অন্যান্য

রাশিমনি হাজং প্রেরণা হয়ে বেঁচে থাকবেন : সিপিবি নারী সেল

নিজস্ব প্রতিবেদক: টংক আন্দোলনের নেত্রী, হাজংমাতা শহীদ রাশিমনি হাজং এর ৭৩তম হত্যাবার্ষিকীতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নারী সেল-এর উদ্যোগে আজ ৩১ জানুয়ারি বিকালে পুরানা পল্টনস্থ মুক্তিভবনের প্রগতি সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। নারী সেলের আহবায়ক সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য লক্ষ্মী চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা বলেন, শহীদ রাশিমনি হাজং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। জমিদার, জোতদারদের বিরুদ্ধে কমরেড মণি সিংহের নেতৃত্বে গড়ে উঠা সাধারণ মানুষের টংক উচ্ছেদ আন্দোলনের শুরু থেকেই শহীদ রাশিমনি হাজং এ লড়াইয়ে সাহসের সাথে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছিলেন। সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, শহীদ রাশিমনির আদর্শ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। ব্রিটিশ তাড়িয়ে, জমিদারতন্ত্র উচ্ছেদ করে শহীদ রাশিমনি হাজং চেয়েছিলেন একটি সুখী-সমৃদ্ধ, বৈষম্যহীন সমাজ। তা আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এখনও দেশে নারী ও শিশু ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। নেতৃবৃন্দ নারী ও শিশু ধর্ষণ ও হত্যা-নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

সভায় বক্তারা বলেন, ‘মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি’ গঠন করে এলাকার নারীদের রক্ষার যে শপথ রাশিমনি হাজং নিয়েছিলেন এজন্য হাজং যুবতী কুমুদিনীকে বাঁচাতে নিজের জীবন দিয়ে সে শপথ তিনি রক্ষা করে গেছেন। বক্তারা বলেন, এলাকার জোতদার, মহাজনদের ঋণের অত্যাচার থেকে এলাকার গরিব মানুষকে বাঁচাতে ‘ধর্মগোলা’ তৈরি করেন। এ ধর্মগোলার ধানের মৌসুমের সকলের কাছ থেকে অল্প অল্প ধান সংগ্রহ করে রেখে দিতেন, এবং নানা বিপদের সময় বিনা সুদে সেই ‘ধর্মগোলায়’ থেকে ঋণ দিয়ে মানুষকে সহায়তা করতেন রাশিমনি হাজং।

আলোচনা সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কৃষক নেত্রী লাকী আক্তার। সভায় বক্তব্য রাখেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক জলি তালুকদার, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাড. মাকসুদা আক্তার লাইলী, লুনা নূর, উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন, নারী নেত্রী রাশেদা কুদ্দুস রানু, ক্ষেতমজুর সমিতির সহ সাধারণ সম্পাদক অর্ণব সরকার, ছাত্র ইউনিয়ন নেতা কাজী রিতা প্রমুখ। সভায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা। কবিতা আবৃত্তি করেন ডা. পুষ্পিতা রায়।
সভার শুরুতে শহীদ রাশিমনি সহ টংক আন্দোলনে সকল শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

Back to top button