রামগড়ে ত্রিপুরা কৃষককের গলা কাটা লাশঃ পলাতক তিন সেটেলার বাঙালি পরিবার
খাগড়াছড়ি’র রামগড় উপজেলার গরুকাটা চা বাগান এলাকায় গত ২৯ এপ্রিল ২০১৬ সন্ধ্যা ৬টায় মস্তক ও এক হাত-এক পা বিহীন অর্ধগলিত অবস্থায় মানেন্দ্র ত্রিপুরা(৪০) নামক এক কৃষকের লাশ পুলিশ উদ্ধার করেছে। এলাকাবাসীর ধারণা সেটেলার বাঙালিরা মানেন্দ্র ত্রিপুরাকে(৪০) তিন /চারদিন আগে হত্যা করেছে। এ ঘটনার পর থেকে সাতক্ষীরা ও নরসিংদী জেলা থেকে এসে বসতি স্থাপনকারী তিন সেটেলার বাঙালি পরিবার অন্যত্র পালিয়ে গেছে।
জানা যায়, ওই দিন দুপুর ১২টায় এলাকার লোকজন মানেন্দ্র ত্রিপুরাকে কয়েকদিন দেখতে না পেয়ে তার বাড়িতে খবর নিতে যায়। সেখানে গিয়ে তারা বাড়িতে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ দেখতে পেয়ে খোঁজাখুজির পর বাড়ি থেকে প্রায় ২০ গজ দূরে জঙ্গলে লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে সন্ধ্যা ৬টায় লাশটি উদ্ধার করে।
রামগড় উপজেলার গরুকাটা এলাকায় একটি চা বাগান তৈরির কাজ চলছে। সে চা বাগানের ম্যানেজার বিসু ত্রিপুরা মানেন্দ্র ত্রিপুরাকে চা বাগানের পাশে প্রায় ২ একরের মতো জমিতে বাড়ি তুলে সেখানে থাকতে বলে। তারাচাঁন পাড়ার মৃত কর্মধন ত্রিপুরার ছেলে মানেন্দ্র ত্রিপুরা ৩ বছর আগে ফলজ বাগান করে সেখানে একা বসবাস করতো। ওই চা বাগানে তার কাজ করার কথা ছিল।
এদিকে, প্রায় ২ বছর আগে সাতক্ষীরা ও নরসিংদী জেলা থেকে তিন পরিবার সেটেলার বাঙালি এসে গরুকাটা চা বাগান এলাকায় মানেন্দ্র ত্রিপুরা বাড়ির পাশে ভূমি দখল করে বসতি গড়ে তোলে। জানা গেছে, এ সময়ে গরুকাটা চা বাগান থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে গরুকাটা এলাকায় সাতক্ষীরা ও নরসিংদী জেলা থেকে আরও ৩০/৩৫ পরিবার সেটেলার বাঙালি এসে জুম্মদের জুম ভূমি দখল করে বসতি স্থাপন করে।
ওই সেটেলার বাঙালিরা মানেন্দ্র ত্রিপুরার ফলজ বাগানটি দখলের চেষ্টা করেছিল। এলাকাবাসীদের সাথে বলে জানা যায়, ওই বহিরাগত সেটেলার বাঙালিরা আগেও কয়েকবার মানেন্দ্র ত্রিপুরাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল।
ওই সেটেলার বাঙালিরা হল- ১. মো: মজিদ(৫০), পিতা: অজ্ঞাত, ২. মো: ওবায়দুল(৪০) পিতা: অজ্ঞাত, ৩. মো: মাহবুব(৪৫), পিতা: অজ্ঞাত। মানেন্দ্র ত্রিপুরার(৪০) নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে ওই সেটেলার বাঙালিরা পরিবারসহ অন্যত্র পালিয়ে গেছে। এলাকাবাসীর ধারণা সেটেলার বাঙালিরা মানেন্দ্র ত্রিপুরাকে(৪০) তিন /চারদিন আগে হত্যা করেছে।
এ হত্যাকাণ্ডের পর নিহতের স্বজনরা মামলা করতে চাইলে পুলিশ সেটেলার বাঙালিদের পিতার নাম ও স্থায়ী ঠিকানা জানা নেই এ অজুহাতে মামলা গ্রহণে অপরাগতা প্রকাশ করেছে বলে জানা গেছে। এদিকে পুলিশের এমন আচরণে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।