রাঙ্গামাটিতে ছাত্রলীগের হামলায় ১ কলেজ ছাত্র ও ২ সাংবাদিক আহত
রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮: রাঙ্গামাটি জেলা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক সুপায়ন চাকমার উপর হামলার প্রতিবাদে ছাত্রলীগের ডাকে রাঙ্গামাটি জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের দুর্বৃত্তদের হামলায় মঙ্গলবার বিকাল আনুমানিক ৩:৩০ ঘটিকার সময় একজন কলেজ ছাত্র এবং দুইজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায় যে, মঙ্গলবার হরতাল চলাকালে বিকাল আনুমানিক ৩:৩০ ঘটিকার সময় পিকআপ যোগে ছাত্রলীগের একদল লোক রাঙ্গামাটি শহরের বনরূপা এলাকার বনরূপা মসজিদ মার্কেট ও পেট্রোল পাম্পের পৌঁছলে পিকআপ থেকে নামার সাথে সাথে তারা সন্ত্রাসী কায়দায় সবজি বিক্রেতা অনিল চাকমার পুত্র ও রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ম্যানসন চাকমার (২১) উপর কোন অজুহাত ছাড়াই অতর্কিত হামলা চালায়। বনরূপা পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন রাস্তার পাশে পিকেটিংরত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরাও সেসময় হামলায় অংশগ্রহণ করে। তারা ম্যানসন চাকমাকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং মাটিতে ফেলে এলোপাতাড়ি লাথি মারে। এতে ম্যানসন চাকমার মাথা ও দুই হাতে মারাত্মক জখম হয়। অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে ম্যানসনের শার্ট-প্যান্ট ভিজে যায়। এ সময় মসজিদের সামনে একদল পুলিশ থাকলেও পুলিশ সদস্যরা ম্যানসন চাকমাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেননি। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় ম্যানসন চাকমা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে আসেন। তাকে রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ছাত্রলীগের ডাকা হরতালের সংবাদ সংগ্রহ করার সময় কামাল এবং সাইফুল ইসলাম নামে দুইজন স্থানীয় সাংবাদিকও হামলা শিকার হন বলে জানা গেছে। এর আগে রবিবার সন্ধ্যায় সংবাদ সংগ্রহকালে বনরূপার ট্রাষ্টব্যাংক সংলগ্ন এলাকায় ছাত্রলীগের হামলায় দৈনিক সমকালের রাঙ্গামটি সংবাদদাতা ও একুশে টিভির প্রতিনিধি সত্রং চাকমা আহত হন বলে জানা গেছে। তারা সকলেই বর্তমানে রাঙ্গামাটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, রবিরাব ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি ঘটনায় রাঙ্গামাটি জেলা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক সুপায়ন চাকমা আহত হন বলে জানা গেছে। ছাত্রলীগ অভিযোগ করে যে, রাঙামাটি স্টেডিয়াম ফুটবল খেলে বাসায় সময় সুপায়ন চাকমা স্টেডিয়াম এলাকায় একদল পিসিপি কর্মী তার উপর হামলা করে। তবে পিসিপি এই অভিযোগ অস্বীকার করে। রবিবার রাঙ্গামাটি জেলা পিসিপির তথ্য প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নিতীষ চাকমার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বানোয়াট বলে জানানো হয়। উক্ত ঘটনার সাথে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কোন সদস্য জড়িত ছিলেন না এবং পাহাড়ী ছাত্র পরিষদকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার হীনউদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদকে জড়িত করা হয়েছে বলে পিসিপি উল্লেখ করে।