অন্যান্য

রাজধানীতে ‘স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ২০৩০ অর্জনে দলিত জনগোষ্ঠীকে কার্যকর অন্তর্ভুক্তি’ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

গতকাল ১৫ ডিসেম্বর শুক্রবার সকালে ধানমন্ডির উইমেন ভলান্টিয়ার এ্যাসোসিয়েশন এ ‘স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ২০৩০ অর্জনে দলিত জনগোষ্ঠীকে কার্যকর অন্তর্ভুক্তি’ বিষয়ক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন (বিডিইআরএম) ও নাগরিক উদ্যোগ আয়োজিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিডিইআরএম এর সভাপতি বিভূতোষ রায়।

সেমিনারে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক এম.এম মাহামুদুল্লাহ, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি’র সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস এর প্রতিনিধি আরাফাত রেজা, আইন ও সালিশ কেন্দ্র এর প্রতিনিধি শান্তা ইসলাম, রিক এর প্রতিনিধি তোফাজ্জল হোসেন মঞ্জু, নাগরিক উদ্যোগ এর প্রকল্প সমন্বয়কারী এ.বি.এম আনিসুজ্জামান। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন দলিত নারী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও বিডিইআরএম এর সাবেক সভাপতি মনি রানী দাস।

সেমিনার সঞ্চালনা ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিডিইআরএম এর সহ সাধারণ সম্পাদক শিপন কুমার রবিদাস।

দলিত প্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিডিইআরএম কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক তামান্না সিং বাড়াইক, নারী বিষয়ক সম্পাদক সনু রানী দাস, ঢাকা জেলা কমিটির সভাপতি গগণ লাল, সাধারণ সম্পাদক জনি দাস, বংশাল থানা কমিটির সহ
সভাপতি গৌরব লাল, লালবাগ ঋষিপাড়ার মনি রানী দাস, ওয়ারী রবিদাসপাড়ার শিক্ষার্থী প্রীতম রবিদাস, গণকটুলি সিটি কলোনীর শিতীশ চন্দ্র দাস, পুলপার ঋষিপাড়ার অনন্যা দাস।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক এম.এম মাহামুদুল্লাহ বলেন, “অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কল্যাণে সরকার তথা সমাজসেবা অধিদপ্তর নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আগামীতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অনুক‚লে প্রশিক্ষণ, ভাতা, অনুদান, উপবৃত্তির পরিমাণ ও বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই বাংলাদেশের অনগ্রসর জনগোষ্ঠী এর সুফল ভোগ করতে সক্ষম হবেন।”

সিপিডি’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, অস্পৃশ্য।জনগোষ্ঠীকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। তিনি সরকারী পরিকল্পনাগুলো দীর্ঘমেয়াদী হওয়া উচিত বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। যাতে দলিতরা সার্বজনীন সুবিধাসমূহ ভোগ করতে পারে।

বক্তাগণ আরও বলেন, জন্ম ও পেশাগত পরিচয়ের কারনে বাংলাদেশে দলিত জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭৫ লাখ মানুষ সমাজে অস্পৃশ্যতার শিকার। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান অধিকারের কথা উল্লেখ করা হলেও স্বাধীনতার ৫২ বৎসর পরও আজও বৈষম্য বিরাজমান। যুগ যুগ ধরে দলিত জনগোষ্ঠীর উপর চলমান যে বৈষম্য
বিদ্যমান রয়েছে তা তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায়।

বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন নীতিতে দেশের বহু ক্ষেত্রে সন্তোষজনক সাফল্য অর্জিত হলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে দলিত ও অপরাপর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসমূহ কাক্সিক্ষত পর্যায়ে অংশীদার হতে পারেনি। আমরা আশা করছি ‘কাউকে পিছিয়ে রাখা যাবে না’- এসডিজি’র এই মূল মন্ত্রকে ধারণ করে তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে।

Back to top button