স্বপন কুমার বিশ্বাসকে নির্যাতনের প্রতিবাদে শাহবাগে প্রতিবাদী সমাবেশ
নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগে নির্যাতন করায় এক প্রতিবাদী সমাবেশের আয়োজন করেছে নিপীড়নের বিরুদ্ধে শাহবাগ। আজ সোমবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ প্রতিবাদী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, আমরা মনে করি স্বপন কুমারের এই ঘটনা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। হৃদয় মন্ডলের ঘটনা, ড. অভিজিৎ রায়কে মেরে ফেলা কিংবা হুমায়ুন আজাদকে বই লেখার জন্য তার উপন্যাসের মতো চাপাতির কোপে ফালি ফালি করে কেটে চাঁদে পরিণত করা- এই সমস্ত ঘটনাগুলো যেটা মনে করিয়ে দেয় যে, বাংলাদেশকে একটা থিওলজিক্যাল স্টেটে পরিণত করা হচ্ছে। বাংলাদেশকে ধর্মতাত্ত্বিক রাষ্ট্র বানানো হচ্ছে। যেখানে কেবল এক ধর্মের মানুষ বাস করবে।
বিচারহীনতার সংস্কৃতি নিয়ে ড. রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ঘটনার সত্যতা স্বীকার করতে হবে সেগুলোকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। একটি ঘটনারও আমরা বিচার হতে দেখি না বরং প্রতিক্রিয়াশীলতার একটি দীর্ঘ ছায়া আমাদেরকে ক্রমাগত গ্রাস করছে।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তিনি আরো বলেন, অনেকে পুলিশের কথা বলছেন! যে পুলিশ দাঁড়িয়েছিল সেও ধর্মান্ধ। সেও ভীষণভাবে সাম্প্রদায়িক। পুলিশের পোশাক না থাকলে সে হয়তো জুতার মালা নিজেই পরিয়ে দিতো। পুলিশের প্রতি আস্থা আমাদের আর থাকছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাবেরী গায়েন বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মধ্যে একটা গড়িমা আছে, আমরা স্কুল এবং কলেজের শিক্ষকদের সম্ভবত আমাদের সমান স্ট্যাটাসের মনে করি না কিন্তু খুব বেশিদিন নেই আপনার গলায়ও জুতার মালা পড়বে। কাজেই সময় যদি আছে মনে করেন তাহলে আসুন সকলে মিলে রুখে দাঁড়াই।
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, আজকে রাষ্ট্রপরিচালনা যারা করছেন তারা সেই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে কেন থাকবেন যদি রাষ্ট্র জনগণকে নিরাপত্তা দিতে না পারে। যদি রাষ্ট্র জনগণকে রক্ষা করতে না পারে তাহলে তারা কেন থাকবেন। মেধা এবং মননে, চিন্তা এবং চেতনায় যদি জাতিকে উন্নত করা না যায় তাহলে এ দেশ যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই থেকে যাবে।
স্বপন কুমার বিশ্বাসকে নির্যাতনের ঘটনায় সুষ্ঠ তদন্ত এবং বিচার দাবি করেন সমাবেশে উপস্থিত বক্তারা।