আঞ্চলিক সংবাদ

রোয়াংছড়িতে জনসংহতি সদস্য গ্রেফতারঃ নিঃশর্ত মুক্তির দাবি

স্থানীয় সংবাদদাতাঃ ৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার পার্বত্য চট্টগ্রামে জনসংহতি সমিতির রোয়াংছড়ি থানা কমিটির সদস্য ও নোয়াপতং ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং নোয়াপতং ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য ক্যনু প্রু মারমাকে তাঁর নাছালং পাড়ার বাড়ি থেকে এবং দৈনিক মুক্তবাণীর স্থানীয় সংবাদদাতা থোয়াইচিং উ মারমাকে মুরুংক্ষ্যংমুখ পাড়ার নিজ বাড়ি থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা ধরে নিয়ে যায়। ৪ ফেব্রুয়ারি জনসংহতি সমিতি বান্দরবান জেলার সাধারণ সম্পাদক ক্যবামং স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ক্যনু প্রু মারমার স্ত্রী পুলিশের ইউনিফর্ম পরা লোকজন কর্তৃক তাঁর স্বামীকে ধরে নিতে দেখেছেন। ৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকাল ১১:০০ ঘটিকায় সেনাবাহিনীর সদস্য কর্তৃক আটককৃত ক্যনু প্রু মারমা ও থোয়াইচিং উ মারমাকে বান্দরবান সদর থানায় সোপর্দ করতে দেখা গেছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, এর আগে তাদের বিরুদ্ধে কোন থানায় কোন অভিযোগ ছিল না। ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় থোয়াইচিং উ মারমার স্ত্রী ‘কোন অপরাধ বা অভিযোগ তাঁর স্বামীকে ধরে নেয়া হচ্ছে’ তা জিজ্ঞাসা করা হলে ‘বান্দরবানে রোয়াংছড়ি উপজেলাধীন নোয়াপতং ইউনিয়নের বাঘমারা ভিতর পাড়ার গ্রামপ্রধান মংশৈ থুই কার্বারীকে অপহরণের অভিযোগে’ তাঁকে ধরে নেয়া হচ্ছে বলে পুলিশ উত্তর দেয় বলে জানা যায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয় ২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ৯:০০ টার দিকে তাঁর বাসা থেকে মংশৈ থুই কার্বারীকে কে বা কারা অপহরণ করে নিয়ে যায়। জানা যায় যে, অপহরণের সময় বাথোয়াই মং মারমা নামে বাঘমারা ভিতর পাড়ার একপ্রতিবেশী মংশৈ থুই কার্বারীকে তাঁর বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যান। কতদূর যাওয়ার পর ৯ জনের একদল লোক কর্তৃক অপহরণ করে নিয়ে যায়। ৯ জনের মধ্যে চারজন মুখোশ পরিহিত ছিল বলে জানা গেছে।
গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, যিনি মংশৈ থুই কার্বারীকে তাঁর বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গেছেন সেই বাথোয়াই মং মারমার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে অপহরণের অব্যবহিত পরই কোন তথ্য প্রমাণ ও অভিযোগ ছাড়াই তাৎক্ষণিকভাবে জনসংহতি সমিতির সদস্য ক্যনু প্রু মারমা ও থোয়াইচিং উ মারমাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পেছনে শাসক মহলের ষড়যন্ত্র বলে জনসংহতি সমিতি মনে করে। জনসংহতি সমিতির সদস্যদের হয়রানির উদ্দেশ্যে পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে মংশৈ থুই কার্বারীকে অপহরণের নাটক ঘটানো হতে পারে। উল্লেখ্য যে, আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতা মংপু মারমাকে গত জুন মাসে কে বা কারা অপহরণের পর রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে উক্ত অপহরণের সাথে জড়িত করে জনসংহতি সমিতির ৩৮ জন সদস্যের বিরুদ্ধে এবং তৎপরবর্তী সময়ে চাঁদাবাজি, অপহরণ, সন্ত্রাস ইত্যাদি সাজানো অভিযোগে জনসংহতি সমিতির প্রায় শ’ খানেক সদস্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং কমপক্ষে ৩০ জনকে গ্রেফতার ও দেড় শতাধিক লোককে এলাকাছাড়া করা হয়েছে।
বিবৃতিতে অচিরেই আটককৃত জনসংহতি সমিতির বান্দরবান জেলা কমিটি ক্যনু প্রু মারমা ও থোয়াইচিং উ মারমাকে বিনাশর্তে মুক্তি প্রদান এবং এ ধরনের হয়রানিমূলক গ্রেফতার, মামলা দায়ের ও নিপীড়ন-নির্যাতন বন্ধ করার জোর দাবি জানানো হয়।

Back to top button