জাতীয়

সেনাবাহিনীর নির্যাতনে এইচএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যুঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড়

আইপিনিউজ ডেস্কঃ রাঙামাটির নান্যাচরে গত ৫ এপ্রিল ২০১৭, বুধবার সকালে সেনাবাহিনী কর্তৃক অন্যায়ভাবে আটক ও অমানুষিক নির্যাতনে গুরুতর আহত নান্যাচর কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী রমেল চাকমা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে মারা যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের টাইমলাইনে এ ঘটনায় নিন্দা জানাচ্ছেন, ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের দাবীসহ নানান দাবী জানিয়ে স্ট্যাটাস পোস্ট করছেন।

বিপ্লব রহমান উনার ফেসবুকে বিরক্তি প্রকাশ করে লিখেন ‘রমেল চাকমার মৃত্যু সংবাদ মূল ধারার গণমাধ্যমে নেই!’

তন্দ্রা রেমা তার নিজস্ব টাইমলাইনে লিখেছেন, ‘সেনাবাহিনীরা কি আইনের উর্ধ্বে!!’

পিপল চাকমা লিখেছেন, ‘পাহাড়ে সেনাশাসন অপারেশন উত্তরণ অবিলম্বে বন্ধ করুন। সেনাবাহিনী পাহাড়ীদের জন্য এক কুখ্যাত বাহিনী। রাষ্ট্র সেনাবাহিনী দিয়ে পাহাড়ীদের উপর নির্যাতন, ধর্ষন, গুম, হত্যা ও বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী পাহাড়ে মানবিধকার লঙ্ঘন করে যাচ্ছে যুগ যুগ ধরে। রুবেলকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। এরকম বহু রুবেলকে হত্যা করে মায়ের বুক খালি করেছে। রাষ্ট্র কি চায় পাহাড়ীরা আবার অস্ত্র হাতে নিয়ে আন্দোলন করুক। পাহাড়ে অনেক রক্ত ঝড়েছে অনেক মায়ের বুক খালি হয়েছে। বাংলাদেশ যদি মুক্তিযুদ্ধ বিশ্বাস করে তাহলে পাহাড়ীদের মুক্তি দিচ্ছে না কেন? রাষ্ট্র সেনাবাহিনী ও সেটেলার দিয়ে পাহাড়ীদের সংখ্যালঘু থেকে আরো সংখ্যালঘুতে পরিনত করছে। বর্তমানে পাহাড়ীরা নিজ ভূমে পরবাসী।’

সুজন বিপ্লব লিখেছেন, ‘রমেল চাকমা বনাম সেনাবাহিনী| আপনি কোন পক্ষে? রমেলের খুনীদের বিচার হোক- চাইবেন না?’

অজল দেওয়ান লিখেছেন, ‘রমেল চাকমার হত্যার বিচার হবে না জানি, এর আগেও ২০১৪ সালে ডুরান চাকমাকেও একই উপায়ে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছিল তার বিচার বা এ সংক্রান্ত কোন খবরও পাওয়া যায় নি। সেনাবাহিনীর এই হত্যাকান্ডগুলোর বিচার কোন সরকার বা রাষ্ট্র করতে পেরেছে? সবশেষে ডুরান, রমেলরা হয়ে যায় মানবাধিকারের খাতায় বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের এক একটি সংখ্যা। এর চেয়ে বেশি তাদের স্থান হয় না।’

অনন্ত বিকাশ ধামাই দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা জানিয়ে লিখেছেন, ‘মাত্র এইচএসসি পরীক্ষার্থী রমেল চাকমা। মেজর তানভীর তাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলল। মি.মেজর তানভীর তুমি একজন খুনি। একজন নিষ্পাপ ছেলেকে তোমার হাতের আঘাতে মাথায় ভারি দিয়ে, চোখে আঘাত করে, শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে হাড় ভেঙ্গে দিয়ে রমেল চাকমাকে নির্মমভাবে হত্যা করল। তোমার বুক একবারের জন্যও কাঁপলো না??? জানি রাষ্ট্র তথা সরকারের কাছে বিচার পাবোনা। কেবল নিজের প্রমোশনের জন্য একজন নাবালক কে হত্যা করেছ। তুমি তোমার নিজেকে হত্যা করেছ। তোমার পরিবারকে দয়া করে ঘটনাটি জানিও। জানি, পত্রিকা বা গণমাধ্যমে ঘটনাটি যেন প্রচার করতে না পারে সে ব্যবস্থাও করে ফেলেছ।’

এদিকে পুজা দেওয়ান নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘R.I.P রমেল…
তুই মরেগিয়ে মুক্তি পেলিরে ভাই,তোকে আর এই নরকে থাকতে হবে না,প্রতিদিন নির্যাতিত হবার ভয় থাকবে না,একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলার জন্য লড়াই করতে হবে না।
আর পারলে আমাদের ক্ষমা করিস,তোকে হয়তো তোর ন্যায্য ন্যায় বিচার পাওয়াতে পারবো না,এখানে যে ন্যায় বিচার হয় না, আমরা তোর জন্য মিছিল -সমাবেশ করে ন্যায় বিচার চাইবো তবে আমি জানি তাতে কিছুই হবে না, আজ পর্যন্ত হয়ও নি।
তোর হত্যাকারী বুক ফুলিয়ে বীরদর্পে ঘুরে বেড়াবে, আমরা কিছুই করতে পারবো না।
হয়তো কোনদিন শাস্তি ও হবে না তার, উপরোন্তু হয়তো তাকে মেডেল দেওয়া হবে, আমরা কিছুই করতে পারবো না।
আমাদের অক্ষমতার জন্য আমাদের ক্ষমা করিস।
আর যেখানেই থাকিস ভালো থাকিস।’

Back to top button