মতামত ও বিশ্লেষণ

সীতাকুণ্ডের শিশুঘাতী ‘অজ্ঞাত রোগ’ বনাম সমাজদেহ ও রাষ্ট্রের জ্ঞাত অসুস্থতাঃ প্রশান্ত ত্রিপুরা

কাল IEDCR-এ কাটানো এক বেলা

ঢাকার মহাখালীতে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট নামে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান আছে (ইংরেজিতে সংক্ষেপে IEDCR নামে পরিচিত), যেখানে গতকাল বিকেলে বেশ কিছুক্ষণ ছিলাম। গত সপ্তায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে তথাকথিত ‘অজ্ঞাত রোগে’, বা মতান্তরে ‘অপুষ্টি’র কারণে, ৯জন ত্রিপুরা শিশু মারা যাওয়ার খবরটির প্রতি যাঁরা একটু হলেও মনোযোগ দিয়েছেন, তাঁরা হয়ত জানেন যে এই IEDCR থেকে একটা প্রতিনিধিদল সীতাকুণ্ডে গিয়েছিলেন সরেজমিন অনুসন্ধানে, এবং আজ তাঁদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর কথা, ঠিক কোন রোগ সেখানকার ত্রিপুরা জনপদে হানা দিয়ে ৯ শিশুর জীবন কেড়ে নিয়েছে, এবং আরো প্রায় অর্ধশত শিশুকে অসুস্থাবস্থায় রেখেছে। এ বিষয়ে নিজস্ব কিছু অনুমান ও ধারণার কথা আমি ইতোমধ্যে ফেসবুকে প্রকাশ করেছি, আজ হয়ত জানা যাবে সেগুলো কতটা ঠিক ছিল। তবে আমার অনুমান বা ধারণার যথার্থতা যাই হয়ে থাকুক না কেন, IEDCR-এর অনুসন্ধানের ফলাফল সহসা স্বচ্ছ ও পূর্ণাঙ্গভাবে জনসমক্ষে আসবে, এবং এর ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট সবাই দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন, এই আশা আমরা করতেই পারি। তাই এ নিয়ে কোনো আগাম মন্তব্য না করে আমি এখানে সাধারণ কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরতে চাই।

আগে একটু বলে নেই, কাল আমি IEDCR-এ কেন গিয়েছিলাম। না, সীতাকুণ্ডে নয়জন শিশুর প্রাণহানির বিষয়ে কোনো খবর নেওয়া আমার উদ্দেশ্য ছিল না। তবে সেখানে যে কাজে গিয়েছিলাম, তাতে ঠিকই প্রসঙ্গটা ওঠানোর সুযোগ ছিল, এবং সেটা আমি উঠিয়েছিও গতকাল। ব্যাপারটা খুলে বলছি। IEDCR-এর সাথে আমার কোনো প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা নেই, তবে এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত সরকারি ডাক্তারদের ‘রোগতত্ত্ব’ বিষয়ক একটি নিবিড় প্রশিক্ষণ কর্মসূচী কয়েক দফা ধরে চলে আসছে একটি বিদেশি সংগঠনের সহায়তায়। সেই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের সমন্বয়ক হিসেবে রয়েছেন ডাক্তার পিয়ের নামে বাংলাদেশে সুদীর্ঘকালের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন ফরাসি উন্নয়নকর্মী, যিনি একদা আমার সহকর্মী ছিলেন (আমরা একসাথে কাজ করেছিলাম পার্বত্য চট্টগ্রামে ইউএনডিপি পরিচালিত একটি কর্মসূচীতে, যেখানে আমার ভূমিকা ছিল স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিষয়ক প্রকল্পসমূহ তত্ত্বাবধান করা, আর পিয়ের ছিলেন স্বাস্থ্য প্রকল্পের কারিগরি উপদেষ্টা)। তাঁরই আমন্ত্রণে রোগতত্ত্ব বিষয়ক উল্লিখিত প্রশিক্ষণে আমি ‘নৃবৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে স্বাস্থ্য, অসুস্থতা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার বহুবিধতা’ (Facing Otherness: Anthropological Perspectives on Health, Illness and Medical Pluralism) শীর্ষক একটি আড়াই ঘণ্টার আলোচনার দায়িত্ব নিয়েছিলাম। অধিবেশনের শিরোনামসহ বিস্তারিত আলোচ্য বিষয় সম্পূর্ণ নিজের মত করেই সাজানোর স্বাধীনতা আমার ছিল, তাই আগ্রহের সাথেই কাজটা আগেও তিন দফা করেছিলাম। সেই ধারাবাহিকতায় চতুর্থবারের জন্য একই ক্লাস নিতে গিয়েছিলাম গতকাল, এবং বলা বাহুল্য, আমার উপস্থাপনার এক পর্যায়ে আমি প্রাসঙ্গিকভাবেই সীতাকুণ্ডে ৯ শিশুর দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে এসেছিলাম।

নৃবৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে স্বাস্থ্যসেবা

ফেসবুক পোস্টের সংক্ষিপ্ত পরিসরে ঘণ্টা দুয়েকের একটি আলোচনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরা সম্ভব নয়। ভবিষ্যতে কখনো সময় ও সুযোগ হলে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রবন্ধের মাধ্যমে তা করব, তবে এখানে এটুকুই বলি, আমি আমার অধিবেশনের প্রথমার্ধে সচরাচর চেষ্টা করি বিজ্ঞানের ইতিহাস, নৃবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু, বিজ্ঞানের সাথে রাজনীতি ও অর্থনীতির সম্পর্ক ইত্যাদি বিষয়ে মোটা দাগের কিছু আলোচনা করতে। এরপর আমি চলে যাই বাংলাদেশে বিদ্যমান বিভিন্ন ধরনের আর্থসামাজিক অসমতার প্রসঙ্গে, এবং প্রশিক্ষণের অংশগ্রহণকারীদের আহ্বান জানাই ‘রোগ’ ও ‘অসুখে’র ধারণাকে সমাজ-সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাষ্ট্র ও ইতিহাস ইত্যাদির প্রেক্ষাপটে একটা সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গীর আলোকে দেখতে। এছাড়া তাঁদের ভাবতে উদ্বুদ্ধ করি, দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় যথাযথভাবে স্বাস্থ্যসেবা দিতে গেলে স্রেফ চিকিৎসাশাস্ত্রীয় জ্ঞান ছাড়াও সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের কেমন ধারণা ও সংবেদনশীলতা থাকা দরকার। এক ফাঁকে আমি তাঁদের কথাপ্রসঙ্গে এটাও জানাই, বাংলাদেশে উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তায় সরকারিভাবে যে স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি বিষয়ক কর্মসূচী বাস্তবায়িত হয়ে আসছে দীর্ঘকাল যাবত, তার অংশ হিসেবে কাগজে কলমে ‘উপজাতীয় স্বাস্থ্য পরিকল্পনা’ নামক একটা বিষয়েরও অস্তিত্ব বরাবরই ছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বেলায় যেমনটা প্রায়ই দেখা যায়, এ ধরনের ‘ছোটখাট’ বিষয় বাস্তবে কখনো অগ্রাধিকার পায় না, এবং উন্নয়ন সহযোগীরা তাগাদা দিলে সরকারের পক্ষ থেকে কয়েক বছর অন্তর বলা হয়, ‘এবার হয় নি, পরেরবার আমরা দেখব।’ অথচ সেই পরের বার কখনো আসে না।

আসবে কি করে? মূলত উন্নয়ন সহযোগীদের ফরমায়েশ মেনেই ‘উপজাতীয় স্বাস্থ্য পরিকল্পনা’ জাতীয় কাগুজে দলিল আমলারা তৈরি করান পরামর্শকদের দিয়ে, কিন্তু নানা কারণে জনগণের একটি ‘ক্ষুদ্র’ অংশের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার তাগিদ বা অবকাশ তাদের থাকে না। বরং উন্নয়নের নামে চারিদিকে যে লুটপাট ও জনগণের সাথে প্রতারণা চলে, তা স্বাস্থ্য খাতেও দেখা যায়। ‘রোগতত্ত্ব’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে অংশ নেওয়া সরকারি ডাক্তারদের সামনে এসব প্রসঙ্গ ওঠালে তাঁরা হয়ত প্রকাশ্যে তেমন কিছু বলেন না, কিন্তু তাঁদের মৌনতা থেকেই বোঝা যায় যে সংশ্লিষ্ট প্রবণতাসমূহ তাঁদের অজানা নয়। যাই হোক, তাঁদেরকে বেশি না খুঁচিয়ে আমি মনোযোগ দেই ছোটখাট অন্যান্য বিষয়ের প্রতি। যেমন, তাঁদের কর্মস্থলের প্রশাসনিক স্তর যে নামে পরিচিত, ‘উপজেলা’, সেটি আর ‘উপজাতি’ শব্দের যে অভিন্ন উপসর্গ – ‘উপ’ – তা কী তাৎপর্য বহন করে, তা নিয়ে ভাবার আহ্বান আমি জানাই। উল্লেখ্য, কর্মজীবনের শুরুতে ‘উপ’ নামে অভিহিত পরিসরে অনেকে হয়ত কিছুটা সময় কাটান বাধ্য হয়ে, কিন্তু প্রায় সবাই দ্রুত সেখান থেকে কেটে পড়তে চান, বা কর্মস্থলেই ঠিকমত যান না। এমতাবস্থায় প্রত্যন্ত এলাকায় সেবাদানকারীদের যথাযথ উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য ইতিবাচক প্রণোদনা দেওয়ার বদলে সরকারিভাবেই শাস্তি হিসেবে সেসব জায়গায় পোস্টিং দেওয়ার চর্চা চলে প্রকাশ্যে। যেমন খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী গতবছর ঘোষণা দিয়েছিলেন, “যেসব ডাক্তারদের হাসপাতালে ধূমপান করতে দেখা যাবে, তাঁদের বান্দরবানে পাঠিয়ে দেওয়া হবে!”

আমাদের গোটা স্বাস্থ্যব্যবস্থাই রুগ্ন, যার শরীরের সমস্ত রক্ত জমেছে মুখমণ্ডলে

সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার সাধারণ অবস্থা এবং বিশেষ করে উপজেলা পর্যায়ে এর করুণ হাল সম্পর্কে যাঁরা খোঁজখবর রাখেন, তাঁরা জানেন যে আসলে আমাদের পুরো স্বাস্থ্যসেবাই রোগাক্রান্ত। এক্ষেত্রে রোগের মূল কারণ হল গণতন্ত্রহীনতা ও অপশাসন, এবং বিবিধ উপসর্গের মধ্যে রয়েছে দুর্নীতি, অপচয় ও সমন্বয়হীনতা। এছাড়া রয়েছে যাবতীয় সম্পদ ও ক্ষমতাকে রাজধানী-কেন্দ্রিক ও নগর-মুখী করে রাখার প্রবণতা, যা আমাদেরকে অনেক আগে বলা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটা কথা মনে করিয়ে দেয়, “সমস্ত শরীরের রক্ত যদি মুখমণ্ডলে আসিয়া জমা হয়, তাহা হইলে তাহাকে স্বাস্থ্য বলা যায় না।”
সীতাকুণ্ডে সম্প্রতি ৯ শিশু প্রাণ হারানোর প্রেক্ষিতে ‘রোগতাত্ত্বিক’ দৃষ্টিকোণ থেকে যে ধরনের কারণই সামনে আসুক না কেন, রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক কারণগুলিকে উপেক্ষা করার জো নেই। ইতোমধ্যেই জানা গেছে, তথাকথিত অজানা রোগে আক্রান্ত জায়গাটিতে সরকারি সেবার ‘রক্তপ্রবাহ’ – যেমন টিকাদান কর্মসূচী – ঠিকমত পৌঁছায় নি। সেখানে ‘উপজাতীয় স্বাস্থ্য পরিকল্পনা’ নামক কোনো কিছু বাস্তবায়নের কথা কখনো উঠেছে কিনা, সে প্রশ্ন নাইবা ওঠালাম আমরা! চূড়ান্তভাবে সেবাবঞ্চিত এসব জনপদের খবর জনসমক্ষে আসলে সেগুলির জন্য ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ নেওয়া হয়, কিন্তু এসব বিচ্ছিন্ন লোক দেখানো উদ্যোগ যে যথেষ্ট নয়, বরং পুরো সমাজ দেহে ও রাষ্ট্রে বাসা বাঁধা রোগসমূহের চিকিৎসাও যে করা দরকার, তা বলা বাহুল্য। এক্ষেত্রে উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত ডাক্তারদের নিজেদের হাত পা হয়তবা অনেকটাই বাঁধা, কিন্তু কাল আমি তাঁদের মনে করিয়ে দিয়েছি, নানান সীমাবদ্ধতার মধ্যেও যেসব কাজ তাঁরা করতে পারেন, সেগুলি ঠিকমত করা গেলেও অনেক করা হয়। এই দৃষ্টিকোণ থেকেই আমি আমার অধিবেশনের শেষে নিচের কথাগুলি বলেছি, যা স্মৃতি থেকে এখানে তুলে দিচ্ছি।

আপনার মতই কেউ কি পারত না ৯টি জীবন বাঁচাতে?

(IEDCR-এ উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে বলা আমার সমাপনী বক্তব্য)
“আপনারা যাঁরা উপজেলা পর্যায়ে কাজ করছেন, সেখানকার প্রান্তিক মানুষদের অনেক কিছুই দিতে পারেন। প্রথমত স্থানীয় লোকজন যারা বিভিন্ন সমস্যায় আপনাদের কাছে আসেন, তাঁদেরকে মানুষ ও নাগরিক হিসেবে পূর্ণ মর্যাদা ও সম্মান দেওয়ার আছে। তাঁদের কেউ ক্ষুদ্র, হীন, নিচু, মূর্খ বা ‘উপ’ হিসেবে উপেক্ষিত হোক, তা নিশ্চয় আমাদের কাম্য নয়। সীতাকুণ্ডে ৯ শিশুর মৃত্যুর ঘটনার পর এখন কেউ সেটার দায় নিতে চাচ্ছেন না, বরং অনেকে দুর্দশাগ্রস্ত গ্রামবাসীদের দিকেই আঙুল তুলছেন, বলার চেষ্টা করছেন তাঁদের অশিক্ষা, অসচেতনতা, কুসংস্কার ইত্যাদিই দায়ী। এমনও বলা হচ্ছে, টিকা দিতে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা নাকি গ্রামে ঢুকতে বাধাগ্রস্ত হয়েছিলেন, তাই সেখানে আর যান নি। ধরা যাক আপনারা এমন কোনো এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা থাকা অবস্থায় এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটল। আপনাদের হাতে যেটুকু ক্ষমতা আছে, তা কাজে লাগিয়ে কি নতুন উদ্যমে স্বাস্থ্যকর্মীদের সেই গ্রামে পাঠানো যেত না? গ্রামবাসীদের কি ভালো করে বুঝিয়ে বলা যেত না টিকা কী, কেন সেটা দরকার? সীতাকুণ্ডে যদি কেউ তা করতেন, গত সপ্তায় ‘অজ্ঞাত রোগে’ বা ‘অপুষ্টি’তে একসাথে ৯ শিশুর মৃত্যু হয়তবা ঘটত না। ডাক্তার হিসেবে আপনাদের একটা পবিত্র দায়িত্ব ও ক্ষমতা রয়েছে মানুষের জীবন বাঁচাতে সহায়তা দেওয়ার। আপনারা বয়সে তরুণ, আমার বিশ্বাস আমাদের সমাজদেহ ও রাষ্ট্রে বাসা বাঁধা রোগ এখনো আপনাদের সেভাবে সংক্রমিত করে নি। আপনারা চাইলে নিশ্চয় নিজেদের সুস্থ রাখতে পারেন, নিজের জায়গা থেকেই অনেক কিছু করতে পারেন। কাজেই এটা যেন কখনো ভুলে না যান, YOU can make a difference!”

পুনশ্চ:
উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত ডাক্তাররা যখন তাঁদের কর্মস্থলের নাম বলেন, নামগুলির বৈচিত্র্য আমার কাছে খুব আকর্ষণীয় মনে হয়: কেন্দুয়া, ডিমলা, ডোমার, কাউনিয়া, চিলমারী, রৌমারী, ধুপচাঁচিয়া, ধুনট, আগৈলঝারা, হিজলা, থানচি, লামা, গুইমারা, মাটিরাঙ্গা, লংগদু, উখিয়া, পেকুয়া, সারিয়াকান্দি, ঝিনাইগাতি, নকলা, শাল্লা, ধর্মপাশা, শরণখোলা, মনপুরা, লালমোহন…। কিন্তু এসব নামে কাব্যিক ব্যঞ্জনা খুঁজে পাওয়া এই আমিও বাস্তবে উপজেলা পর্যায়ে কখনো দীর্ঘদিন থাকি নি। আমরা শহুরে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত মানুষেরা অনেকে হয়তবা নানান তাগিদে প্রত্যন্ত অঞ্চলসমূহে স্বল্প সময়ের জন্য যাই বা গিয়ে থাকি, তবে কজনইবা লম্বা সময় ধরে আমাদের মেধা, শ্রম ও ভালোবাসা দিয়েছি এসব জায়গার পেছনে? এক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে যে অনীহা দেখা যায়, তা আমাদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অসুস্থতার কারণ নাকি উপসর্গ?

উৎসর্গ

এই পোস্টটি আমি উৎসর্গ করছি সীতাকুণ্ডে যে ৯ শিশু মারা গিয়েছে, যাদের নাম নিচে দেওয়া হল, তাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে। (প্রথম আলোতে প্রকাশিত নামগুলি আমি পেয়েছি কল্লোল রোয়াজার একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে। সবার নামে ‘ত্রিপুরা’ রয়েছে, তাই নিচে সেটি কারো বেলায় আলাদাভাবে দেখানো হল না।):
হৃদয় ,শিমল, কসম রায়, রূপালী, জানিয়া, তাকিপতি, রমাপতি, প্রকায়তি, কানাইয়া।

প্রশান্ত ত্রিপুরার ফেসবুক ওয়াল থেকে……।।
প্রশান্ত ত্রিপুরা; নৃবিজ্ঞানী

Back to top button