জাতীয়

সিতাকুন্ডে দুই আদিবাসী কন্যা শিশু ধর্ষণ ও হত্যার বিচার এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

সিতাকুন্ড উপজেলা সদরে মহাদেবপুর ত্রিপুরা পাড়ায় দুই আদিবাসী কন্যা শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার বিচার এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়ে সিতাকুন্ড উপজেলা সদরে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম সিতাকুন্ড উপজেলা শাখা এবং মানবাধিকার সংগঠন কাপেং ফাউন্ডেশন। সিতাকুন্ড ও মিরসরাই থেকে বিপুলসংখ্যক আদিবাসী মানববন্ধনে যোগ দেয়। বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, সিতাকুন্ডের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্র ত্রিপুরা সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় কমিশনার জনাব শফিউল আলম চৌধুরি মুরাদ,গণতান্ত্রিক মুক্তি কাউন্সিলের আমির আব্বাস,আদিবাসী ফোরামের মিরসরাই উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সুরেন্দ্র ত্রিপুরা প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সিতাকুন্ডে আদিবাসীরা দিন মজুরি করে সংসারের খরচ চালায়। তারা গরীব,দুর্বল এবং অসহায়। এই অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে স্থানীয় বখাটেরা যা ইচ্ছা তাই করে । প্রতিবাদ করলে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। প্রতিনিয়ত লাঞ্ছনা বঞ্ছনা, মা বোনেরা নিরাপত্তাহীনতায় থাকে। দুবেলা খাওয়ার তাগিদে জুমে কিংবা অন্যের বাগানে কাজ করতে গেলে ছেলে মেয়েরা নিরাপত্তাহীন থাকে।আদিবাসী বক্তারা বলেন, আমাদের দেখার যেন কেউ নেই। আমাদের এই ব নাময় জীবনের কি শেষ হবেনা? অত্যাচার নির্যাতনের ধারাবাহিক অংশ হিসেবে ছবি রানী ত্রিপুরা (১১) এবং শুক লতি ত্রিপুরা (১৫) নির্মম এই হত্যার শিকার হলো। তারা বলেন, পার্শ্চবর্তী চৌধুরি পাড়ার আবুল হোসেন দীর্ঘ দিন ধরে শুক লতি ত্রিপরাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছে। বিষয়টি শুক লতি বাবা মাকে জানালে পাড়ার লোকেরা মিটিং করে তার নিরাপত্তার জন্য আবুল হোসেনকে আদিবাসী পল্লিতে আসতে বারণ করে দেয়। ১৮ মে ২০১৮ শুক্রবার তাদের বাবা মা জুমে কাজ করতে যায়। এই সুযোগে আবুল হোসেন তার সাঙ্গ পাঙ্গ নিয়ে বাড়িতে ঢুকে পড়ে এবং শুক লতি ত্রিপুরা ও ছবি রানী ত্রিপুরাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের পর হত্যা করে একই রশিতে দুই জনকে ঝুলিলে রেখে চলে যায় বলে জানা গেছে। তখন সেখানে কয়েকজন শিশু ছাড়া কেউ ছিলনা। প্রেমের প্রস্তাবে রাজী না হয়ে তাকে এমন পরিনতির শিকার হতে হলো। এমন নিষ্ঠুর ও বর্বর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, কাপেং ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। ঘটনার মুলহোতা বখাটে আবুল হোসেনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে জানা গেছে। বাকী আসামিদেরও গ্রেপ্তার করার দাবি জানানো হয়। ঘটনায় জড়িত সকল আসামিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন বক্তারা। নিহত দুই জনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। মানববন্ধনের পর লাশ দুটি দাহ করা হয়। ময়নাতদন্তের রির্পোট এখনো পাওয়া যায়নি। সিতাকুন্ড থানায় দুটি হত্যা মামলা হয়েছে।

মানববন্ধন থেকে বক্তারা নিন্মোক্ত দাবি জানিয়েছেন:

# ছবি রানী ত্রিপুরা ও শুক লতি ত্রিপুরার ধর্ষণ ও হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি প্রদান করতে হবে।
# নিহত দুই পরিবারকে যথাযথভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
# সিতাকুন্ডে আদিবাসী পাড়ায় নিরাপত্তাসহ আদিবাসীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

Back to top button