রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে আদিবাসী সাঁওতালকে হিন্দু বানিয়ে পুকুর দখলের অভিযোগ
![](https://ipnewsbd.net/wp-content/uploads/2017/04/Photo-1.jpg)
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে আদিবাসী সাঁওতালকে হিন্দু বানিয়ে পুকুর দখলের অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে শনিবার সকাল ১০টায় গোদাগাড়ী উপজেলা প্রেসক্লাব হলরুমে এক সাংবাদিক সম্মেলন অভিযোগ করে স্থানীয় আদিবাসীরা।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদ গোদাগাড়ী শাখার সভাপতি রবীন্দ্রনাথ হেমব্রম লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়নে কুরশনা মৌজায় আর.এস. ১১২ নং দাগে ৩৪ শতকের একটি পুকুর দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করে আসছে হুজরাপুর গ্রামের সম হাসদার ছেলে যিশু হাসদা। হঠাৎ করে হুজরাপুর গ্রামের মুনসুর রহমানের ছেলে জহরুল হক পুকুরটি নিজ দখলে নেয়। এই নিয়ে যিশু হাসদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দফতরে নামজারি সংশোধনী একটি মামলা করে। মামলা নং-১১৭/ঢওওও/১৩-১৪ সাল। মামলায় উভয়পক্ষের দীর্ঘ শুনানির পর যিশু হাসদার পক্ষে সিদ্ধান্ত দিয়ে তার অনুকুলে পুকুরটি প্রদান করে সহকারী কমিশনার (ভূমি)। তবে পুকুরের দখল না ছেড়ে জহরুল হক সহকারী কমিশনার (ভূমির) দেয়া সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাজশাহী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দফতরে একটি আপিল মামলা দায়ে করে।
এই মামলায় গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়নপত্র অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কাছে দাখিল করে জহরুল ইসলাম। প্রত্যয়নপত্রে যিশু হাসদাকে আদিবাসী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের (ক্ষুদ্র নৃ তাত্ত্বকী জনগোষ্ঠী) লোক উল্লেখ না করে জাতি ও বর্ণগতভাবে হিন্দু বলে উল্লেখ করেন। আর এই প্রত্যয়ন পাওয়ার পর গত ২৭ মার্চ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জহরুল ইসলামের পক্ষে সিদ্ধান্ত দেয়। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যিশু হাসদা অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) এর নিকট আপিল করবেন বলে জানান।
প্রত্যয়নপত্রের আদিবাসী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের যিশু হাসদাকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক বানানো প্রসঙ্গে গোগ্রাম ইউনিয় পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, তার কাছে ধর্মীয়ভাবে যিশু হিন্দু কিনা তার প্রত্যয়নপত্র চেয়েছিল। সেই কারণেই যিশু হাসদাকে ধর্মীয় হিন্দু উল্লেখ করা হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে যিশু হাসদা বলেন, পুকুরটির মূল মালিক ছিলেন, বিরসিং মাঝির ছেলে লুডু মাঝি। সবসময়ের জন্য এই পুকুরটি আদিবাসী সম্প্রদায়ের ভোগ দখলীয় জমি ছিল এখানো এই পুকুরের যাবতীয় কাগজপত্র তার (যিশু হাসাদার) অনুকুলে রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি বিমল চন্দ্র রাজোয়ার বলেন, একজন আদিবাসীকে জাতীগতভাবে হিন্দু বানানো এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। যিশু হাসদা আদিবাসী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের লোক হওয়ায় তার পুকুরটি জোর করে দখল করা হয়েছে। এই নিয়ে সুষ্ঠ বিচার না পাওয়া গেলে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে বলে তিনি জানান।