লড়াই যতদিন, পীরেনরা বাঁচে ততদিন
![](https://ipnewsbd.net/wp-content/uploads/2018/01/936011_941946135880026_970321628889091738_n-1.jpg)
আগামীকাল ৩রা জানুয়ারি পীরেন স্নালের আত্মদানের দিন। অনেকেই বড়দিন, নিউ ইয়ার, বিয়ে, শ্রাদ্ধ প্রভৃতি নিয়ে ব্যাস্ত আছেন। হয়তো ভুলে গেছেন অনেকে, অথবা জীবনের আর সব আয়োজনে পীরেনের এই আত্মদান মূল্যহীন কারো কারো কাছে। আলাদা করে এইসব নিয়ে কথা বলতে ভালো লাগবেনা।
পীরেন স্নাল কে? আজকে কেনো আমরা তাকে স্মরণ করবো? কেনো তার আলোচনা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ?
ফিরে দেখা যাক সেই উত্তাল সময়ে। সময়কাল ২০০৩-২০০৪। সেই সময় বিএনপি সরকার ক্ষমতায়। মধুপুরে ইকোপার্ক তাদের একটা প্রজেক্ট ছিলো. সেটা বাস্তবায়নের জন্য তাদের প্রাণান্তকর চেষ্টা ছিলো, আমরা তা প্রত্যক্ষ করেছি। এর বিরুদ্ধে বনবাসী মান্দি জনগোষ্ঠীর লড়াই গড়ে ওঠে। যে বনবাসী মান্দিরা মনে করে বন তার মা। এই মধুপুর বনে তাদের অবাধ বিচরন। অথচ তথাকথিত উন্নয়নের নামে যে উন্নয়নের সাথে বনচারী এইসব মান্দি-কোচ-বর্মন জনগোষ্ঠীর কোন সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক নেই তাদের জীবনবোধের সাথে।
স্বভাবতই গড়ে ওঠে তীব্র আন্দোলন। সেই আন্দোলনে রাষ্ট্রীয় পুলিশ বাহিনী গুলি চালায়। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রাষ্ট্রের এহেন ভূমিকা নতুন কোন ব্যাপার নয়। সেই গুলি ঝাঝরা করে পীরেনের দেহ। আর উৎপল বরণ করে পঙ্গুত্ব।
২০০৪ সালের ৩রা জানুয়ারি সেই কালো দিন। পীরেনের সেই আত্মদান আমাদের লড়াই কে কী কোন নতুন নিশানা দিতে পেরেছে? আমাদের বনবাসী মানুষদের জীবনের নিরাপত্তা কী দিতে পেরেছে??? সেইটা যে পারেনি তা ধ্রুব সত্য। কিন্তু আমাদের লড়াইও থেমে নেই। লড়াই চলবে।
উল্লেখ্য যে পীরেন স্নালের হত্যাকারীদের এখনো ন্যায় বিচার হয়নি। হবেনা তা আমাদের অজানা নয়। ফলত লড়াইটা আমাদের সেই সমাজ পাল্টে দেয়ার যে সমাজ ন্যায্য বিচার দেয়না, আমাদের মানুষ মনে করেনা, আমাদের নির্বিচারে মারে। পীরেনের আত্মদান তখনই ফলপ্রসু হবে যখন
আমরা সেই চেতনায় লড়াই করে যাবো।
সবাইকে সংগ্রামী শুভেচ্ছা।
পীরেন স্নালের মৃত্যুবার্ষিকীতে “চানচিয়া”র বিবৃতি