আঞ্চলিক সংবাদ

লংগদুতে ধর্ষক প্রধান শিক্ষকের বহিষ্কার ও যাবজ্জীবন সাজা বহালের দাবিতে মানববন্ধন

রাঙ্গামাটির লংগদুতে ধর্ষক প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিমকে স্কুল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও যাবজ্জীবন সাজা বহালের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল ২৩ আগস্ট ২০২৩ রোজ বৃহস্পতিবার রাঙ্গামাটি জেলাধীন লংগদু উপজেলার করল্যাছড়ি রশিদ সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও লংগদুর সর্বস্তরের জনগণের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। লংগদু সদরের শহীদ মিনারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

দেড় ঘন্টাব্যাপী চলা উক্ত মানববন্ধনে স্কুল শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে লংগদু উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ১৫০০ জন মানুষ অংশগ্রহণ করে।

উক্ত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ৭ নং লংগদু ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান বিক্রম চাকমা (বলি), করল্যাছড়ি গ্রামের বাসিন্দা এরিক চাকমা, করল্যাছড়ি রশিদ সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী কল্যাণ প্রিয় চাকমা, উক্ত বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র লিটু চাকমা।

বক্তারা বলেন, ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তারিখে লংগদু উপজেলার আটারকছড়া ইউনিয়নের করল্যাছড়ি রশিদ সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম বিদয়ালয়ের একজন সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে জোরপূর্বক ক্লাসরুমে ধর্ষণ করেন। ঘটনার ৫ দিন পর ভুক্তভোগীর পরিবার ৫ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মামলা করেন। এক পর্যায়ে ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ধর্ষক আব্দুর রহিমকে যাবজ্জীবন সাজা ও ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু ধর্ষণের শিকার ছাত্রীকে ১ একর জমি লিখে দেওয়ার শর্তে গত ১ জুন ২০২৩ হাইকোর্ট ধর্ষক আব্দুর রহিমকে তিন মাসের জামিন নিয়ে কারামুক্ত হন।

বক্তারা আরো বলেন, হাইকোর্টের এই রায়ে তারা ক্ষুদ্ধ। এই রায় দেশের প্রচলিত বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। শুধুমাত্র এক একর জমি লিখে দেওয়ার শর্তে কিভাবে একজন ধর্ষকরুপী অমানুষ হাইকোর্ট থেকে জামিন পায়? ভুক্তভোগী পরিবার দেশের আইনের ওপর বিশ্বাস করে, সুবিচার পাওয়ার আশায় এতদিন অপেক্ষা করেছে। কিন্তু হাইকোর্টের এই রায় ভুক্তভোগী পরিবার তথা এদেশের মানুষকে হতাশ করেছে। সঠিক বিচার না পাওয়ায় এরকম ঘটনা বার বার ঘটে চলেছে বলেও বক্তারা অভিযোগ করেন।

বক্তারা বলেন, ধর্ষক আব্দুর রহিম আগে জামায়তের রাজনীতি করত। এর পরবর্তী সময়ে ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ ও উঠাবসা শুরু করেন এবং বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ১ নং আটারকছড়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার জিয়াউর রহমান (জিয়া) নানা রকম অনিয়ম ও দূর্নীতি শুরু করেন। ক্ষমতাসীনদের সাথে যোগাযোগ থাকায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার এতদিন সাহস করেনি।

বক্তারা অভিযোগ করেন, চাকরির বিধিমালা অনুযায়ী ফৌজদারি মামলায় কোনো সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির চাকরিতে যোগদান বা ফেরার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু ধর্ষক আব্দুর রহিম জামিনের পরপরই বিদ্যালয়ে এসে ক্লাস করেছেন। এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। তাকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়নি। তারা অবিলম্বে ধর্ষক আব্দুর রহিমকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও যাবজ্জীবন সাজা বহাল রাখার দাবি জানান। দাবি মানা নাহলে পরবর্তীতে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে বক্তারা হুশিয়ারী দেন।

Back to top button