সম্পত্তি ফেরত চান সাঁওতালরা
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাবাড়ি ইউনিয়নের সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মের আদিবাসী সাঁওতালরা বাপ-দাদার সম্পত্তি ফেরত এবং আদিবাসীদের হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ভাঙচুর, নির্যাতনের বিচার ও ক্ষতিপূরণসহ সাত দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন।
শনিবার গাইবান্ধা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে তারা ওই সমাবেশ করেন। এর আগে তাদের একটি বিক্ষোভ মিছিল গাইবান্ধা শহরের প্রধান-প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ ও জনউদ্যোগ যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
মিলনায়তনে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সহ-সভাপতি ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের উপদেষ্টা ডা. দিবালোক সিংহ, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য মিহির ঘোষ, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, আইইডির সমন্বয়ক জ্যোতি চট্টোপাধ্যায়, জনউদ্যোগ কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব হাফিজ আদনান রিয়াদ, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সদস্য জয়নাল আবেদিন মুকুল, আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহবায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ ও জনউদ্যোগের সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী, আদিবাসী নেত্রী প্রিসিলা মুর্মু, সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী, বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক ভিমপলী ডেভিড রাজু, জাতীয় আদিবাসী যুব পরিষদের সভাপতি হরেন্দ্রনাথ সিং, আদিবাসী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি খগেন্দ্র হাজং, সিডিএ’র নির্বাহী পরিচালক শাহ-ই-মবিন জিন্নাহ প্রমুখ।
বক্তারা সাঁওতালদের দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গোবিন্দগঞ্জের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল আউয়াল, সাপমারা ইউপি চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুল, কাটাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রফিকসহ তাদের সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবি জানান।
বক্তারা বলেন, আদিবাসীদের সম্পত্তি সরকারের রিক্যুইজিশন করা এখতিয়ার বহির্ভূত হওয়ায় এ ধরনের কার্য বাতিল ও পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করে আদিবাসীদের সম্পত্তি ফেরত দিতে হবে।
এছাড়া আদিবাসী সাঁওতাল গ্রামে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং গুলি করে তিনজন আদিবাসীকে হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা।
২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর সাঁওতাল পল্লীতে হামলার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত আদিবাসী-বাঙালিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, আদিবাসী-বাঙালি নারী-পুরুষের ওপর স্থানীয় সন্ত্রাসীদের জুলুম ও পুলিশি হয়রানি বন্ধের জোরালা দাবি জানান বিক্ষোভ ও সমাবেশকারীরা।