মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য National Championship অংশগ্রহণের জন্য নাইরৌং ত্রিপুরা এখন অফিসিয়াল আমন্ত্রণের অপেক্ষায়।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় জন্ম ও বেড়ে ওঠা বর্তমানে Australia প্রবাসী অভিলাষ ত্রিপুরা ও রাজেস্বরী রোয়াজার জ্যেষ্ঠ কন্যা নাইরৌং ত্রিপুরা নেভিল বোনার প্রাইমারি স্কুলের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী। তার ছোট বোনও একই স্কুলে প্রি-স্কুল গ্রুপে ও ছোট ভাইয়ের দেড় বছর বয়স। উললেক্ষ নাইরৌং ত্রিপুরা অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পর ছয় বছর বয়সে সাঁতার শিখা শুরু করলেও মাত্র বছর খানেক আগে প্রতিযোগীতামূলক সাঁতার শুরু করে ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় ত্রিশটি ইভেন্টে পদক জয়ী হয়েছে।
পৃথিবীর বিখ্যাত সাঁতারু Michael Phelps ও Australiaর Cate Campbell এর ভক্ত এই ক্ষুদে সাঁতারুর লক্ষ্য অনাগত দিনগুলোতে অনেক বড় আসরে অংশগ্রহণ করা। এজন্য নাইরৌং ও তার বাবা মা সবার কাছে আশীর্বাদ চেয়েছেন।