জাতীয়

৭ দফা দাবিতে আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের মানববন্ধন

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন ও সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনের দাবীতে শুক্রবার সকালে মানববন্ধন ও ছাত্র সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ।

সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন ও সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনসহ, জাতীয় সংসদে উত্থাপিত আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের আদিবাসী নিরাপত্তা ও অধিকার সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়ন, আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি, আদিবাসী নারীর উপর সহিংসতা বন্ধ, প্রথাগত ভূমি অধিকার, জাতীয় বাজেটে আদিবাসীদের জন্য আলাদা বাজেট প্রদানসহ উন্নয়ন ও পর্যটনের নামে অদিবাসী উচ্ছেদ বন্ধ করার দাবি উঠে।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি উইলিয়াম নকরেক, সহ সভাপতি অমর শান্তি চাকমা, হিল উইমেন ফেডারেশনের সভাপতি মনিরা ত্রিপুরা, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ঢাকা মহানগর শাখার সহ সভাপতি জ্ঞান জ্যোতি চাকমা, আদিবাসী গানের দল মাদল ও চানচিয়া’র সমন্বয়কারী আন্তনী রেমা, গারো স্টুডেন্ট ইউনিয়ন এর ঢাকা মহানগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক তমাল ¯œাল, ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরামের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি অসীম রায় ত্রিপুরা, বাংলাদেশ বর্মন ছাত্র পরিষদের সভাপতি পবিত্র বর্মন, সান্তাল স্টুডেন্ট ইউনিয়নের প্রতিনিধি ইলিয়াস মূর্মূ, বাংলাদেশ হাজং ছাত্র সংগঠনের আহ্বায়ক আশীস হাজং প্রমুখ।

সমাবেশে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ঢাকা মহানগর শাখার সহ সভাপতি জ্ঞান জ্যোতি চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যাকে স্থায়ী ও শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের জন্য ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগনের পক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যকার “পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি” স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে, চুক্তির আজ বিশ বছর পূর্ণ হলেও এ চুক্তির মৌলিক বিষয়সহ অধিকাংশ ধারায় বাস্তবায়ন করা হয়নি।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার কর্তৃক নানা মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থি নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে কাঙ্খিত শান্তি আদৌ ধরা দেয়নি বরঞ্চ পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনো সেনাশাসন অব্যাহত রয়েছে। পার্বত্য জুম্ম জনগোষ্ঠীর বিরদ্ধে নানা সহিংসতা,ষড়যন্ত্র আজও চলমান।

চানচিয়ার সমন্বয়কারী আন্তনী রেমা বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তি যদি পূর্ণ বাস্তবায়ন না হয়, পাহাড়ে আবারো যদি আগুন জ¦লে, তাহলে সেই আগুনের স্ফুলিঙ্গ সমতলেও আসবে এবং সমান ভাবে আন্দোলন চলবে। তিনি আরও বলেন, দেশের সমতলে বসবাসকারী অন্যান্য আদিবাসীরা ভালো নেই। দেশের সাম্প্রদায়িক ,মৌলবাদী,ভূমিদস্যু এবং কখনও বা ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী কর্তৃক প্রতিনিয়ত ভূমি কেন্দ্রিক নানান সহিংসতা, উচ্ছেদ,জবরদখল, কথিত অর্থনৈতিক জোন,ইকোপার্ক সম্প্রসারন,মিথ্যা বন মামলা, আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলকে রিজার্ভ ফরেস্ট ঘোষণা, নারী ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হতে হচ্ছে। কিন্তু কোনটারই সুষ্ঠু বিচার আদিবাসীরা আজও পায়নি।

সমাপনী বক্তব্যে বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি উইলিয়াম নকরেক প্রতিকূল পরিবেশে মানবন্ধন ও ছাত্র সমাবেশে উপস্থিত থেকে সংহতি জানানোর জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, প্রকৃতির এমন বিরুপ পরিবেশেও আপনারা আমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন, আমি বিশ্বাস করি ভবিষ্যতেও যেকোন প্রতিকূল পরিবেশে অধিকার আদায়ের আন্দোলনে আপনাদের পাশে পাবো। জয় আমাদের হবেই।

Back to top button