রাজশাহী ও রংপুরের গণ অবস্থানের সমর্থনে ঢাকায় সংহতি সমাবেশ
আজ শাহবাগ প্রজন্ম চত্ত্বরে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মের আদিবাসী সান্তাল-বাঙালিদের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে গণ অবস্থান কর্মসূচীর সমর্থনে ও ৭ দফা দাবি আদায়ে এক নাগরিক সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সংহতি সমাবেশে আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন বলেন, আদিবাসীদের ওপর রাষ্ট্রীয় নির্যাতন, নিপীড়ন, উন্নয়নের নামে ভূমি থেকে উচ্ছেদ প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। আদিবাসীদের ওপর সংঘটিত কোন হামলারই বিচার হয় নি। দোষীদের বিচার করা হয়নি। তিনি অবিলম্বে বাগদাফার্মের ভূমি আদিবাসীদের ফিরিয়ে দেবার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানান।
পুলিশের নেতৃত্বে বাগদাফার্মে আদিবাসী বাঙালিদের ওপর হামলা ও হত্যাকাণ্ডকে সন্ত্রাসী, গুণ্ডা ও বদমাইশের তুলনা করেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও ঐক্যন্যাপের সভাপতি পংকজ ভট্টাচার্য বলেন পুলিশ যদি সাধারণ মানুষের ঘরবাড়িতে আগুন লাগায়, হত্যাকাণ্ড ঘটায় তবে সেখানে দুর্বৃত্ত, গুণ্ডা, মাস্তানের প্রয়োজন নেই। তিনি আরো বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক ও স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক। এই দেশে জনমানুষের ওপর কখনও পুলিশী হামলা হতে পারে না। এটি কেবল পাকিস্তান আমলে হতে পারে।
ইনস্টিটিউট ফর এনভারনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইইডি) এর নির্বাহী পরিচালক নুমান আহম্মেদ খান বলেন, বাগদা ফার্মের মানুষেরা ভূমির জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করছেন কিন্তু রাষ্ট্র তাদের প্রতি কর্ণপাত করছেন না। যারা উৎপাদন প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত রাষ্ট্র তাদের সহায়তা না দিয়ে উল্টো উৎপীড়ক ও নিপীড়কের ভূমিকায় অবর্তীণ হচ্ছে। রাষ্ট্রের এ ভূমিকার জন্য আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
পাকিস্তান আমলে বাগদার্মে চিনিকল স্থাপনের নামে আদিবাসীদের প্রায় ২ হাজার একর পরিমাণ যে জমি ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল তা অবিলম্বে মূল মালিকদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান আদিবাসী ইউনিয়নের উপদেষ্টা ও সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. দিবালোক সিংহ। তিনি নাগরিক সংহতি সমাবেশ আয়োজনে পুলিশী বাধা ও মাইক কেড়ে নেওয়ার তীব্র নিন্দা জানান।
কাপেং ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক হিরণমিত্র চাকমা বলেন, বাগদাফার্মের আদিবাসীরা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। প্রচণ্ড শীতে জনজীবন বির্পযস্ত হচ্ছে। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। বরং তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে দুভোর্গের মাত্রা বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে।
জনউদ্যোগের সদস্য সচিব তারিক হোসেনের সঞ্চালনায় ও রবীন্দ্রনাথ সরেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংহতি সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন জনউদ্যোগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম বাবু, জাতীয় হাজং সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল চন্দ্র হাজং, কাপেং ফাউন্ডেশনের কনসালটেন্ট খোকন সুইটেন মুরমুসহ আরো অনেকে ।
সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ, জনউদ্যোগ, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন, এএলআরি, কাপেং ফাউন্ডেশন, ব্রতী, আইইডি, সিডিএ, নাগরিক উদ্যোগ, নিজেরা করি ও ব্লাস্টের যৌথ উদ্যোগ এই সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।