জাতীয়

সংসদে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার জন্য শোকঃ ইতিহাসের গ্লানি মোচন

বিশেষ প্রতিনিধি ২৫ সেপ্টেম্বর, রোববার, ঢাকাঃ জাতীয় সংসদে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার জন্য শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। মৃত্যুর প্রায় ৩৩ বছর পর জাতীয় সংসদে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার জন্য শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হলো। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ দশম জাতীয় সংসদের দ্বাদশতম অধিবেশনের শুরুতে স্পীকার শিরিন শারমিন চৌধুরী যে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন তাতে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার নামও ছিল। সর্বসম্মতভাবে সংসদে এই শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়। সংসদ সূত্রে জানা গেছে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার সাংসদ ঊষাতন তালুকদার বিগত বাজেট অধিবেশনে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার নাম শোক প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চিঠি দেন। সংসদ সূত্র আরও জানায় বিগত বাজেট অধিবেশনে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় সংসদের চলতি অধিবেশনের শোক প্রস্তাবে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার নামটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। উল্লেখ্য রাঙ্গামাটি জেলার সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার লারমার অনুজতম সহযোদ্ধাদের অন্যতম। উষাতন তালুকদার বর্তমানে লারমার গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। নিপীড়িত জাতিসমূহের ও শ্রমজীবী মানুষের মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা ১৯৩৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর বর্তমান রাঙ্গামাটি জেলার অদূরে মাওরুম নামক এক সমৃদ্ধ জনপদে জম্ম গ্রহণ করেন। ছাত্র জীবন থেকেই মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা নিপিড়ীত মানুষের মুক্তির সংগ্রামে দীক্ষা নেন।
parliamentবাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সংবিধান প্রণয়ণ প্রাক্কালে লারমা শ্রমজীবী মেহনতি জনতা, নারী-পুরুষের সমমর্যাদা ও নিপীড়িত জাতিসমূহের অধিকার রক্ষায় সরব আওয়াজ তুলেন। প্রথম জাতীয় সংসদে পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর অঞ্চল থেকে তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বচিত হন। পাহাড়ের নিপীড়িত জুম্ম জনগণের মুক্তির লক্ষে তিনি গড়ে তুলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি। পরবর্তী সময়ে জুম্ম জনগণের প্রতিরোধ সংগ্রামে তিনি নেতৃত্ব দেন। ১০ নভেম্বর ১৯৮৩ ঘাতকদের নির্মম বুলেটে মাত্র ৪৩ বছর বয়সে থেমে যায় লারমার জীবন। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ এই ক্ষণজম্মা বিপ্লবীর ৭৭তম জম্মদিন পালিত হয়েছে। মৃত্যুর পর সংসদ সদস্যদের সম্মানে জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করার নিয়ম থাকলেও একমাত্র লারমার ক্ষেত্রে তার ব্যত্যয় ঘটে। দীর্ঘ সময় পরে ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ রোববার দশম জাতীয় সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনে শোক প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে ইতিহাসের এই গ্লানির অবসান ঘটল।

Back to top button