অন্যান্য

হবিগঞ্জের বৈকন্ঠপুর চা-বাগানে সহায়তার হাত বাড়ালো “আমরা রবিদাস সন্তান”

সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার বৈকন্ঠপুর চা-বাগানে দীর্ঘদিন যাবৎ চলা শ্রমিকদের মজুরীপ্রাপ্তির দাবীতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে পাশে দাড়িয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “আমরা রবিদাস সন্তান”। ২১ শে আগস্ট রাত ও ২২ এ আগস্ট সকালে সংগঠনটির পক্ষ থেকে মজুরী বন্ধ থাকার দরুন অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করা অপেক্ষাকৃত বেশী দুস্থ পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি এই আন্দোলন পরিচালনাকারী স্থানীয় সংগঠন “বৈকুন্ঠপুর চা-বাগান বাচাও সংগ্রাম কমিটি” কে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

দুস্থ পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ ও খাদ্যসামগ্রী এবং আন্দোলন পরিচালনাকারী স্থানীয় সংগঠনকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন “আমরা রবিদাস সন্তান” এর অন্যতম সদস্য এবং বাংলাদেশ রবিদাস উন্নয়ন পরিষদ-কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক শিপন রবিদাস প্রাণকৃষ্ণ। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন “বৈকুন্ঠপুর চা-বাগান বাচাও সংগ্রাম কমিটি”র সভাপতি সূর্য্য কর্মকার, সহ-সভাপতি শাওন রবিদাস, সাধারণ সম্পাদক মনিব কর্মকার, সদস্য নয়ন সাঁওতাল, রাজকুমার রবিদাস, মহেন্দ্র ভৌমিক, প্রদীপ জেরী, অর্জুন রবিদাস, মালতী রানী রবিদাস প্রমুখ।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “আমরা রবিদাস সন্তান” এর পক্ষ থেকে ত্রাণসামগ্রী বিতরণকালে শিপন রবিদাস প্রাণকৃষ্ণ বলেন, “আমাদের সাধ থাকলেও সাধ্যের জায়গাতে স্বাভাবিবভাবেই সীমাবদ্ধতা আছে । তবুও সবাই এগিয়ে আসার ফলে এমন মহৎ কার্যক্রম চালানো সম্ভব হচ্ছে। সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে মানবিকভাবে বিবেচনা করে সবারই সর্বোচ্চটুকু দেওয়া উচিত।” তিনি এক্ষেত্রে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, হোয়াটস্ অ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে গড়ে ওঠা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “আমরা রবিদাস সন্তান” এর পক্ষ থেকে ইতিপূর্বে রংপুরের কাউনিয়াতে জুতার কাজ করার পাশাপাশি চতুর্থ শ্রেনী পড়ুয়া পলাশ রবিদাসের বোনের বিয়েতে অর্থ সহায়তার মধ্য দিয়ে সামাজিক কার্যক্রমে সাধ্যমতো অবদান রাখার প্রত্যয়ে কাজ শুরু করে। দেশে ও বিদেশে অবস্থান করা কতিপয় রবিদাসদের নিজেদের চাঁদার অর্থে এরপর ধারাবাহিকভাবে গাইবান্ধার বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যায় কবলিত রবিদাস পরিবারের মধ্যে চিড়া, চিনি, স্যালাইন এবং দিয়াশলাই প্রদান করে। এবং তৃতীয় বারের মত এই গ্রুপের সদস্যরা হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার বৈকুন্ঠপুর চা বাগানে আন্দোলনরত অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করা কিছু রবিদাস পরিবারসহ আন্দোলনকারীদের মাঝে সহায়তা (চাল, মশুর ডাল, সয়াবিন তেল, লবন, দিয়াশলাই, সাবান) এবং কিছু নগদ অর্থ তুলে দিয়েছে।

এদিকে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২২ আগস্ট দুপুরে মাধবপুর উপজেলায় হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মালিকপক্ষ এবং আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সমন্বয়ে এক সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক বকেয়া থাকা ১৫ সপ্তাহের মজুরী ও প্রফিডেন্ট ফান্ডের টাকা পরিশোধ করা হবে বলে জানা যায়। এর অংশহিসেবে আজ ২ সপ্তাহের, আগামীকাল ৩ সপ্তাহের ও আগামী ২৫শে আগস্ট বৃহস্পতিবার ৫ সপ্তাহের মজুরী পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়।

Back to top button