সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবিঃ মহিলা পরিষদ

জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নের পরিবর্তে সরাসরি নির্বাচন প্রক্রিয়া চালু করা ও আসন সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি এবং অব্যাহত নারী ও কন্যা নির্যাতন বন্ধের দাবি করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এ দাবি করা হয়।
জাতীয় পরিষদ সভায় আগত ৫৩টি জেলার ৪৬০ জন প্রতিনিধিসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকবৃন্দ ও সাধারণ সদস্যবৃন্দসহ পাঁচ শতাধিক নারী অংশগ্রহণ করে। জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নের পরিবর্তে সরাসরি নির্বাচন প্রক্রিয়া চালু করা ও আসন সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি করা এবং অব্যাহত নারী ও কন্যা নির্যাতনের প্রতিবাদে এর আয়োজন করা হয়।
সংগঠনের সভাপতি আয়শা খানম বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ৩৩ শতাংশে উন্নীত করা এবং সরাসবি নির্বাচনের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেয় হয়েছিল। ২০০৯ সালের ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করা হবে এবং সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন হবে। এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১-তে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু সরকার এ সব প্রতিশ্রুতি উপেক্ষা করে সংসদে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নের ব্যবস্থা আরও ২৫ বছর রাখার বিধান করা হয়েছে যা নারীসমাজের জন্য অত্যন্ত অসম্মানজনক। জাতীয় সংসদে নারীর যথার্থ প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা কিভাবে করা যায় তার একটি বাস্তবসম্মত রূপরেখা প্রণয়নের জন্যে দেশের নারীসমাজের পক্ষ থেকে আগামী সংসদ অধিবেশনে একটি বিল উত্থাপনের দাবি জানান।
সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনেই দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীর জাতীয় সংসদে কার্যকর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে বর্তমান সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিবর্তন করতে হবে। মনোনয়ন প্রথা বাতিল করে জনগণের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। আসন্ন জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনেই এ বিষয়ে আলোচনা উত্থাপন করতে হবে।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাখী দাশ পুরকায়স্থ বলেন, বাংলাদেশের সমাজ উন্নয়নে নারীরা পারিবারিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, পেশাগত বহুমুখী দায়িত্ব পালনসহ রাজনীতি ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি নারী ও কন্যার প্রতি অব্যাহত সন্ত্রাস ও নির্যাতন পরস্পর বিরোধী।
তিনি বলেন, নারী ও কন্যার প্রতি নির্যাতনকারীদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রশাসনিক আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে হবে।