আঞ্চলিক সংবাদ

লংগদুতে টংঘরে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে ক্ষতিগ্রস্তরাঃ সরকারের গৃহনির্মাণের প্রতিশ্রুতির দেখা নেই

লংগদু থেকে ফিরে,এস জে চাকমা: ২ জুন ২০১৭ লংগদুতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত আদিবাসী পরিবারগুলো এখনো গৃহহীন রয়েছে। অনক লড়াই সংগ্রামের পর ১৭৬ পরিবারকে গৃহনির্মানের প্রতিশ্র্রুতি এবং প্রতিগৃহ নির্মান বাবদ ৫ লক্ষ টাকা প্রদানের কথা থাকলেও সরকারের নিয়ম মোতাবেক টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হবে। একবার টেন্ডার দেওয়া হলেও কোন ঠিকাদার ড্রফট করেনি। ক্ষতিগ্রস্তরা জানান পুনরায় টেন্ডার দেওয়ার প্রক্রিয়ায় আসে প্রশাসন। সরকারের গৃহনির্মানের প্রতিশ্রুতির দৃশ্যমান কোন বাস্তবতা নেই।
৬ জুন ২০১৮ বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম এবং হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। প্রতি পরিবারকে ২টি কম্বল এবং ১টি মশারি দেওয়া হয়। মোট ৩০০ পরিবারকে এই সহায়তা দেওয়া হয়। শীতবস্ত্র বিতরণের আগে এক সংক্ষিপ্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এত অংশ নেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি শরৎ জ্যোতি চাকমা, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার তাপস হোড়, এ্যাড নতাই প্রসাদ ঘোষ,অধ্যাপক প্রদীপ কুমার চৌধুরি, হরিপদ চৌধূরি বাবুল, বিকাশ মজুমদার,লংগদ সদর ইউপি চেয়ারম্যান কুলিন মিত্র চাকমা, আদরক ছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঙ্গল কান্তি চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি লংগদু শাখার ত্রিলোচন চাকমা ও মনি শংকর চাকমা, পিসিপি রাঙ্গামাটি জেলার সভাপতি রিন্টু চাকমা, রাঙ্গামাি কলেজ পিসিপির সভাপতি জগদিশ চাকমাসহ আরো অনেকে।
ক্ষতিগ্রস্তদে পক্ষ থেকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হেডম্যান কার্বারি ও সচেতন নেতৃবৃন্দ লংগদুর বর্তমান অবস্থা প্রতিনিধি দলকে অবহিত করেন। লংগদু সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুলিন মিত্র চাকমা বলেন আমরা এখনও গৃহহীন। স্কুলে পরিবার নিয়ে থাকি। সাধারণ মানুষ কোন রকমে টং ঘর বানিয়ে সেখানে আছে। এই বছর বৃষ্টি অনেক বেশী ছিল। আমাদের কষ্টও অনেক। মানবেতর জীবন কাটাতে হয়েছে। সরকার ঘর বানিয়ে দেবে বললেও এখনও হয়নি। এক বার টেন্ডার দিয়েছে। কেউ তা ড্রফট করেনি। পুন:রায় টেন্ডার দেওয়ার কথা বলেছে প্রশাসন। কষ্ট হলেও আমরা আশায় আছি। তিনি বলেন ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে,সাঁওতাল পল্লি এবং সংখ্যালঘুদের বাড়ি ঘর যেন আক্রান্ত না হয় এই দাবি আমি সরকারের কাছ জান্ইা।
মঙ্গল কান্তি চাকমা বলেন,আমাদর বড়ি ঘর পুড়ে নাই পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ঘর বাড়ি বানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার কিন্তু এখনও দৃশ্যমান নয়। গৃহহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন কাটাতে হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করার জন্য তিনি আদিবাসী ফোরাম ও ঐক্য পরিষদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদে নেতা তাপস হোড় বলেন ঘটনার ৬ মাস অতিক্রান্ত হলেও এখনও গৃহহীন থাকা দু:খজনক। তিনি বলেন,একটি ভয়াবহ বর্ষাকাল ক্ষতিগ্রস্তরা যে কিভাবে পার করলো তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। এখন জেকে বসেছে শীত। এই শীতে কত কষ্টের মধ্যে তাদের থাকতে হচ্ছে। দেশের আদিবসী এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পাশে কি কেউ নেই? এত বৈষম্য আর অবহেলার মধ্যে রাখা কি সরকারের ঠিক হচ্ছে? গৃহনির্মাণের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে এত ধীর গতি কেন? তিনি আদিবাসীদের ঐক্যবদ্ধ থেকে যে কোন কঠিন পরিস্থিতি ধৈর্য সহকারে মোকাবিলা করার আহ্বান জনান।

Back to top button